দুলাল দে: কলকাতা লিগের জন্য ইস্টবেঙ্গলের কোচ হতে চলেছেন সন্তোষ ট্রফি জয়ী দলের কোচ বিনো জর্জ (Bino George)। যেহেতু তাঁর প্রো-লাইসেন্স কোচিং ডিগ্রি রয়েছে, তাই কলকাতা লিগ হয়ে গেলে ডুরান্ড ও আইএসএলে (ISL) ইমামি ইস্টবেঙ্গল নামে যে দল খেলবে, সেই দলের সহকারী হিসেবে থাকবেন সন্তোষজয়ী এই কেরলিয়ান কোচ। ইস্টবেঙ্গল কর্তারা অনেক আগেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন কলকাতা লিগ খেলতে গেলে দ্রুত দল নামাতে হবে। সেই কারণেই শেষ মুহূর্তে ক্লাব ও ইমামি কর্তারা এমন একজন ভারতীয়কে কোচ করতে চান যাঁর হাতে প্রচুর সম্ভবনাময় ফুটবলার রয়েছে। এবারের সন্তোষ ট্রফিতে শক্তিশালী বাংলাকে দু’দুবার হারিয়ে কেরলকে চ্যাম্পিয়ন করেছেন বিনো জর্জ। ফলে তাঁর হাতে কেরলের প্রচুর সম্ভাবনাময় ফুটবলার থাকবে, এটাই স্বাভাবিক।
ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) ও ইমামি কর্তারা চাইলেও এই মুহূর্তে খুব ভাল ভারতীয় ফুটবলার পাবেন না। এর একটাই কারণ, আইএসএলের প্রতিটি দলের সঙ্গে ভারতীয় ফুটবলারদের দীর্ঘ চুক্তি রয়েছে। তাছাড়া কলকাতা লিগ এবং ডুরান্ডে দ্রুত দল নামাতে গেলে ভারতীয় ফুটবলারদের নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করার সুযোগও নেই লাল-হলুদ কর্তাদের। যে কারণে বিনো জর্জের মতো অভিজ্ঞ প্রো-লাইসেন্সধারী ভারতীয় কোচকে বেছে নিচ্ছে ইমামি ইস্টবেঙ্গল। ভারতীয় ফুটবল সার্কিটে বিনো জর্জ যথেষ্ট পরিচিত নাম। নয়ের দশকে মহামেডানে খেলে যাওয়া বিনো এর আগে কলকাতায় কোচিং করিয়েছেন ইউনাইটেড স্পোর্টসে। ছিলেন আই লিগে গোকুলাম কেরালা এফসির দায়িত্বেও।
[আরও পড়ুন: কোহলিকে ফর্মে ফেরাতে মরিয়া নির্বাচকরা, পাঠানো হতে পারে জিম্বাবোয়ে সফরে]
কলকাতা লিগে (Kolkata Premier League) কোচ হওয়ার জন্য গতকালই লাল-হলুদ কর্তারা বিনো জর্জকে প্রস্তাব দিয়েছেন। সন্তোষ জয়ী কেরলের এই কোচ সঙ্গে সঙ্গে জানিয়ে দিয়েছেন, তিনিও কলকাতায় এসে ইমামি ইস্টবেঙ্গলকে কোচিং করতে আগ্রহী। কিন্তু তারজন্য পছন্দমতো কিছু ভাল ফুটবলার নেওয়া কথা বলেন বিনো জর্জ। এবার কোন ফুটবলার নেওয়া হবে, কোচের সঙ্গে আর্থিক চুক্তি কী হবে, কীভাবে পুরো মরশুমের জন্য কোচকে পাওয়া যাবে, এই বিষয়গুলি এখন নির্ভর করছে কোম্পানির ওপর।
ইমামি ইস্টবেঙ্গল প্রাইভেট লিমিটেড নামে নতুন কোম্পানি গঠিত হচ্ছে, তা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। এবার অপেক্ষা আইনি কাগজপত্রের সিলমোহরের। এইক্ষেত্রে ইস্টবেঙ্গল বা ইমামি কর্তারা-দুই পক্ষই এক জায়গায় এসেছেন, দ্রুততার সঙ্গে কোচ ও ফুটবলারদের নিয়ে প্র্যাকটিসে নেমে যাওয়া হবে সামনের সপ্তাহে। তারপর ধীরে ধীরে কোম্পানির আইনি কাগজপত্র চলে এলে চুক্তিতে সই হয়ে যাবে। ফলে নির্দিষ্ট সময়ে কলকাতা লিগ এবং ডুরান্ডে ফুটবল দল নামাতে কোনও অসুবিধাই হবে না ক্লাবের। ক্লাব এবং ইমামির পক্ষ থেকে বিনো জর্জকে জানানো হয়েছে, দু’দিনের মধ্যে তাঁরা চূড়ান্ত সম্মতির কথা জানিয়ে দেবে। ফলে যতক্ষণ না চূড়ান্তভাবে সই হচ্ছে, ততক্ষণ বিনো জর্জ লাল-হলুদের কোচ, তা বলা যাচ্ছে না। তবে গতিপ্রকৃতি যেদিকে এই মুহূর্তে দ্রুততার সঙ্গে দল নামাতে গেলে সন্তোষ জয়ী কোচই আদর্শ পছন্দ।
বিনো জর্জকে কোচ নেওয়ার পাশাপাশি ডুরান্ড ও আইএসএলের জন্য বিদেশি কোচের সঙ্গেও কথা বলছেন ইমামি ইস্টবেঙ্গল কর্তারা। এবং যেহেতু বড় কোচ নেওয়া হবে তাই একটু সময় একটু বেশি লাগবে। যিনি নতুন কোচ আসবেন, তাঁর যেহেতু ভারতীয় ফুটবলারদের সম্পর্কে কোনও ধারণা থাকবে না, তাই তিনি শুধু পর্যবেক্ষণ করবেন। একক ভাবেই কোচিং করতে দেওয়া হবে বিনো জর্জকে। কলকাতা লিগের পারফরম্যান্স দেখে ডুরান্ড ও আইএসএলের জন্য দল বেছে নেবেন নতুন বিদেশি কোচ।