সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উত্তেজনার পারদ চড়িয়ে আমেরিকাকে ফের হুমকি দিল চিন (China)। কমিউনিস্ট দেশটির বক্তব্য, ভারত ও চিনের মধ্যে সীমান্ত সংক্রান্ত সমস্যায় কোনও তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ কাম্য নয়।
[আরও পড়ুন: ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ে ট্রাম্প সমর্থকদের হামলা, শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের আবেদন মোদির]
সম্প্রতি ভারত-চিন সীমান্ত বিবাদ নিয়ে বক্তব্য রাখেন ভারত থেকে বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূত কেনেথ জাস্টার। নয়াদিল্লি ও ওয়াশিংটনের মধ্যে সামরিক সম্পর্কের বিষয়ে তাঁর বক্তব্য, ভারতের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আমেরিকার মতো অবদান অন্য কোনও দেশের নেই। লাদাখে ভারতের সঙ্গে সামরিক ও কৌশলগত মঞ্চে সহযোগিতা করছে ওয়াশিংটন। বেজিংকে বিদ্ধ করে তিনি খোলাখুলি বলেন, “সীমান্তে চিনের আগ্রাসী গতিবিধি প্রতিহত করতে মার্কিন সহযোগিতা ভারতের জন্য অত্যন্ত জরুরি।” প্রসঙ্গত, চলতি মাসেই ভারতে নিজের কার্যকাল শেষে দেশে ফিরে যাবেন কেনেথ। কিন্তু বিদায়বেলায় ফের চিনের উপর চাপ বাড়ালেন তিনি। তাঁর বক্তব্যের প্রেক্ষিতেই বুধবার পালটা তোপ দাগেন ভারতে নিযুক্ত চিনা রাষ্ট্রদূত সান ওয়েইডং। তিনি অভিযোগ করেন, চিনকে নিশানা করতে ভারতকে হাতিয়ার করছে আমেরিকা। এই মর্মে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে চিনা প্রতিনিধি বলেন, “সম্প্রতি চিনের বিরুদ্ধে আমেরিকার বেশ কিছু অবাঞ্ছিত মন্তব্য আমাদের কানে এসেছে। আমরা জানাতে চাই, ভারত-চিন সীমা বিবাদে কোনও তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ মেনে নেওয়া হবে না। আমরা আশা করছি, অন্য দেশের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক কোন বিশেষ দেশকে (চিন) নিশানায় নেবে না।”
পূর্ব লাদাখে লালফৌজের আগ্রাসন নিয়ে বরাবর ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে আমেরিকা। দুই দেশের মধ্যে সামরিক সহযোগিতা এখন আর গোপন কোনও খবর নয়। আর এতেই রীতিমতো ক্ষিপ্ত চিন। কয়েকদিন আগেই শীর্ষ মার্কিন সেনকর্তা জেনারেল কেনেথ উইলসবাখ জানিয়েছিলেন যে লালফৌজের উপর নজরদারিতে ভারতীয় ফৌজকে মদত দিচ্ছে আমেরিকা। গত অক্টোবর মাসে ভারত-আমেরিকা হাই-প্রোফাইল ২+২ বৈঠকে চিন বিরোধিতাকে সুসংহত চেহারা দিতে এবং কৌশলগত সম্পর্ককে আলাদা উচ্চতায় নিয়ে যেতে ঐতিহাসিক Basic Exchange and Cooperation Agreement for Geo-Spatial Cooperation (BECA) চুক্তি স্বাক্ষর করে দুই দেশ। এটি স্বাক্ষরিত হওয়ার ফলে, ভারতীয় ও মার্কিন ফৌজের মধ্যে তথ্য আদানপ্রদান আরও মজবুত হবে। ভারতের জন্য যেটা সবচেয়ে জরুরি তা হল, চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হওয়ায় মার্কিন মিলিটারি স্যাটেলাইট থেকে লাইভ ছবি পাবে ভারতীয় সেনা। লাদাখে সংঘর্ষের আবহে চিনা ফৌজের গতিবিধির উপর নজর রাখতে এটা অত্যন্ত প্রভাবশালী পদ্ধতি হবে। এছাড়া, অক্টোবরেই QUAD মন্ত্রীগোষ্ঠীর বৈঠকে মিলিত হয় ভারত, জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও আমেরিকা। সব মিলিয়ে চিনকে চাপে রাখতে তৎপর নয়াদিল্লি ও ওয়াশিংটন।