স্টাফ রিপোর্টার: ‘ম্যাচের দিন সকালে দেখব কে কী অবস্থায় আছে। তারপরই প্রথম একাদশ ঠিক করব।’ বিশ্বফুটবলের বিভিন্ন লিগে এই শব্দবন্ধ শোনা যায় প্রায় সব কোচ আর ম্যানেজারের মুখে। পরিকল্পনা তৈরি থাকলেও তা নিয়ে মুখ খোলেন না তাঁরা। মঙ্গলবার বিকেলে মোহনবাগান (Mohun Bagan) কোচ জুয়ান ফেরান্দোও বললেন, “প্রথম একাদশ নির্বাচনের জন্য এখনও ২৪ ঘণ্টা আছে হাতে। কাল ফুটবলারদের অবস্থা দেখে সিদ্ধান্ত নেব।” এর আগে প্রত্যেক সাংবাদিক সম্মেলনে এই কথা বলেছেন তিনি। তবে তফাৎ হল, এবার সত্যিই শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করা ছাড়া কোনও পথ নেই সবুজ-মেরুন কোচের সামনে। কারণ দলটা যে রীতিমতো হাসপাতাল হয়ে গিয়েছে! একের পর এক ফুটবলারের চোট। কেউ কেউ চোট নিয়েই খেলতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে হাতে গোনা কয়েকজন ম্যাচ ফিট ফুটবলারকে নিয়ে দল সাজাতে গিয়ে বেকায়দায় ফেরান্দো।
যেমন হুগো বুমোস (Hugo Boumos)। সোমবার দলের সঙ্গে পুরোদমে অনুশীলন করেছেন। ধরেই নেওয়া হয়েছিল, বুধবার এফসি গোয়া ম্যাচে শুরু থেকেই খেলবেন তিনি। আর হুগো ফেরা মানেই বাগান মাঝমাঠের সমস্যা অনেকটা মিটে যাওয়া। অথচ অবাক কাণ্ড, এদিন বিকেলে অনুশীলনই করলেন না হুগো। শোনা যাচ্ছে, পুরনো চোটের ব্যথা বেড়েছে। তাই এদিন আর দলের সঙ্গে প্র্যাকটিসে নামেননি তিনি। নর্থ-ইস্ট ইউনাইটেড (North East United) ম্যাচে চোট পাওয়া দীপক টাংরি গোয়া ম্যাচে নেই। তাঁর পরিবর্তে শুরু থেকে খেলতে পারেন প্রণয় হালদার। আশিক কুরুনিয়ানের খেলা নিয়েও প্রশ্ন আছে। দলের চোট-চিত্র নিয়ে ফেরান্দোও বলে গেলেন, “৬-৭ জন ফুটবলার চোটের তালিকায় রয়েছে। তিরি, কাউকো, পোগবারা তো হিসাবের বাইরে চলে গিয়েছে। এছাড়া মনবীর, দীপক, আশিক, হুগো, ফারদিনের কমবেশি চোট রয়েছে। কাল দীপককে পাওয়া কঠিন। সকালে ফিটনেস দেখে আশিক নিয়ে সিদ্ধান্ত নেব। অবশ্য এটা নতুন কিছু না। দলের প্রায় প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই ম্যাচের দিন সকালে সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে।”
[আরও পড়ুন: এশিয়াতেই রোনাল্ডো! সৌদির ক্লাবে মেডিক্যাল পরীক্ষা দিতে চলেছেন সিআর সেভেন]
প্রথম পর্বে গোয়ায় গিয়ে ০-৩ গোলে হেরে ফিরেছিলেন দিমিত্রি পেত্রাতোসরা (Dimitri Petratos)। যদিও চোট চ্যালেঞ্জ সামলাতে গিয়ে সেদিকে মন দেওয়ার অবস্থা নেই ফেরান্দোর। “চোট ফুটবলের অঙ্গ। সেজন্যই আমাদের স্কোয়াডে ২৭ জন ফুটবলার আছে। সবাই খেলার জন্য তৈরি। আমি দলের উপর ভরসা রাখছি। তবে চোটের জন্য প্রস্তুতিতে সমস্যা হয়। এমনও হয়েছে মাত্র ১২ জন ফিট ফুটবলারকে প্র্যাকটিসে পেয়েছি,” আক্ষেপের সুরে বললেন স্প্যানিশ কোচ। তবে এত চোটের মধ্যেও দলের পারফরম্যান্সে খুশি ফেরান্দো (Juan Ferrando)। বললেন “এখনও বলব, আমরা সুযোগ তৈরি করছি আর সেটা সবসময় ইতিবাচক দিক। নর্থ-ইস্ট ম্যাচে মুহূর্তের ভুলে একটা গোল খাওয়া বাদ দিলে ডিফেন্সও শেষ কয়েক ম্যাচ ভাল খেলছে। সমস্যাটা অন্য জায়গায়। আক্রমণে কিছুটা আত্মবিশ্বাসের অভাব হচ্ছে। সেটা অস্বাভাবিক নয়। একটু আত্মবিশ্বাস দেখাতে পারলে ফল আমাদের পক্ষেই আসবে।”
[আরও পড়ুন: সই করা জার্সি উপহার দিয়েছেন মেসি, আনন্দে আত্মহারা ধোনিকন্যা জিভা]
এই অবস্থায় গোয়ার বিরুদ্ধে গোলের জন্য দুই ফরোয়ার্ড নবীন ফারদিন আর কিয়ানের উপর ভরসা করছেন ফেরান্দো। বললেন,“লিস্টন, কিয়ান, ফারদিনরা ভারতের ভবিষ্যৎ। আর কয়েকটা বছর পর ওরাই দেশের ফুটবলকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তাই এখন ওদের পাশে থাকতে হবে আমাদের।” গোয়ার বিরুদ্ধে ফারদিনরা ফেরান্দোর ভরসার দাম দিতে পারলে বছরের শেষটা ভালই কাটবে সবুজ-মেরুন জনতার।
আজ আইএসএলে
মোহনবাগান বনাম এফসি গোয়া
সন্ধ্যা ৭.৩০, যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন
স্টার স্পোর্টস ৩