সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তাঁকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছিলেন দেশবাসী। কিন্তু টোকিও অলিম্পিকের (Tokyo Olympics 2020) মঞ্চে হতাশই করেছিলেন ভিনেশ ফোগাট (Vinesh Phogat)। পদক জয়ের কাছাকাছিও পৌঁছতে পারেননি ভারতের তারকা কুস্তিগির। মহিলাদের ৫৩ কেজি ফ্রিস্টাইল বিভাগের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই ছিটকে গিয়েছিলেন। পরাজয়ের পর সমালোচনা শুরু হয় তাঁর। শুধু তাই নয়, অলিম্পিকে নিয়ম ভাঙার জন্য অনির্দিষ্টকালের জন্য তাঁকে সাসপেন্ডও করে ভারতের কুস্তি ফেডারেশন (WFI)। এতদিনে সেইসব নিয়েই মুখ খুললেন তারকা কুস্তিগির। জানালেন, তাঁকে নিয়ে চলতে থাকা সমালোচনার কারণে মানসিকভাবে পুরোপুরি ভেঙে পড়েছেন তিনি।
ভারতীয় কুস্তিগির ভিনেশের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠেছিল। আর সেই সমস্ত কিছু নিয়েই এবার মুখ খুলে ভিনেশ বললেন, “প্রথমবার আমি আগস্টে করোনা আক্রান্ত হই। কাজাখস্তানে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে ফেরার পর আমি দ্বিতীয়বার করোনার কবলে পড়ি। আমি সুস্থ হয়ে বুলগেরিয়ায় রওনা দিলেও এরপর আমার পরিবারের লোকজন করোনা আক্রান্ত হয়। এরপরেও কি আমার বাকি অ্যাথলিটদের সঙ্গে না থাকার সিদ্ধান্ত ভুল, সাতদিনের জন্য ওদের প্রত্যহ টেস্ট করা হলেও আমার কিন্তু তা হত না।” করোনা হওয়ার পর থেকে তিনি কোনরকমের প্রোটিন খেতে পারছেন না বলে জানান ভিনেশ ফোগাট। কারণ প্রোটিন খেলেই, তা বমি হয়ে যাচ্ছে বলে জানান ভিনেশ। পাশপাশি ২০১৯ সালে নিজের ওজন বিভাগ বদলানোর পর থেকেই তিনি মানসিক সমস্যায় ভুগছেন বলেও দাবি তাঁর।
[আরও পড়ুন: ফুটবল ম্যাচ চলাকালীন বিদ্যুতের গতিতে মাঠে ঢুকে পড়ল শিশু, পিছনে ছুটলেন মা, তারপর…]
এরপরই ভিনেশের সংযোজন, “মানসিকভাবে আমি বিধ্বস্ত। আমাকে নিজের হারের দুঃখটুকু করার সময় দেয়নি কেউ, তার আগেই সকলে দোষারোপ করতে প্রস্তুত ছিল। একটা হারেই যেন সব শেষ। আমার বিরুদ্ধে কত কিছু লেখা হয়েছে। সবাই এমন ব্যবহার করছে, আমি যেন পুরো শেষ হয়ে গেছি।” ভারতে মানসিক স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব না দেওয়ার অভিযোগ তুলে ভিনেশ বলেছেন, “আমরা সিমোনে বাইলসকে নিয়ে আলোচনা করি যে ও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সর্বসমক্ষে কথা বলেছে। ইভেন্ট থেকে সরে দাঁড়ানো তো দূর, ভারতে অলিম্পিকের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত নই কথাটা বলাও মানা। আমি কখনওই আমাকে সোনার পদক জয়ের ব্যাপারে ফেভারিট ধরতে বলিনি। আমি নিজের জন্য লড়ি এবং পরাজয়ের পর আমার নিজেরই সবথেকে খারাপ লেগেছে। কিন্তু ভারত এমন একটি জায়গা, যেখানে আপনাকে যত তাড়াতাড়ি নায়কের আসনে বসিয়ে উপরে ওঠানো হবে, তাঁর থেকেও দ্রুত আপনাকে নিচে নামিয়ে দেওয়া হবে। আপাতত আমাকে এখন একটু একা থাকতে দিন। কারণ আমি পুরোপুরি ভেঙে পড়েছি। তবে এখন আমার মাথায় দু’রকমের ভাবনা রয়েছে। কুস্তিকে সমস্ত কিছু দিয়েছি আর তাই সবকিছু ছেড়ে চলে যাই। কিন্তু আবার মনে হচ্ছে, এখান থেকে চলে গেলাম, কোনও লড়াই করলাম না, তাহলে সেটাই আমার সবচেয়ে বড় ক্ষতি।”
উল্লেখ্য, ভিনেশকে শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য নোটিস ধরিয়েছে ফেডারেশন। আগামী ১৬ আগস্টের মধ্যে সেই শোকজের জবাবও দিতে হবে তাঁকে। যদি তাঁর যুক্তি সন্তোষজনক মনে না হয়, তবে তাঁর খেলার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার পথেও হাঁটতে পারে ফেডারেশন। অর্থাৎ রীতিমতো চাপের মুখে ভিনেশের কেরিয়ার। এদিকে, ভিনেশের পাশাপাশি অখেলোয়াড়োচিত আচরণের জন্য আরেক কুস্তিগির সোনম মালিককেও (Sonam Malik) শোকজ নোটিস দিয়েছে ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশন।