রাহুল রায়: কোনও রাজনৈতিক সুপারিশ গ্রহণ করা হবে না। সম্পূর্ণ মেধা ও যোগ্যতার নিরিখে চাকরি হবে। তার জন্য পর্ষদ বা স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) উপরই ভরসা রাখছেন বলে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর আগে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)। সেই সঙ্গে আন্দোলনকারীদের তাঁর সাফ বার্তা, রাজ্য সরকার চায় শুধু যোগ্যতার নিরিখে চাকরি হোক। তাই আন্দোলনকারীদের ইন্টারভিউয়ে বসে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করার বার্তা দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
নিয়োগের দাবিতে পরপর দু’রাত আন্দোলনরত প্রাথমিক শিক্ষক পদে চাকরিপ্রার্থীরা। যার বিরোধিতা করে মামলাও দায়ের হয়েছে কলকাতা হাই কোর্টে। এবার সেই আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীদের উদ্দেশেই সাংবাদিক বৈঠকে মুখ খুললেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে শিক্ষা মন্ত্রী আন্দোলনকারীদের চাকরিপ্রার্থীদের উদ্দেশে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী চান সবার যোগ্যতার নিরিখে চাকরি হোক। এখানে চাকরি দেয় পর্ষদ। একজন অসুস্থ হলেই কি তাঁকে চাকরি দেওয়া যায়! যোগ্য কিনা তা যাচাইয়ের জন্য ইন্টারভিউয়ে বসুন।”
[আরও পড়ুন: ভাল আচরণের জন্য মুক্তি পাওয়া বিলকিসের ধর্ষকের বিরুদ্ধে উঠেছিল শ্লীলতাহানির অভিযোগও! প্রকাশ্যে তথ্য]
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, “একদল বিরোধী চান না, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) নিয়োগ করুন। চান রাজ্যে অচলাবস্থা তৈরি হোক। তাই নিয়োগ প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করার জন্য এটা করা হয়েছে। তবে আমরা চাইছি, স্বচ্ছভাবে, নৈতিকভাবে নিয়োগ করতে। আমার কাছে নির্দেশ আছে কোনও একটি সুপারিশও গ্রহণ করা হবে না। আমারা এখানে পর্ষদের উপর বা স্কুল সার্ভিস কমিশনের উপর ভরসা রাখছি।” জানান, একটা অচলাবস্থা, নানারকম বিতর্ক, গোলমাল সেটা ছাড়িয়ে আমাদের পর্ষদ সভাপতি যখন টেট ঘোষণা করেছেন। স্কুল সার্ভিস কমিশনে শারীরশিক্ষা, কর্মশিক্ষার ইন্টারভিউ প্যানেল প্রকাশিত হতে চলেছে। টেট পরীক্ষার দিন ঘোষণা হয়েছে। তাই রাস্তায় বসে ভুল আন্দোলনের পথে না গিয়ে ইন্টারভিউয়ে বসার পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রী।
[আরও পড়ুন: নেপাল, চিনের মতো কাশ্মীরও পৃথক রাষ্ট্র! বিহারের প্রশ্নপত্র ঘিরে তুঙ্গে বিতর্ক]
অন্যদিকে, এদিনই শিক্ষামন্ত্রীর কথার প্রতিধ্বনি শোনা গেল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতির মুখে। সাংবাদিক বৈঠকে পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল (Gautam Paul) বলেন, “বোর্ড কিন্তু পরিচ্ছন্ন, স্বচ্ছ্ব উপায়ে নিয়োগ করতে চায়।” তাঁর বিরুদ্ধে সমালোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ব্যক্তিগত রাজনৈতিক আনুগত্য থাকতে পারে, কিন্তু যখন আমি সরকারি অফিসের পদে বসে রয়েছি, তখন আমার রাজনৈতিক পরিচয় প্রাধান্য পায় না। আমাকে তখন নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে হয়।আমাকে বলা হচ্ছে, কোনও একটি রাজনৈতিক দলের। আমার ব্যক্তিগত আনুগত্য থাকতে পারে, কিন্তু তা বলে আমাকে এভাবে অপবাদ দেওয়া যেতে পারে না।” সমালোচকদের উদ্দেশ্যে তাঁর চ্যালেঞ্জ, “যাঁরা সমালোচনা করছেন আমি এখানে বসে, আমার কর্মকাণ্ডের মধ্যে যদি কোনও রাজনৈতিক আনুগত্যের ছাপ বা নিদর্শন দেখাতে পারেন, আমি ওইদিনই ইস্তফা দিয়ে চলে যাব।”