অর্ণব আইচ এবং কলহার মুখোপাধ্যায়: সিমবক্স (Sim Box Case) কাণ্ডের জাল ছড়িয়েছে সীমান্ত লাগোয়া জেলার প্রান্তিক এলাকাতেও। সেই জালের হদিশ পেতেই এবার নদিয়ার নাকাশিপাড়া এলাকায় অভিযান চালাল রাজ্য পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স বা এসটিএফ (STF)। সেখানে এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে সিমবক্স-সহ একাধিক অত্যাধুনিক যন্ত্র উদ্ধার হয়েছে বলে খবর।
এসটিএফ সূত্রে খবর, শুক্রবার গভীর রাতে নাকাশি পাড়া এলাকার একটি বাড়িতে হানা দেন এসটিএফ। সেখানে থেকে আরও ২ টি সিমবক্স, ৬টি রাউটার উদ্ধার হয়। মিলেছে প্রচুর চার্জার, কেবল, মোডেম-সহ নানা অত্যাধুনিক যন্ত্রাংশ। সূত্রের খবর অনুযায়ী, ধৃত বাংলাদেশী নাগরিক মামুনকে জেরা করেছিল পুলিশ। তার বয়ানের উপর ভিত্তি করেই নদিয়ার এই বাড়িটির হদিশ পায় পুলিশ। তবে সেখানে এতগুলি সিমবক্স এল কোথা থেকে, কী কাজে তা ব্যবহার করা হচ্ছিল, বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়।
[আরও পড়ুন: জনতার পাশে সরকার, এবার দুয়ারে শিবিরেই রেশন-আধার যোগ]
সম্প্রতি রাজ্য পুলিশের এসটিএফ বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট এলাকা থেকে বাংলাদেশ, শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ির ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে। সিমবক্স, স্লট ছাড়াও ১৭টি রাউটার, মডেম, ৪০০টি অব্যবহৃত সিম, ল্যাপটপ, ডেটা কেবল উদ্ধার হয় তাদের কাছ থেকে। সবই ইন্টারনেট যোগাযোগের উপকরণ। বিমানবন্দর থানায় (Airport PS) একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে ৩ জনের বিরুদ্ধে। কোথা থেকে এই সিমবক্স এবং উচ্চপ্রযুক্তির এসব যন্ত্রপাতি হাতে পেলে, সেসব নিয়ে তাদের কী পরিকল্পনা ছিল, সেসব খতিয়ে দেখতে চান স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্সের আধিকারিকরা।
[আরও পড়ুন: KMC: কলকাতা পুরসভার বিল্ডিংয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ছড়াল আতঙ্ক, খতিয়ে দেখা হচ্ছে কারণ]
কিন্তু কী এই সিমবক্স? কীভাবে কাজ করে তা? কেনই বা এই সিমবক্স হাতিয়ার হয়ে উঠছে সাইবার জালিয়াতদের? আসলে এটা এমন এক যন্ত্র যার সাহায্যে আন্তর্জাতিক কলকে (International calls) লোকাল কল হিসেবে দেখানো যায়। আর সেই কারণেই এর ব্যবহার এত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে অপরাধীদের কাছে। সহজ ভাষায় বলতে গেলে, সিমবক্স হল এক ধরনের সিম ব্যাংক। এর মধ্যে শতাধিক সিম কার্ড ঢোকানো যায়। বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিদেশ থেকে আসা কলকে লোকাল নম্বরে ডাইভার্ট করে দেওয়া যায় সিমবক্সের সাহায্যে। এর ফলে আন্তর্জাতিক স্তরে কোনও অপরাধ হলে সহজে তা বোঝা যায় না। এখানেই শেষ নয়। সিমবক্স ব্যবহার করে দুষ্কৃতীরা কোনও দুষ্কর্ম করলে, তার টাওয়ার লোকেশনও চিহ্নিত করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে যায়। তাছাড়া তুলনামূলক ভাবে কলের খরচও অনেক কম।