গোবিন্দ রায়: পরেশ অধিকারী কন্যা অঙ্কিতার চাকরি পাবেন ববিতা সরকারই। ৩০ জুনের মধ্যে নিয়োগপত্র দিতে হবে ববিতাকে, পর্ষদকে নির্দেশ দিল হাই কোর্ট। পরেশ কন্যা অঙ্কিতা অধিকারী প্রথম দফায় যে টাকা ফেরত দিয়েছেন, তা ১০ দিনের মধ্যে দেওয়া হবে ববিতাকে। এই ঘটনাটিকে লজ্জাজনক বলে মন্তব্য করেছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
২০১৬ সালের ৪ ডিসেম্বর এসএসসি পরীক্ষায় বসেছিলেন ববিতা সরকার (Babita Sarkar)। ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর প্রকাশিত হয়েছিল মেধা তালিকা। সেখানে ওয়েটিং লিস্টে নাম ছিল তাঁর। সাধারণত প্যানেল লিস্টে থাকা কর্মপ্রার্থীদের চাকরি হওয়ার পর ওয়েটিং লিস্টে থাকা চাকরি প্রার্থীদের পালা আসে। তাই আশায় বুক বেঁধে বসেছিলেন শিলিগুড়ির কোর্ট মোড়ের বাসিন্দা ববিতা সরকার। কিন্তু সেই চাকরি আর জোটেনি। তারই মধ্যে তালিকা প্রকাশের দাবিতে আন্দোলনে নামেন কর্মপ্রার্থীরা। দেখা যায় ববিতা সরকারের নাম রয়েছে ২০ নম্বরে। কিন্তু দ্বিতীয় কাউন্সেলিংয়ের পর তিনি জানতে পারেন তাঁর নাম চলে গিয়েছে ২১ নম্বরে। অদৃশ্য হাতের ম্যাজিকে এক নম্বরে পৌঁছে গিয়েছেন পরেশচন্দ্র অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতা অধিকারীর নাম।
[আরও পড়ুন:সরানো হল কল্যাণময়কে, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সভাপতির দায়িত্ব পাচ্ছেন রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় ]
এরপরই ন্যায় বিচারের দাবিতে আদালতের দ্বারস্থ হন ববিতা সরকার। গোটা বিষয় খতিয়ে দেখে অঙ্কিতার চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। জানানো হয়, অঙ্কিতা যেন শিক্ষিকা হিসেবে নিজের পরিচয় না দেন। তারপরেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, মন্ত্রীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী স্কুলে ঢুকবে না। অঙ্কিতা অধিকারী (Ankita Adhikari) ইন্দিরা গার্লস হাইস্কুলের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সহকারী শিক্ষিকা। সেই স্কুলে ঢুকতে পারবেন না অঙ্কিতার পরিবারের সদস্য, পরিজনরাও। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ, ৪৩ মাস স্কুলে চাকরি করা কালীন যে বেতন পেয়েছেন, তার সমস্ত অর্থ হাইকোর্ট রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে। সেই মতোই ৭ জুন কিস্তির টাকা ফেরতও দিয়েছেন পরেশ কন্যা।
শুক্রবার বিচারপতি জানিয়েছেন, অঙ্কিতা অধিকারীর চাকরি দেওয়া হবে ববিতাকেই। জানা গিয়েছে, ইন্দিরা গার্লস হাইস্কুল অর্থাৎ যেখানে অঙ্কিতা চাকরি করতেন সেখানেই নিয়োগ করা হবে ববিতাকে। অঙ্কিতার ফেরানো সমস্ত অর্থ পাবেন ববিতাই। পাশাপাশি চাকরিতে যোগ দেওয়ার দিন থেকে যা যা সুযোগ সুবিধা পেয়েছেন অঙ্কিতা, তা দেওয়া হবে মামলাকারী ববিতাকে। আদালতের এই সিদ্ধান্তে খুশি ববিতা। এই অর্থ সমাজের কাজে ব্যবহার করবেন বলেই জানিয়েছেন তিনি।