ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় : পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে কোনও তথ্য দেয়নি বলে রবিবার রাজ্যকে বিঁধেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সিতারামন। সেই বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করে পাল্টা তথ্য দিয়ে সোমবার রাজ্য জানিয়ে দিল উনি যা বলছেন মিথ্যা বলছেন। হয় তথ্য জানেন না, বা কেউ ওনাকে বলে দেয়নি।
পরিযায়ী শ্রমিকদের কথা মাথায় রেখে গরিব কল্যাণ যোজনা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাতে সব রাজ্য থেকে তথ্য নেওয়া হচ্ছে। প্রথমে এ রাজ্যের নাম না থাকায় তা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিল সব রাজনৈতিক দল। তার মধ্যেই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বলে দেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার এ নিয়ে কোনও তথ্য দেয়নি। যা সর্বৈব মিথ্যা বলে এদিন সরকারের তরফে তথ্য তুলে ধরেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র।
পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়, কেন্দ্রীয় সরকার দু’বার তথ্য চেয়েছিল। ২৩ জুন চাওয়া হয় জেলাভিত্তিক। দুপুরে চিঠি আসে। সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে জবাব দেওয়া হয়। আবার ২৫ জুন বলা হয় ব্লকভিত্তিক পাঠাতে। সব তথ্য তৈরি ছিল। সঙ্গে সঙ্গে পাঠানো হয়। এর পরও ২৮ তারিখ কীভাবে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী দাবি করলেন যে কোনও কথ্য দেওয়া হয়নি? অমিতবাবুর প্রশ্ন, “এত বড় মিথ্যা উনি বললেন কীভাবে? উনি দেশের অর্থমন্ত্রী। হয় উনি তথ্য জানেন না। বা ওঁকে কেউ বলে দেয়নি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকও ওঁকে খবর দিল না?” ভুল স্বীকার করে নির্মলাকে ক্ষমা চাইতে বলেছেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, “সবটাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।” পশ্চিমবঙ্গ সরকার সম্পর্কে প্রকাশ্য রাজনৈতিক সভায় ভুল তথ্য দেওয়ার অভিযোগ তুলে এর পরই সরব হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে। নবান্নে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এ নিয়ে তাঁর ক্ষোভ উগরে বলেন, “দিল্লি থেকে রোজ একতরফা মিথ্যা বলা হচ্ছে। রাজ্যকে দোষ দেওয়া হচ্ছে। অসত্য তথ্য দেওয়া হচ্ছে। মানুষের জন্য একটু সময় দিয়ে ভাবা উচিত।”
[আরও পড়ুন : নেশার টাকায় টান, অপহরণের নাটক করে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টায় গ্রেপ্তার শিক্ষক]
কতজন পরিযায়ী শ্রমিক বাংলায় ফিরেছেন তার তথ্য ইতিমধ্যে তৈরি হয়ে গিয়েছে। রাজ্যের অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন স্কিল ম্যাপিং পদ্ধতিতে হিসাব করে দেখা গিয়েছে ১৪ লক্ষ শ্রমিক এখনও পর্যন্ত এসেছেন। তাঁদের মধ্যে সাড়ে চার লক্ষ শ্রমিককে ১০০ দিনের কাজে নেওয়া হয়েছে। বাকিদের অন্যত্র সুযোগ করে দেওয়ার কাজ চলছে। অর্থমন্ত্রীর কথায়, “আমাদের ডেটাব্যাঙ্ক তৈরি। পরিযায়ী শ্রমিকদের সম্পর্কে সব তথ্য আমরা প্রথম থেকেই রাখছিলাম।” এর পরই নির্মলার অভিযোগকে মিথ্যা দাবি করে গরিব কল্যাণ যোজনার জন্য শ্রমিকদের তথ্য চেয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের চিঠি–পাল্টা চিঠির পর্ব সামনে আনেন তিনি। নির্মলাকে একেবারে চ্যালেঞ্জ করে এর পরই তিনি বলেন, “আমার কাছে সব তথ্য আছে। প্রধানমন্ত্রীকে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বলছেন মেপে কথা বলতে। আর উনি দেশের অর্থমন্ত্রী। ওঁরও তো মেপে কথা বলা উচিত।”
[আরও পড়ুন : ভাঙল সব অতীত রেকর্ড, রাজ্যে ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত ছ’শোরও বেশি মানুষ]
The post ‘দু’বার দেওয়া হয় পরিযায়ী তথ্য, না জেনে মিথ্যা বলছেন নির্মলা’, বিরোধিতা রাজ্যের appeared first on Sangbad Pratidin.