বোরিয়া মজুমদার: মাত্র কয়েক দিনে কত কিছু বদলে যায়!
দিন কয়েক আগেও ভারত-বাংলাদেশ (India vs Bangladesh) ম্যাচটা নিয়ে কারও আগ্রহই ছিল না। পাকিস্তানকে প্রথম ম্যাচে বধ করার পর সবাই ধরে নিয়েছিলেন যে, দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ অতি সহজে জিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ (ICC T-20 World Cup) সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলবে ভারত। বাংলাদেশেরও বিশ্বকাপ অভিযান কার্যত শেষ হয়ে যাবে। সেটা তো হয়ইনি, উল্টে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরে গিয়ে বাংলাদেশ ম্যাচ ভারতের প্রেক্ষিতে মহাগুরুত্বপূর্ণ হয়ে গিয়েছে। ভারতকে এখন বিশ্বকাপের শেষ চারে যেতে হলে, বাংলাদেশকে হারাতেই হবে।
[আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কা এবং ইংল্যান্ডের জয়ে জমে গেল বিশ্বকাপের গ্রুপ-১, সেমিফাইনালের দৌড়ে কারা?]
অতএব– পরিস্থিতি বিচারে অসীম গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। কিন্তু অ্যাডিলেডে মঙ্গলবার খেলাটা আদৌ হবে তো? বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে একটা। এ দিনও দফায় দফায় বৃষ্টি হয়েছে তেড়ে। আরও একটা ফ্যাক্টর আছে– হাড়কাঁপানো ঠাণ্ডা। বুধবারের ভারত-বাংলাদেশ যুদ্ধে যা প্রভাব ফেলতে পারে। আর ভারতের কাছেও নিজেদের সেরা খেলাটা খেলা ছাড়া বিশেষ উপায় নেই।
বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব-আল-হাসানের (Shakib Al Hasan) কাছেও ভারত ম্যাচের গুরুত্ব অপরিসীম। অ্যাডিলেডে বুধবার ভারতকে হারিয়ে দিতে পারলে গোটা বিশ্বকে একটা জোরালো বার্তা দেওয়া যাবে বাংলাদেশ ক্রিকেট নিয়ে। মাসের পর মাস ম্যাচটা নিয়ে কথা হবে, দেশে ফিরলে বীরের মর্যাদা পাবেন ক্রিকেটাররা। বাংলাদেশের দুই ওপেনার নাজমুল শান্ত এবং সৌম্য সরকার–এঁরা দু’জনেই কিন্তু ভারতীয় বোলিংকে মহাধাক্কা দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। এঁদের সঙ্গে থাকবেন সাকিব, বাংলাদেশের সেরা ক্রিকেটার। বর্তমানে অস্ট্রেলিয়া নিবাসী প্রাক্তন বাংলাদেশ অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল এ দিন বলছিলেন, ‘‘সাকিবের মানসিকতা ওর সবচেয়ে বড় শক্তি। বিশ্বকাপের চাপ নিতে জানে ও। ভারতের সামনে সাকিবই এক নম্বর চ্যালেঞ্জ।’’
সাকিব আছেন, তাসকিন আহমেদ আছেন। জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে তাঁর গতিসম্পন্ন স্পেল দেখার মতো ছিল। পারথে দক্ষিণ আফ্রিকা পেসাররা কী ভাবে গতি দিয়ে কাবু করেছিলেন ভারতীয় ব্যাটারদের, সেটাও নিশ্চিত দেখেছেন তাসকিন। সোজাসুজি বললে, বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের কাছে মোটিভেশনের অভাব নেই। ভারত আর পাকিস্তানকে হারাতে পারলে তাদের সামনেও সেমিফাইনালে ওঠার সম্ভাবনা থাকবে। বাংলাদেশ সাংবাদিকরা আবার কেউ কেউ আফিফ হোসেনের নাম বললেন। বলা হল, আফিফ বড় ম্যাচের প্লেয়ার।
ভারত-বাংলাদেশ খেলাটার একটা নামকরণও হয়েছে– নতুন এশীয় ডার্বি। ভারতও জানে যে, বাংলাদেশের ক্ষমতা আছে তাদের আঘাত করার। জানে, দক্ষিণ আফ্রিকা বিপর্যয়ের পর বুধবার জিতলে সমর্থকদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ অনেকটাই থেমে যাবে। ভারত আবার তাকিয়ে থাকবে টপ অর্ডারের প্রথম চারের থেকে একটা বিশেষ ইনিংসের দিকে। বিরাট কোহলি বা সূর্যকুমার যাদবের মধ্যে যদি কেউ একজন খেলে দেন, চাপে পড়বে বাংলাদেশ। তবে রবিচন্দ্রন অশ্বিন খেলবেন নাকি যুজবেন্দ্র চাহাল, কেএল রাহুল নাকি ঋষভ পন্থ– সেই প্রশ্নগুলো আছে। সে যাক। বৃষ্টির ভ্রুকুটি উড়িয়ে খেলাটা হোক, সেটাই সর্বাত্মক প্রার্থনা।