স্পেন ১ (মোরাটা)
জার্মানি ১ (ফুলক্রুগ)
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যেমনটা প্রত্যাশিত ছিল। হলও তেমনটাই। ৯০ মিনিটের টানটান লড়াই। পাশা বদল। মিনিটে মিনিটে পটপরিবর্তন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জার্মানি বনাম স্পেন ম্যাচে থেকে পুরো পয়েন্ট নিয়ে ফিরতে পারল না কোনও শিবিরই। ম্যাচ শেষ হল ১-১ গোলে। স্প্যানিশদের বিরুদ্ধে এক পয়েন্ট পেয়ে বিশ্বকাপে (FIFA World Cup) ভেসে রইল জার্মানরা।
আর পাচটা বড় ম্যাচের মতোই ইউরোপের দুই মহাশক্তিধর ফুটবল খেলিয়ে দেশের লড়াই শুরু হয়েছিল অপেক্ষাকৃত ধীর গতিতে। আসলে হ্যান্সি ফ্লিক এবং লুইস এনরিকে (Luis Enrique) দুই কোচই প্রতিপক্ষের খেলার ধরন ভালমতো বুঝে নিতে চাইছিলেন প্রথমার্ধে। যার ফলস্বরূপ প্রথমার্ধের বেশিরভাগ সময় বল রয়ে গেল মাঝমাঠেই। কোনও দলই সেভাবে পরিষ্কার গোল করার সুযোগ তৈরি করতে পারল না। তবে মোটের উপর খেলার নিয়ন্ত্রণ ছিল স্প্যানিশদের হাতেই। যেভাবে একেবারে গোলরক্ষকের পা থেকে খেলা তৈরি করার চেষ্টা করছিলেন স্পেনের তরুণ ফুটবলাররা, সেটাও ছিল দেখার মতো। কিন্তু আক্রমণভাবে সেভাবে জায়গা পাননি স্পেনের ফরওয়ার্ডরা। ফলে দু’একটা প্রতিশ্রুতিমান আক্রমণ ছাড়া তেমন কিছুই করে উঠতে পারেননি তাঁরা। আর উলটোদিকে জার্মানরা ম্যাচের ৪০ মিনিটের মাথায় ফ্রি-কিক থেকে রুডিগারের করা অফসাইড গোল বাদ দিলে, গোটা প্রথমার্ধ শুধু বল দখলের লড়াই-ই করে গিয়েছে।
[আরও পড়ুন: গিনেস বুকে নাম উঠল ভারতীয় বোর্ড ও নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামের! কী নজির তৈরি হল?]
প্রথমার্ধে সেভাবে দাগ কাটতে না পেরে দ্বিতীয়ার্ধে খানিকটা আক্রমণাত্মকভাবে শুরু করার চেষ্টা করেন জার্মানরা (Germany)। আর সেটাই কাল হয় মুলারদের জন্য। আক্রমণে লোক বাড়াতে গিয়ে রক্ষণে স্প্যানিশদের বেশি জায়গা দিয়ে ফেলেন গুন্ডগান, কিমিকরা। সেই সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করেনি স্পেন (Spain)। ততক্ষণে দলের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার মোরাটাকে মাঠে নামিয়ে দিয়েছেন এনরিকে। সেই মোরাটার পা থেকেই ম্যাচের প্রথম গোলটি আসে স্পেনের। ডান প্রান্ত থেকে ওলমোর বাড়ানো ক্রস থেকে নিখুঁত ফ্লিকে জার্মান জালে বল জড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। ম্যাচের বয়স তখন ৬২ মিনিট। গোল হজম করার পর নিজেদের স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই অল-আঊট আক্রমণে ঝাঁপায় জার্মানি। আক্রমণের লক্ষ্যে জার্মানদের সবচেয়ে বড় অস্ত্র ছিলেন তরুণ জামাল মুসিয়ালা। ম্যাচের ৭০ মিনিটের কাছাকাছি তিনি একটি সুবর্ণ সুযোগ তৈরিও করে ফেলেছিলেন। কিন্তু তাঁর সতীর্থরা সেটা কাজে লাগাতে পারেননি। আবার পরের মুহূর্তে মুসিয়ালা নিজেই ম্যাচের সেরা সুযোগটি পেয়েছিলেন। তাতেও স্পেনের গোলরক্ষক উনাই সিমনকে পরাস্ত করতে পারেননি তিনি। তবে তখন থেকেই মনে হচ্ছিল দ্রুত ম্যাচে ফিরতে পারে জার্মানরা। হলও সেটাই। ম্যাচের ৮১ মিনিটে অনবদ্য গোলে জার্মানদের ম্যাচে ফেরালেন পরিবর্ত ফুটবলার ফুলক্রুগ। তারপর দু’পক্ষই কমবেশি সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু ম্যাচে আর গোল আসেনি।
[আরও পড়ুন: বেলজিয়ামকে হারিয়ে অবাক করা সেলিব্রেশন মরক্কোর, জমে গেল গ্রুপ এফ-এর লড়াই]
এদিনের ম্যাচের এই এক পয়েন্ট জার্মানদের জন্য মৃতসঞ্জীবনীর কাজ করতে পারে। শেষ ম্যাচে কোস্টারিকাকে হারাতে পারলে পরের রাউন্ডের রাস্তা খুলে যেতে পারে মুলারদের জন্য। অন্যদিকে এদিনের ম্যাচে পয়েন্ট খুইয়ে কিছুটা হলেও আফসোস করবেন স্পেনের কোচ এনরিকে। ম্যাচের বেশিরভাগ সময়টাই খেলা নিয়ন্ত্রণ করেছে স্পেনই। শেষদিকে মিনিট পনেরোর ভুলের জন্য পুরো পয়েন্ট হাতছাড়া হয়েছে স্পেনের। ড্র’য়ের ফলে শেষ ম্যাচে জাপানের বিরুদ্ধে অন্তত ১ পয়েন্ট পেতেই হবে স্পেনকে। তবে এই স্প্যানিশ দল যেভাবে ম্যাচের বেশিরভাগ সময়টা ম্যাচের গতি নিয়ন্ত্রণ করে খেললে, সেই খেলা ধরে রাখতে পারলে আগামী দিনে অন্য বড় দলগুলির জন্য ত্রাস হয়ে উঠতে পারে তারা।