সংক্ষিপ্ত স্কোর: শ্রীলঙ্কা ১৭০/৬ (রাজাপক্ষে- ৭১*, রাউফ ২৯-৩)
পাকিস্তান ১৪৭ (রিজওয়ান ৫৫, ইফতিকার ৩২, প্রমোদ মদুশন ৩৪-৪, হাসারাঙ্গা ২৭-৩)
শ্রীলঙ্কা ২৩ রানে জয়ী
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পারল না পাকিস্তান (Pakistan)। এশিয়াসেরা শ্রীলঙ্কা (Sri Lanka)। ঋণে জর্জরিত দেশ। পথে নেমেছে মানুষ। পালাবদল হয়েছে সেদেশের রাজনৈতিক মহলে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয় যে দ্বীপরাষ্ট্র থেকে এশিয়া কাপ সরে যায়। মরুশহরে অনুষ্ঠিত হয় মেগা টুর্নামেন্ট। এমন এক দুঃসহ পরিস্থিতিতে শ্রীলঙ্কার মানুষের মুখে হাসি ফোটালেন শানাকারা। ফাইনালে পাকিস্তানকে ২৩ রানে হারিয়ে এশিয়া কাপ (Asia Cup) ঘরে নিয়ে গেল শ্রীলঙ্কা। রাতটা আজ শানাকা, হাসারাঙ্গাদের। অন্যদিকে শুরুটা ভাল করেও পাকিস্তানকে হার স্বীকার করতে হল। মহম্মদ রিজওয়ান এবং ইফতিকার কেবল লড়লেন। বাকিরা দাঁড়াতেই পারলেন না সেভাবে। শ্রীলঙ্কার বোলারদের মধ্যে প্রমোদ মদুশন চারটি এবং হাসারাঙ্গা তিনটি উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের ব্যাটিং মেরুদণ্ড ভেঙে দেন। শেষ বার এশিয়া কাপ শ্রীলঙ্কা জেতে ২০১৪ সালে।
এদিন টস জিতে শ্রীলঙ্কাকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠায় পাকিস্তান। কুশল মেন্ডিসের উইকেট শুরুতেই ছিটকে দেন নাসিম শাহ। শ্রীলঙ্কার রান তখন মাত্র ২। আরেক ওপেনার নিসাঙ্কাও (৮) বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। মাত্র ২৩ রানেই শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনার ফিরে যান ডাগ আউটে। নিসাঙ্কাকে ফেরানোর পরে হ্যারিস রাউফ ফের আঘাত হানেন শ্রীলঙ্কার ইনিংসে। দলীয় রান যখন ৩৬, তখন হ্যারিস রাউফ ফিরিয়ে দেন শ্রীলঙ্কার ব্যাটার গুণতিলককে (১)। ধনঞ্জয় ডি’ সিলভা ২৮ রানে আউট হন। তবে শ্রীলঙ্কাকে লড়াইয়ে ফেরান রাজাপক্ষে ও হাসারাঙ্গা। রাজাপক্ষে শেষপর্যন্ত অপরাজিত থেকে যান ৭১ রানে। মাত্র ৪৫ বলে তিনি এই রান করেন। অন্যদিকে হাসারাঙ্গা ২১ বলে লড়াকু ৩৬ রান করেন। এই দুই ব্যাটার যদি লড়াকু ইনিংস না খেলতেন তাহলে শ্রীলঙ্কার পক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ রান করা সম্ভবই হত না। অধিনায়ক শানাকা (২) ব্যর্থ হন। শেষের দিকে করুণারত্নে অপরাজিত থেকে যান ১৪ রানে। দ্বীপরাষ্ট্রের ব্যাটাররা ২০ ওভারে করে ৬ উইকেটে ১৭০ রান। একসময়ে দ্বীপরাষ্ট্রের পরিস্থিতি এতটাই হতশ্রী হয়েছিল যে অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বড় কোনও টার্গেট দিতে পারবেন না শ্রীলঙ্কার ব্যাটাররা।
[আরও পড়ুন: অস্ট্রেলিয়া সিরিজের আগে আগে বিরাট স্বস্তি ভারতের, ফিটনেস টেস্টে পাশ বুমরাহ-হর্ষল]
জবাবে ব্যাট করতে নেমে বাবর আজম ও ফকর জামান দ্রুত ফিরে যান। অবশ্য প্রথম ওভারেই শ্রীলঙ্কার বোলার মদুশঙ্কা ১১টি বল করেন। প্রথম বলটিই তিনি নো করেন। ফ্রি হিট পায় পাকিস্তান। দ্বিতীয় বল করেন ওয়াইড। তৃতীয় বল ফের ওয়াইড। চতুর্থ বলও ওয়াইড। সেই বল ধরতে পারেননি শ্রীলঙ্কার উইকেট কিপার। বল বাউন্ডারি লাইন অতিক্রম করে। পঞ্চম বলটিও ওয়াইড করেন মদুশঙ্কা। অর্থাৎ একটি বল হওয়ার আগেই পাকিস্তান পেয়ে যায় ৯ রান। ১১টি বলে শেষ হয় প্রথম ওভার।
এবারের এশিয়া কাপে পাক অধিনায়ক ছন্দে ছিলেন না। ফাইনালেও তাঁর ব্যাট বোবা থেকে গেল। ২২ রানে ২ উইকেট হারায় পাকিস্তান। এই অবস্থা থেকে পাকিস্তানকে লড়াইয়ে ফেরান মহম্মদ রিজওয়ান ও ইফতিকার আহমেদ। এশিয়া কাপে ধারাবাহিক ভাবে ভাল খেলছেন পাক উইকেটকিপার। আইসিসি ক্রমতালিকায় সেরা ব্যাটারও রিজওয়ান। তিনি শীর্ষস্থান দখল করায় দ্বিতীয় স্থানে নেমে গিয়েছেন তাঁর অধিনায়ক বাবর আজম। দল যখনই বিপন্ন, তখনই রিজওয়ান অন্য অবতারে ধরা দেন। ফাইনালেও তিনি পাকিস্তানকে টানলেন। তিনি ও ইফতিকার ৭১ রান জোড়েন। আউট হওয়ার আগে ইফতিকার ৩১ বলে ৩২ করে যান। তিনি ফেরার পরে হঠাতই চাপ অনুভব করতে শুরু করে দেয় পাকিস্তান। মহম্মদ নওয়াজ মাত্র ৬ রানে ডাগ আউটে ফেরেন। এমন পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের আস্কিং রেট বাড়তে থাকে। রিজওয়ান মোক্ষম সময়ে ফিরলেন। ৪৯ বলে ৫৫ রান করেন পাক উইকেটকিপার। তিনি ফেরার পরে আরও চাপ অনুভব করতে শুরু করে দেয় পাকিস্তান। প্রবল চাপের মুখে নিজেদের প্রযোগ করতে ব্যর্থ হন খুশদিল শাহ, আসিফ আলিরা। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান থামে ১৪৭ রানে। এশিয়ার ক্রিকেট তাজ উঠল শ্রীলঙ্কার মাথায়।
[আরও পড়ুন: শচীনদের ব্যাটে ফিরল নস্ট্যালজিয়া, প্রাক্তনদের লিগে দক্ষিণ আফ্রিকাকে উড়িয়ে দিল ইন্ডিয়া লেজেন্ডস]