সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শ্রীলঙ্কায় (Sri Lanka) বেনজির অর্থনৈতিক সংকট। পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে এবার ইস্তফা দিল গোটা মন্ত্রিসভা। তবে আপাতত প্রধানমন্ত্রী পদে থাকছেন মাহিন্দা রাজাপক্ষেই (Mahinda Rajapaksa)। কিন্তু দ্বীপরাষ্ট্রের রাজনীতিতে ‘চিনপন্থী’ রাজাপক্ষে যে ক্রমে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন তা স্পষ্ট।
[আরও পড়ুন: ফের মাথাচাড়া দিচ্ছে করোনা! চিনে সংক্রমণের নয়া রেকর্ড, ভয় বাড়াচ্ছে ব্রিটেনও]
দেশজুড়ে চলা প্রবল গণবিক্ষোভের জেরে রবিবার রাতে শ্রীলঙ্কায় প্রধানমন্ত্রী ছাড়া মন্ত্রিসভার বাকি ২৬ জন মন্ত্রী পদত্যাগ করেন। প্রধানমন্ত্রীর ছেলে তথা দেশের যুব এবং ক্রীড়া দপ্তরের মন্ত্রী নামাল রাজাপক্ষের পদত্যাগের পরে রটে যায় প্রধানমন্ত্রী মহিন্দা রাজপক্ষেও ইস্তফা দিয়েছেন। কিন্তু সেই খবরকে গুজব বলে খারিজ করে দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর। রবিবার অর্থাৎ গতকাল বিকেলেই জল্পনা শোনা গিয়েছিল যে, প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের কাছে ইস্তফা জমা দিয়েছেন ছোট ভাই মাহিন্দা রাজাপক্ষে। কিন্তু রাতেই জানা যায়, ঠিক উল্টো ঘটনা ঘটেছে। গোটা মন্ত্রিসভা ইস্তফা দিলেও, প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন রয়েছেন মাহিন্দা রাজাপক্ষে।
বিশ্লেষকদের মতে, রাজাপক্ষেরা চিন ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। নিজের শাসনে বেজিংকে অনৈতিকভাবে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে। অনেকেই মনে করছেন, শক্ত হাতে এলটিটিই বা তামিল বিদ্রোহীদের শেষ করলেও দেশ চালাতে গিয়ে নীতিগত বিভ্রান্তির জেরে বিপাকে পড়েছেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে ও তাঁর ভাই। মুদ্রাস্ফীতির ধাক্কায় শ্রীলঙ্কার বাজারে রীতিমতো দাবানল। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, সেদেশে চাল ও গম বিক্রি হচ্ছে মোটামুটি ২২০ টাকা ও ১৯০ টাকা কেজি দরে। এদিকে চিনি বিকোচ্ছে ২৪০ টাকা কেজিতে। নারকেল তেলের দর ৮৫০ টাকা প্রতি কেজি। একটি ডিমের দাম ৩০ টাকা।
উল্লেখ্য, চিন থেকে ঋণ নিয়ে বিপাকে দেশটি। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ শ্রীলঙ্কা। দেশটির বিদেশি ঋণের পরিমাণ বিপুল আকার ধারণ করেছে। এই ঋণের অর্ধেকেরও বেশি চিন থেকে নেওয়া। গত সাত দশকে সবচেয়ে বড় আর্থিক সংকটের মুখে পড়েছে দ্বীপরাষ্ট্রটি। বিদ্যুতের অভাবে ব্ল্যাক আউট চলছে দেশে। খাবার, ওষুধ অগ্নিমূল্য। এমনকী মিলছে না প্রতিদিনের প্রয়োজনের রান্নার গ্যাস। এই অবস্থায় অনেকেই শ্রীলঙ্কা ছেড়ে ভারতে চলে আসছেন। দেশজুড়ে চলছে বিক্ষোভ। গতকাল, শ্রীলঙ্কার পেরাদানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরের বাইরের রাস্তায় দল বেঁধে হাঁটতে দেখা গিয়েছে পড়ুয়াদের। যে করেই হোক তাঁদের রুখতে জলকামান, কাঁদানে গ্যাস, লাঠির ব্যবহার করেছে পুলিশ। এমনকী আকাশে গুলি ছুঁড়েও ভয় দেখানো হয়। কিন্তু সেসব অগ্রাহ্য করেই আন্দোলন চলছে।