অরিঞ্জয় বোস: আজ আপনি এসপ্ল্যানেড ঘুরে ইডেন (Eden Gardens) গেলে, চোখ-কান খোলা রাখবেন পারলে। একটু খেয়াল করলেই হাতে পেয়ে যাবেন সবুজ-মেরুন জার্সি, সবুজ-মেরুন পতাকা। রিস্টব্যান্ড। হেডব্যান্ড।
চলতি আইপিএলেই (IPL 2023) ইডেনের গায়ে হলুদ দেখেছে শহর। মহেন্দ্র সিং ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস ম্যাচে। দেখেছে, আরসিবি ম্যাচে বিরাট কোহলির লোহিতবর্ণ জার্সিতে নিজেকে রাঙিয়ে নিতে। শনিবাসরীয় কেকেআর বনাম লখনউ সুপার জায়ান্টস ম্যাচে আরও এক নতুন রঙে নিজেকে রাঙিয়ে নিতে প্রস্তুত হচ্ছে শহর। সবুজ-মেরুন রংয়ে, আবেগের মোহনবাগানের রংয়ে। যার পর মনে হতে পারে, আদৌ শনিবাসরীয় শহরের গন্তব্য অভিমুখ ইডেন তো? নাকি যুবভারতী?
[আরও পড়ুন: মাত্র ৬ বছর বয়সেই ক্যারাটেতে ব্ল্যাক বেল্ট, নজির হুগলির খুদের]
লখনউ সুপার জায়ান্টস (LSG) কর্তারা বলে দিচ্ছেন যে, ইডেনে মোহন-বৈশাখী উপস্থিত করতে তাঁরা কোনও রকম কার্পণ্য করবেন না। মোহনবাগানের খেলা থাকলে যুবভারতীতে সমর্থনের যে সবুজ-মেরুন পাগলাটে হাওয়া ওঠে, সেই একই জিনিস তাঁরা চান শনিবার ইডেনে। ঠিক যে কারণে, ইডেন অভিমুখী প্রায় সমস্ত রাস্তায় থাকছে অকাতরে সবুজ-মেরুন জার্সি-হেডব্যান্ড-পতাকা। সমর্থকরা নেবেন, নিয়ে স্টেডিয়ামে ঢুকে যাবেন।
সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে যে পরিমাণ আবেগের বিস্ফোরণ ঘটেছে প্রতিনিয়ত, ক্রুণাল পাণ্ডিয়ারা সবুজ-মেরুন জার্সি পরার পর থেকেই যেরকম ট্রেন্ডিং হয়ে গিয়েছেন, তাতে একটা কথা এখনই বলে দেওয়া যায়– শনিবার ইডেনে একটা টিম না থেকেও থাকবে ভালরকম। যার নাম মোহনবাগান। না হলে লখনউ সুপার জায়ান্টসের সবুজ-মেরুন জার্সিতে খেলার ঘোষণার পর থেকেই টিকিটের এরকম হাহাকার কেন শুরু হবে? কেনই বা শুক্রবার বিকেলে ইডেনের সামনে বেশ কয়েকজন মোহন সমর্থককে টিকিটের জন্য কেন উভ্রান্তের মতো ঘুরে বেড়াতে দেখা যাবে? কেন-ই বা দলে দলে মোহনবাগান সমর্থকরা ঠিক করে ফেলবেন যে, শনিবার তাঁদের টিমের নাম লখনউ সুপার জায়ান্টস?
আসলে সবটাই সঞ্জীব গোয়েঙ্কার মাস্টারস্ট্রোক। মোহন-আবেগকে লখনউয়ের সঙ্গে জুড়ে তিনি যে ঘোষণা করেছেন, তাতে ইডেনের রঙ সবুজ-মেরুন হতে বাধ্য। আর দেখেশুনে মনে হচ্ছে, যতই কেকেআর মরণ-বাঁচন যুদ্ধে শনিবার নামুক না কেন, লখনউ কিন্তু ম্যাচ শুরুর আগে আবেগের যুদ্ধে ঘরের টিমকে দু’গোল দিয়ে বসে আছে। ঠিক এক দশক আগে যেমন ঘরের ছেলে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সমর্থনে আইপিএলে কেকেআর বনাম পুণে ওয়ারিয়র্স ম্যাচে বঙ্গভঙ্গ দেখেছিল শহর। শনিবার ইডেনে এগারো বছর পর ঠিক আর এক বঙ্গভঙ্গের সাক্ষী থাকতে চলেছে কল্লোলিনী তিলোত্তমা।
সোনালি-বেগুনি বনাম সবুজ মেরুন!