বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: রামমন্দির উদ্বোধন নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও লোকসভা ভোটের আবহে বাংলার কথা ভোলেননি প্রধানমন্ত্রী। বাংলার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে বার্তা দিয়ে নজরুল ইসলামের গান এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করলেন তিনি। সোশাল মাধ্যম এক্স-এ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাঙালি গায়িকা পায়েল করের গাওয়া ‘মন জপ নাম’ গানটি শেয়ার করেছেন। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম এই গানের রচয়িতা। সেই গান শেয়ার করে তিনি লিখেছেন, ‘শ্রীরামের প্রতি পশ্চিমবঙ্গের মানুষের অপরিসীম শ্রদ্ধা রয়েছে।’
এদিকে, রামমন্দির উদ্বোধনের আবহেই মোদির উত্তরসূরি নিয়ে জল্পনা আরও তীব্র হয়েছে। ‘বুলডোজার বাবা’ যোগী আদিত্যনাথ নাকি দলের চাণক্য অমিত শাহ (Amit Shah)। রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠার আগেই গেরুয়া শিবিরে চলছে জল্পনা। তিনি যে অমিত শাহর থেকে কোনও অংশে কম যান না, গত কয়েক মাস অযোধ্যায় রাতদিন এক করে পরিশ্রমের মাধ্যমে সেই বার্তা গেরুয়া শিবিরের শীর্ষকর্তাদের পৌঁছে দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একের পর এক রাজ্যে দলকে ক্ষমতায় নিয়ে আসার ভূমিকায় সফল। স্বভাবতই মোদি পরবর্তী মুখ হিসাবে কাকে সামনে রাখা হবে, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে সংঘ পরিবারে। তবে সংঘের এক কর্তা জানান, তৃতীয় কোনও ব্যক্তিকেও সামনে আনার চিন্তাভাবনাও রয়েছে।
[আরও পড়ুন: মোদির লাক্ষাদ্বীপ সফর নিয়ে বিতর্কে মালদ্বীপ! ভারতীয়দের ‘উপহাস’ মুইজ্জুর দলের নেতার]
অযোধ্যায় কয়েক হাত অন্তর প্রধানমন্ত্রী ও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেখে মনে হওয়া স্বাভাবিক, রামজন্মভূমিতে তাঁরা যেন ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন। প্রতীকী অর্থে তা যে শতভাগ সত্য তা বলার অপেক্ষা রাখে না। মন্দির উদ্বোধনের পরই লোকসভা ভোটের (Lok Sabha Elections 2024) প্রচারে নেমে পড়ার কথা তাঁদের। বারাণসীর পর মোদি (Narendra Modi) এবার রামকে হাতিয়ার করে রামজন্মভূমির ‘সেবা’ করতে চান। তাই অযোধ্যা থেকে প্রার্থী হতে পারেন। বিজেপির অন্দরে এমন সম্ভাবনা ঘুরপাক খাচ্ছে।
[আরও পড়ুন: বজ্র আঁটুনী অযোধ্যায়, নজরবন্দি প্রতিবাদী ধর্মগুরুরাও!]
মোদির তুলনায় সংখ্যায় কম হলেও রামনগরী অযোধ্যাও যোগীর ছবিতে ছয়লাপ। ব্যানার, কাটআউটে কোনওটিতে দাদা-ভাই জুটি হয়ে হাত জোড় করে দাঁড়িয়ে। কোনওটিতে স্থান পেয়েছে একজনেরই মুখ। সাধু-সন্ত-সাধারণ পুণ্যার্থীরা না এলে বোঝার উপায় থাকত না রামমন্দিরের উদ্বোধন নাকি নির্বাচন, অযোধ্যার ভোল বদলের আসল উদ্দেশ্য কী! গেরুয়া শিবিরের একাংশ মনে করছে, অমিত শাহ-সহ গেরুয়া শিবিরের নেতাদের বার্তা দিতেই যোগীর এই কৌশল। তবে দলের অভ্যন্তরে ভিন্ন মতও আছে। অনেকেরই মত, অমিত শাহ মোদির অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। তাঁকে হাত ধরে দিল্লি নিয়ে এসেছেন মোদিই। এছাড়াও শাহ সংঘ পরিবারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। সেখানে সংঘে বিরোধিতা দিয়েই যোগীর (Yogi Adityanath) উত্থান। ফলে সংঘ পরিবার কতখানি তাঁর পাশে দাঁড়াবে, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে।