সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের জেরে অগ্নিগর্ভ শ্রীলঙ্কা। জনরোষ এড়াতে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। আশ্রয় নিয়েছেন মালদ্বীপে। সেখান থেকে আজ, বৃহস্পতিবার সিঙ্গাপুরে আশ্রয় নেওয়ার কথা রয়েছে তাঁর। আর রাজাপক্ষের পলায়ন ও মালদ্বীপে আশ্রয় গ্রহণের এই পর্ব নাকি হয়েছে ভারতের ইশারায়! রাজনৈতিক মহলে এই জল্পনা ছড়াতেই কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়ে নয়াদিল্লি সাফ জানিয়েছে, সমস্ত অভিযোগ ‘মিথ্যা’।
গত কয়েকমাস ধরেই আর্থিক বিপর্যয়ের জেরে ভেঙে পড়েছে শ্রীলঙ্কার (Sri Lanka) শাসন ব্যবস্থা। খাবার, ওষুধ ও জ্বালানির জন্য হাহাকার করছে জনতা। গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ দখল করে নেয় উন্মত্ত জনতা। জনরোষ এড়াতে মঙ্গলবার রাতেই দেশ ছেড়ে মালদ্বীপে পালিয়ে যান শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহে অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেও বিক্ষোভকারীদের একাংশের হুমকির শিকার হয়েছেন তিনিও। এই পরিস্থিতিতে আগামী ২০ জুলাই নয়া শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে বলে বুধবার জানিয়েছেন সে দেশের পার্লামেন্টের স্পিকার য়ুপা অবেবর্ধনে।
[আরও পড়ুন: ব্যাভিচারের অভিযোগে ভয়াবহ শাস্তি, তরুণীকে পাথর ছুঁড়ে হত্যার রায় সুদানের আদালতের]
দ্বীপরাষ্ট্রটিতে চলা এই ডামাডোলের মধ্যে খবর ছড়ায় যে প্রেসিডেন্ট রাজপক্ষেকে মালদ্বীপে পালাতে মদত দিয়েছে ভারত। মালের উপর প্রভাব খাটিয়ে সেদেশে রাজপক্ষেকে জায়গা করে দিয়েছে নয়াদিল্লি। এদিকে, এই সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে ভারতের বিদেশমন্ত্রক ও কলম্বোর দূতাবাস। এক বিবৃতি জারি করে শ্রীলঙ্কায় ভারতের হাই কমিশন জানিয়েছে, “এই সমস্ত খবর ভিত্তিহীন। আমরা ফের এটা স্পষ্ট করে দিতে চাই যে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে উন্নয়নের উদ্দেশে শ্রীলঙ্কার জনতা যে পদক্ষেপ করবে ভারত তা সমর্থন করবে।”
বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, মালদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট তথা স্পিকার মহম্মদ নাশিদ ‘ভারতপন্থী’ বলে পরিচিত। তিনিই রাজপক্ষের বিমানকে মালদ্বীপে অবতরণের ব্যবস্থা করে দেন। ফলে এক্ষেত্রে ভারতের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। কিন্তু এটা ভূলে গেলে চলবে না, মালদ্বীপে রাজনৈতিক ডামাডোল চলাকালীন শ্রীলঙ্কাউ আশ্রয় নিয়ছিলেন নাশিদ। ফলে রাজাপক্ষেদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক যথেষ্ট মজবুত।
উল্লেখ্য, গতকাল রনিল বিক্রমসিংহেকে কার্যনির্বাহী প্রেসিডেন্ট হিসেবে সমস্ত দায়িত্ব হস্তান্তর করেছেন গোতাবায়া। কিন্তু, তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও পদত্যাগ করেননি। এদিকে, রাজধানী কলম্বো-সহ পশ্চিম শ্রীলঙ্কায় অনির্দিষ্ট কালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই কলম্বোর রাজপথে হাজার হাজার মানুষ নেমে পড়েছেন। তাঁদের দাবি, প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষেকে দেশে ফিরিয়ে এনে সাজা দিতে হবে। বিক্ষোভকারীদের সামলাতে কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়েছে পুলিশ। জলকামানও ব্যবহার করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের তাও দমানো যাচ্ছে না। তাদের প্রধানমন্ত্রী বাসভবনের সামনে জড়ো হয়ে জুতো ছুঁড়তে দেখা গিয়েছে।