স্টাফ রিপোর্টার: দোদোমা-চকোলেট বোমায় পিকলুকে মাত দিতে চম্পাহাটি ছুটেছিল বেহালা ম্যান্টনের বাসিন্দা সৌম্য। রীতিমতো অর্ডার দিয়ে নিয়ে এনেছিল বোম। প্ল্যান মাফিক কালীপুজো শুরু হতেই ঝুলি থেকে বোম বার করতে দেরি হয়নি। কিন্তু, দু’-তিনটে ফাটার পরই সমস্ত বাজি বাজেয়াপ্ত করে নেয় রাজ্য দুষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের টহলদারি ভ্যান।
[এবছর নজর আতশবাজিতেও, শহরের বহুতলে পুলিশের ‘ওয়াচ টাওয়ার’]
শুধু সৌম্যর নয়, শহর-শহরতলি এলাকায় অনেক শব্দবাজি জব্দ হয়েছে পুলিশ-প্রশাসন ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের টহলদারি ভ্যানের উদ্যোগে। বস্তুত, কালীপুজো ও দীপাবলির রাতে বাজির দাপট রুখতে চলতি বছর কোমর বাঁধছে পুলিশ, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ও পরিবেশকর্মী সংগঠন। তবে তাতেও বাজি যে একেবারেই ফাটেনি তা নয়। পুলিশ-প্রশাসন-পর্ষদের কাছে মঙ্গলবার বিকেল থেকেই একাধিক অভিযোগ এসেছে। সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এ বছর বাজি পোড়ানোর সময় বেঁধে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কলকাতা-সহ গোটা রাজ্যেই কালীপুজো ও দীপাবলিতে রাত আটটা থেকে দশটা পর্যন্ত বাজি পো়ড়ানো যাবে। ৯০ ডেসিবেলের বেশি শব্দমাত্রার বাজি নিষিদ্ধ। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র মঙ্গলবার বলেন, ‘‘বাজি ও শব্দদূষণ নিয়ে অভিযোগ শুনতে কালীপুজো ও দীপাবলির রাতে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।” এদিন বিকেল থেকে পর্ষদের পক্ষ থেকে রাতভর ৬টি ভ্যান টহল দিয়েছে শহরের আনাচে-কানাচে। শহরতলির শাখা দফতর থেকেই নজরদারি চালানো হয়েছে বলে পর্ষদ সূত্রে খবর। এদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত মাত্র দু’টি অভিযোগ জমা পড়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের গড়া কন্ট্রোল রুমে। অভিযোগ পাওয়া মাত্রই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে কন্ট্রোল রুম সূত্রে খবর।
তবে পরিবেশকর্মীদের যৌথ সংগঠন ‘সবুজ মঞ্চ’-এ মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ৩০টি অভিযোগ জমা পড়ে। বেশিরভাগ অভিযোগ দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর এবং সংলগ্ন এলাকা থেকে আসা। পাশাপাশি বালিয়া এলাকার ঢালাই ব্রিজ এবং হরিনাভি এলাকা থেকেও একাধিক অভিযোগ এসেছে। অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট এলাকার পুলিশের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বলে জানান ‘সবুজ মঞ্চ’-এর আহ্বায়ক নব দত্ত।
সুপ্রিম কোর্টের নিয়ম মানতে শব্দবাজির দাপট রুখতে শিশুদের নিয়ে এক পদযাত্রার আয়োজন করেছিল গড়িয়াহাট থানা। প্রচুর নিষিদ্ধ বাজি ধরাও হয়েছে। বিমানবন্দর লাগোয়া এলাকায় এ বার ফানুস নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, বিভিন্ন দোকান থেকে বাজি ও ফানুস বাজেয়াপ্ত করেছেন তাঁরা। বাজি পোড়ানোকে নিয়মে বাঁধতে বদ্ধপরিকর রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদও। টহলদারি ভ্যানের পাশাপাশি অভিযোগগুলিকে গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে বলেই পর্ষদ সূত্রে খবর। পাশাপাশি টহলদারি ভ্যানগুলোর সঙ্গে টেলিফোন মারফত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। অভিযোগ পেয়ে পুলিশকে জানানোর সঙ্গে সঙ্গে বাজির দাপট রুখতে টহলদারি ভ্যানকেও উদ্যোগ নিতে বলা হচ্ছে।
[দীপাবলির আনন্দ নয়, মেয়েকে বাঁচাতে ঠাকুরের কাছে মাথা ঠুকছেন বৃদ্ধ দম্পতি]
The post মাথা তুললেও টহলদারি ভ্যানে শহরে জব্দ শব্দদৈত্য appeared first on Sangbad Pratidin.