পোল্যান্ড: ০
আর্জেন্টিনা: ২ (অ্যালিস্টার, আলভারেজ)
সৌদি আরব: ১ (সালেম)
মেক্সিকো: ২ (মার্টিজ, চাভেজ)
দুলাল দে, দোহা: তিনি ছিলেন। মাঠ ও মাঠের বাইরে বারবার তাঁর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেল। পোল্যান্ডের জালে বল জড়িয়ে দেওয়ার মরিয়া প্রয়াস ধরা পড়ল কখনও। তো আবার তাঁর নাম ধ্বনিত হল গ্যালারির এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে। কিন্তু তিনি আজ ব্যর্থ। তবে ব্যর্থ নয় আর্জেন্টিনা। আর সেটাই সবচেয়ে বড় পাওনা মারাদোনার দেশের ফ্যানদের। সব হিসেবনিকেশের ইতি ঘটিয়ে বিশ্বকাপের নকআউটে পৌঁছে গেল স্কালোনির দল। তবে সৌদিকে হারিয়েও গোল পার্থক্যে পিছিয়ে থাকায় কাতার থেকে বিদায় নিল মেক্সিকো। হেরেও নকআউটে পোল্যান্ড।
আজ হারলেই চিরতরে শেষ বিশ্বকাপ। সে কথা মাথায় রেখেই এদিন সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়েছিল মেসি অ্যান্ড কোং। খেলার শুরু থেকেই পোলিশ ডেরায় আক্রমণ শানায় আর্জেন্টিনা। কিন্তু যে ম্যাচে জীবন-মরণ বাজি রাখা, সেখানে পেনাল্টি থেকে গোল মিস করলে দলের স্নায়ুচাপ বাড়ে বইকী। দুনিয়ার দ্বিতীয় ফুটবলার হিসেবে বিশ্বকাপে দুটি পেনাল্টি মিস করলেন মেসি। হতাশার ইতিহাস রচনা করে নাম লেখালেন ১৯৬৬ বিশ্বকাপে ঘানা দলের সদস্য আসামোয়ার সঙ্গে। আজ সত্যিই বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেলে নিজেকে ক্ষমা করতে পারতেন মেসি? জানা নেই। তবে দল নকআউটে পৌঁছনোয় ‘প্রায়শ্চিত্ত’র আরও একটা সুযোগ তিনি পেয়ে গেলেন।
[আরও পড়ুন: ফ্রান্সকে হারিয়েও বিদায় টিউনিশিয়ার, ডেনমার্ককে মাটি ধরিয়ে নকআউটে অস্ট্রেলিয়া]
এ প্রসঙ্গে পোল্যান্ড গোলকিপার সেজনির কথা না বললেই নয়। চলতি বিশ্বকাপে তেকাঠির নিচে দাঁড়িয়ে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার পেনাল্টি রুখে দিয়ে বিশ্বকে স্তম্ভিত করলেন জুভেন্তাস তারকা। তবে প্রথম থেকে ক্রমাগত ডিফেন্স করে গেলেও দ্বিতীয়ার্ধ শুরুর ৬৮ সেকেন্ডেই সেই রক্ষণে ভাঙন ধরালেন অ্যালেক্স ম্যাক অ্যালিস্টার। কঠিন পরিস্থিতিতে মাথা ঠান্ডা রেখে বল জালে জড়ানো তো মুখের কথা নয়। যেখানে আবার পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হয়েছেন খোদ ফুটবল জগতের মহামানব। কিন্তু স্টেডিয়ামের একটা বড় অংশ যখন নীল-সাদা জার্সি গায়ে চাপিয়ে প্রিয় দলের জন্য গলা ফাটায়, তখন যেন আত্মবিশ্বাস দ্বিগুণ হয়ে যায়। বেড়ে যায় গোল করার তাগিদ। আর সেই তাগিদে ভর করে বেড়ে যায় ব্যবধানও।
লা আলবিসেলেস্তার হয়ে ম্যাচের দ্বিতীয় গোলটি করে লেওনডস্কিদের কফিনে শেষ পেরেকটি পুঁতে দেন আলভারেজ। নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপেই দলকে নকআউটে পৌঁছে দেওয়ার নায়ক হয়ে গেলেন দুই তরুণ তুর্কি। এরপর খেলায় ফিরতে আক্রমণে গেলেও ততক্ষণে অনেকটা দেরি হয়ে গিয়েছে। তবে অতিরিক্ত ডিফেন্সিভ ফুটবলই ভোগাল পোল্যান্ডকে। শেষ ষোলোয় তারা মুখোমুখি হবে ফ্রান্সের। আর মেসিদের প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া।
এদিকে প্রথমার্ধ গোলশূন্য থাকার পর দ্বিতীয়ার্ধে জোড়া গোল করে বিশ্বকাপ থেকে প্রথমে সৌদি আরবের বিদায় নিশ্চিত করে মেক্সিকো। প্রথমে গোল করে এগিয়ে দেন হেনরি মার্টিজ। লুইস চাভেজের দুরন্ত ফ্রি কিক থেকে আসে জয়সূচক গোলটি। তবে ইনজুরি টাইমে একটি গোল শোধ করে সৌদি। আর তাতেই নকআউটে যাওয়ার স্বপ্নভঙ্গ হয় মেক্সিকোরও।