নন্দন দত্ত, সিউড়ি: মাদক পাচারের জন্য তৈরি হয়েছিল বিশেষ ধরনের গাড়ি। যার ভিতরে থরে থরে ঠাসা মাদক। এমনই দুটি চারচাকা গাড়িতে মাদক-সহ চারজনকে গ্রেপ্তার করল রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স। শুক্রবার বোলপুরের কোপাই সেতুর কাছে মোষঢাল গ্রামের কাছে এক মহিলা সমেত চারজনকে গ্রেপ্তার করে।
শান্তিনিকেতন থানায় তল্লাশি চালাতে গিয়ে কয়েক কুইন্টাল গাঁজা উদ্ধার হয়েছে গাড়ির ভিতর থেকে। গ্রেপ্তার হওয়া চার মাদক কারবারি উত্তরবঙ্গের দাগি মাদক পাচারকারী হিসাবে পরিচিত। এসটিএফের সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু জানান, “আমরা নির্দিষ্ট সূত্রের খবর অনুযায়ী ওই গাড়ি দুটির উপর নজরদারি চালাচ্ছিলাম। সাদা পোশাকে আমাদের বিশেষ বাহিনী বোলপুরে গিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে।”
[আরও পড়ুন: শিশিরকে ‘রাজনৈতিক গুরু’ সম্বোধন, কাঁথির পুরপ্রধানকে শোকজ তৃণমূলের]
দুটি স্যুইফ্ট ডিজায়ার চারচাকা গাড়ি শুধু মাদক পাচারের জন্যই তৈরি করা হয়েছিল। বোলপুরে পৌষ মেলার ভিড়। সেই ভিড়ের মাঝে গাড়ি ভর্তি মাদক পাচারের এটাই ছিল আদর্শ সময়। গাড়ির তলায় পিছনের ডিকি থেকে ইঞ্জিন পর্যন্ত বিশেষভাবে একটা ট্রাঙ্ক করা হয়েছে। গাড়ির পিছনের লাইট, সামনের লাইটের পিছনে একটি করে সুড়ঙ্গ করা। যার ভিতর দিয়ে কেজি কেজি গাঁজা ভরা ছিল। কোপাই এলাকা দিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই ওই গাড়ি দুটিকে যাতায়ত করতে দেখছিল বাসিন্দারা। গাড়ির ভিতরে কোচবিহারের বাসিন্দা মহিলা ও পুরুষ। মোষঢাল এলাকায় পাচারকারীদের আত্মীয়ের লজ ও হোটেলের ব্যবসা আছে। সেই লজ শহরের বাইরে। তার সঙ্গে মেলার ভিড় সামাল দিতে ব্যস্ত পুলিশ। এই সুযোগে বোলপুর এলাকায় অবাধে পাচার চলছিল।
অন্যদিকে মেলার মাঝে আউল বাউল সমাবেশে অবাধে মাদক বিক্রির সুযোগ। গতকাল কোপাই সেতুতে সাদা পোশাকের এসটিএফের অফিসাররা রাস্তার মাঝে আড়াআড়ি করে গাড়ি দাঁড় করিয়ে গাড়ি দুটি ধরে। শান্তিনিকেতন থানায় তাদের নিয়ে যাওয়া হয়। থানায় গিয়ে মাদকের হদিশ করতে গিয়ে গাড়ি খুলতেই চোখ ছানাবড়া হয়ে যায় পুলিশের। শুধুমাত্র পাচারের জন্যই গাড়ি দুটি বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছিল। এসটিএফ সুপার জানান, মাদককাণ্ডে ধৃতরা হল নিউ জলপাইগুড়ির ভক্তিনগরের বাসিন্দা তথাগত রায় এবং সুব্রত দাস, উত্তর ২৪ পরগনার ত্রিদিপ চৌধুরী ও শিপ্রা বণিক। এই পাচারচক্রে আর কারা যুক্ত, তার তল্লাশি চলছে। আজ শনিবার তাদের মাদক চোরাচালানের অভিযোগে সিউড়ি আদালতে তোলা হবে।