অভিরূপ দাস: বাড়ছে গলগণ্ড-র মতো অসুখ। শিশুর মস্তিষ্ক গঠনে দেখা যাচ্ছে সমস্যা। এর সবকিছুরই নেপথ্যে খাদ্যে আয়োডিনের ঘাটতি। বঙ্গের কোন কোন জেলায় সঠিক আয়োডিন যুক্ত নুন বিক্রি হচ্ছে না? জানতে তল্লাশিতে নেমেছিল স্বাস্থ্য দপ্তর। তাতে লাভ না হওয়ায় এবার কড়া পদক্ষেপ করছে রাজ্য।
এই প্রোগ্রামের নাম ন্যাশনাল আয়োডিন ডেফিসিয়েন্সি ডিসঅর্ডার কন্ট্রোল। ২০২১ এর এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর অবধি চলা সে অনুসন্ধানে একাধিক জেলা নুনের নমুনা জমা দেয়নি। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের আয়োডিন ডেফিসিয়েন্সি ডিসঅর্ডার মনিটরিং ল্যাবরেটরি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, একাধিক জেলা নুনের নমুনা দিলেও অনেক জেলা বিক্রেতাদের কাছ থেকে নমুনা পাঠাতে পারেননি। তাই জানাও যায়নি এখনও কোথায় কোথায় ভেজাল নুন বিক্রি হচ্ছে। এবার তাই জরুরী ভিত্তিতে নোটিস জারি করল পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য দপ্তর। এই নোটিস পাঠানো হয়েছে প্রতিটি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে।
[আরও পড়ুন: ছেলের বিয়ের তত্ত্বে কন্যাশ্রী থেকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, নজর কাড়লেন তৃণমূল নেত্রী]
কী রয়েছে সেই নোটিসে? স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, ন্যাশনাল আয়োডিন ডেফিসিয়েন্সি ডিসঅর্ডার কন্ট্রোল প্রোগ্রামে যে ধরণের তৎপরতা আশা করা হয়েছিল তাতে খামতি ধরা পরেছে। প্রতিটি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে নির্দেশ, প্রতি মাসে নূন্যতম ২০ জন বিক্রেতার কাছ থেকে নুনের নমুনা পাঠাতে হবে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ল্যাবরেটরিতে। রাজ্যের জনস্বাস্থ্য আধিকারিক ডা. অনির্বাণ দলুই জানিয়েছেন, মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের স্বাভাবিক বিকাশের জন্য আয়োডিন অত্যন্ত প্রয়োজন। থাইরয়েড হরমোনের একটি অপরিহার্য উপাদান এই আয়োডিন। এর আগে যে সমস্ত নুন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল, ল্যানরেটরিতে পরীক্ষা করে দেখা যায় তার মধ্যে ২৫ শতাংশ ভেজাল।অর্থাৎ নুনে সঠিক পরিমাণে আয়োডিন নেই।
কীভাবে বোঝা যায় আয়োডিনের মাত্রা কম? ডা. অনির্বাণ দলুইয়ের বক্তব্য, দোকানের নুনে যদি পিপিএম(পার্টস পার মিলিয়ন) ১৫ এর নীচে থাকে তবে বুঝতে হবে আয়োডিনের মাত্রা সঠিক নেই। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. নিশান্তদেব ঘটক জানিয়েছেন, সাধারণত সস্তা অথবা খোলা নুনে এমন সম্ভাবনা দেখা যায়। ডা. ঘটকের কথায়, রান্নায় ব্যবহৃত নুনে আয়োডিনের মাত্রা কম থাকলে, গলগণ্ড, কমবুদ্ধি, চোখের সমস্যার শিকার হন বাসিন্দারা।