সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘বেআইনি রামমন্দিরে’র দ্বাররক্ষী মোদি-যোগী! গল্পের মতো শোনালেও বাস্তবে ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাটে। জানা গিয়েছে, নিজের বাড়ির ছাদে তথাকথিত বেআইনি নির্মাণ বাঁচাতে প্রভু রামের একটি মন্দির বানিয়ে ফেলেছেন জনৈক ব্যবসায়ী। দ্বাররক্ষী হিসেবে বসিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের মূর্তি। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তুমুল শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত লোহা ব্যবসায়ী মোহনলাল গুপ্ত আদতে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। গত বছর গুজরাটের অঙ্কলেশ্বরের ভারুচে একটি বাড়ি কেনেন। অভিযোগ, তিনি ওই বহুতলে আরেকটি বাড়তি ফ্লোর তৈরি করেছেন। সেখানে অবৈধভাবে একটি গোডাউন তৈরি করেন। চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধনের আবহে সেই ফ্লোরের ছাদেই বেআইনিভাবে একটি মন্দিরও নির্মাণ করেন। যেখানে রয়েছে রাম, সীতা ও লক্ষ্মণের মূর্তি। এবং মন্দিরের সামনেই রাখা রয়েছে মোদি ও যোগীর মূর্তি। যা দেখলে মনে হবে বেআইনি এই মন্দিরের দ্বাররক্ষা করতেই ওই দুটি মূর্তি বসানো হয়েছে।
[আরও পড়ুন: আয়কর, স্বাস্থ্যবিমায় ছাড়! বাজেটে আজ ভোটবাদ্যি]
এই মন্দির নির্মাণের পরই অঙ্কলেশ্বরের গদখোল গ্রামের বাসিন্দা মনসুখ রাখসিয়া ভারুচ-অঙ্কলেশ্বর নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানান। ওই ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। গত মঙ্গলবার ঋদ্ধি সিদ্ধি নামে ওই আবাসন পরিদর্শন যান প্রশাসনের আধিকারিকেরা। তাঁদের দাবি, অতিরিক্ত ফ্লোর তৈরির জন্য মোহনলাল কোনও অনুমতি নেননি। সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখে আগামী সাতদিনের মধ্যে মোহনলালকে প্রয়োজনীয় নথি জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এবিষয়ে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী মোহনলালের বক্তব্য, “গত বছর জিতেন্দ্র ওঝা নামের এক ব্যক্তির থেকে আমি বাড়িটি কিনেছিলাম। ওই নির্মাণের জন্য ২০১২ সালেই গদখোল গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে অনুমতি নেওয়া হয়। যারা অভিযোগ জানাচ্ছে তারা ঈর্ষান্বিত। নির্মাণটি ভেঙে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছে। এমনকী আমার কাছে টাকারও দাবি জানিয়েছে। তারা আমাদের বাড়ি থেকে অনেকটা দূরেও থাকে।”
মোহনলালের আরও দাবি, “বারবার আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে ভয় দেখানো হচ্ছে। আমি মন্দির নির্মাণ করে সেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের মূর্তি রেখেছি। আমি মনে করি এবিষয়টি ওদের সহ্য হচ্ছে না। আমি প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি আমাকে যেন এই বিপদ থেকে রক্ষা করা হয়।” অন্যদিকে, অভিযোগকারী রাখসিয়া বলেন, “বেআইনি মন্দির বাঁচাতে খুব বুদ্ধি করে মোহনলাল ওই দুটি মূর্তি সেখানে রেখেছেন। গ্রামে অবৈধ নির্মাণ নিয়ে প্রশাসন যথেষ্ট পদক্ষেপ করে না। ভারুচের জেলাশাসক ও গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভুপেন্দ্র পাটিলের কাছে অনুরোধ করব এবিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।”