সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: বর্ষায় প্রকৃতির ভিন্ন রূপের দেখা মেলে পুরুলিয়ার মাঠাবুরু পাহাড়ে। তাই আনলক ওয়ানে পর্যটকদের টানতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে এই পর্যটক আবাস। বনদপ্তরের উদ্যোগে ঢেলে সাজানো হয় এখানের ‘গাছবাড়ি’-কে। রবিবার নবরূপে সাজানো গাছবাড়িটির দ্বার উন্মুক্ত করেন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দোপাধ্যায়।
বর্ষায় ঘন কালো মেঘ পুরুলিয়ার মাঠাবুরু (Mathaburu) পাহাড়ের গা ঘেষে ভেসে বেড়ায়। আর সেই পাহাড়ের কোলেই শাল-শিমুল-পলাশের জঙ্গলকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে পর্যটন কেন্দ্র। তবে এখানে ঘুরতে গেলে পর্যটকদের থাকতে হবে ‘গাছবাড়ি’তে। অর্থাৎ, শাল গাছকে ভর করে এক একটা পর্যটক আবাস। সেগুলিরই পোশাকি নাম ‘গাছবাড়ি’ বা ‘ট্রি হাউস’ (Tree House)। লকডাউনের জেরে দীর্ঘদিন এই পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ থাকার পর আনলক ওয়ানে তা খুলে দেওয়া হয়। পর্যটকদের টানতে বনদপ্তরের উদ্যোগে নতুন রূপে সাজানো হয় এই ‘গাছবাড়ি”টিকে। নব রূপে সেজে ওঠা সেই গাছবাড়িটির রবিবার দরজা খুলে দেন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “প্রকৃতি পর্যটনকে তুলে ধরতেই আমাদের এই উদ্যোগ। ‘গাছবাড়ি’-কে আমরা নতুন রূপে চালু করলাম।” প্রকৃতির কোলে পর্যটকদের মাটির গন্ধ মাখা হস্তশিল্পকলার সম্ভার তুলে দিতে এই বনাঞ্চলেই খোলা হয়েছে ছৌ মুখোশের বিপনী। এই বিক্রয় কেন্দ্র থেকেই মিলবে রঙবাহারি ছৌ মুখোশ। বনদপ্তরের যৌথ বন পরিচালন সমিতি এই বিপণীগুলির দায়িত্বে রয়েছে।
[আরও পড়ুন:সস্তায় ঘুরে আসুন পাহাড়ে, পর্যটকদের জন্য নয়া বন্দোবস্ত হোটেল মালিকদের]
করোনা আবহে পুরুলিয়ার (Purulia) পর্যটন শিল্পকে চাঙ্গা করতে প্রকৃতির সঙ্গে মাঠা-র ইতিহাসকেও তুলে ধরার উদ্যোগ নিয়েছে বনদপ্তর। যাঁর নামে মাঠাবুরু পাহাড় বা মাঠা জনপদ, সেই জমিদার তথা ‘আদিবাসী রাজা’ মঠা সিং-র কাহিনীকে ডিসপ্লে বোর্ডে সামনে আনা হয়েছে। আজ রাজ্যের পর্বতারোহন মানচিত্রে উজ্জ্বল নাম এই মাঠাফি শীতে এখানে প্রায় পঞ্চাশ হাজার পর্বতারোহী পা রাখেন। মাঠা পাহাড় ছাড়াও প্রায় ৪,২৬০ হেক্টর বনভূমি জুড়ে পাহাড় কোলে রয়েছে ক্যানভাসে আঁকা ছবির মতই পারডি জলাধার। সেখানে হাজার হাজার পরিযায়ী পাখি হাজির হয় ভরা বর্ষায়। তাদের ডানা ঝাপটানোর শব্দে তখন মুখর হয়ে ওঠে এই অঞ্চল। কাছেই রয়েছে লম্বা টানা পাখি পাহাড়। সেখানেও ঘুরতে যান পর্যটকরা।
[আরও পড়ুন:ভক্তদের জন্য সুখবর, করোনাতঙ্ক কাটিয়ে ১ জুলাই শুরু হচ্ছে চারধাম যাত্রা]
তবে মাঠা রেঞ্জের ক্যাম্পাসে এই ‘গাছবাড়ি’ ছাড়াও আরও রয়েছে একটি অতিথি আবাস। সেই আবাস বুকিং করতে পুরুলিয়া বিভাগের ডিএফও-র কাছে আবেদন করতে হয়। গাছবাড়ির বুকিং মিলবে ওয়েস্ট বেঙ্গল ফরেস্ট ডেভেলপমেন্ট এজেন্সীর ওয়েবসাইট www.wbsfda.gov.in ও www.wbsfda.org থেকে। এখন শুধু সশরীরে পর্যটকদের উপস্থিতির অপেক্ষা। তারপরেই জমে উঠবে এই পর্যটন কেন্দ্র।
The post বর্ষায় পর্যটকদের কাছে টানতে প্রস্তুত পুরুলিয়ার ‘গাছবাড়ি’, জানতে পারবেন পুরনো ইতিহাসও appeared first on Sangbad Pratidin.