স্টাফ রিপোর্টার, নয়াদিল্লি: নির্বাচনের মরশুমে সুপ্রিম কোর্টে ভর্ৎসিত হতে হল উত্তরপ্রদেশ সরকারকে। নাগরিক সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় হওয়া প্রতিবাদে বিক্ষোভকারীদের থেকে যে ক্ষতিপূরণ আদায় করছে যোগী সরকার, তা বন্ধ করতে শুক্রবার কড়া বার্তা দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচুড় (DY Chandrachud) এবং বিচারপতি সূর্য কান্তের বেঞ্চ উত্তরপ্রদেশ সরকারকে বলে, দ্রুত এসব বন্ধ করুন। নাহলে আমরা করব।
আদালতের এমন পর্যবেক্ষণে দেশের সর্বাধিক জনবসতিপূর্ণ রাজ্যের নির্বাচনের দ্বিতীয় দফার ভোটের আগে বড় ধাক্কা খেল উত্তরপ্রদেশ সরকার। ২০১৯ সালে দ্বিতীয়বার কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পর নাগরিক সংশোধনী আইন আনে মোদি (Narendra Modi) সরকার। যার প্রতিবাদে দেশজুড়ে শুরু হয় বিক্ষোভ। বাদ যায়নি উত্তরপ্রদেশও। সরকারি সম্পত্তি-সহ অন্যান্য অনেক কিছুই ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়ে। বিক্ষোভে জড়িত থাকা ব্যক্তিদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে এই ক্ষয়ক্ষতির ক্ষতিপূরণ প্রক্রিয়া শুরু করে যোগী (Yogi Adityanath) সরকার। যার চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) দায়ের হয় মামলা। তারই শুনানিতে এদিন পর্যবেক্ষণে বেঞ্চ জানায়, সরকার নিজেই অভিযোগকারী, বিচারক ও শাস্তিদাতার ভূমিকা নিচ্ছে। সরকারের উচিত আইনি পথ অবলম্বন করা। দ্রুত এই প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হবে। নাহলে আদালত হস্তক্ষেপ করে সব মামলা খারিজ করবে। এর জন্য উত্তরপ্রদেশ সরকারকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
[আরও পড়ুন: দেশে করোনা সংক্রমণ কমলেও মৃত্যুহারে উদ্বেগ, ফের বাড়ল প্রাণহানি]
পি এ টিটু নামক এক ব্যক্তি যোগী সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। এদিন তাঁর আইনজীবী আদালতে জানান, শুধুমাত্র মুসলমান সম্প্রদায়ের ব্যক্তিদের কোনও ভিত্তি ছাড়াই সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নোটিশ পাঠানো হচ্ছে। ছ’ বছর আগে মৃত এক ৯৪ বছর বয়সী ব্যক্তির নামে পাঠানো নোটিশ আদালতে পেশ করা হয়। ৯০-এর বেশি বয়সি ব্যক্তিদের কথাও উল্লেখ করা হয়, যাঁদের নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘এটাকে ন্যাশনাল ইস্যু বানাবেন না’, হিজাব বিতর্কে জরুরি শুনানির আরজি খারিজ সুপ্রিম কোর্টে]
এই প্রসঙ্গে বলা হয়, এত বয়স্ক কোনও ব্যক্তি কীভাবে হিংসা করতে পারে? রাজ্যের তরফে জানানো হয়, ৮৩৩ জন বিশৃঙ্খলাকারীর বিরুদ্ধে ১০৬টি এফআইআর দায়ের হয়েছে। ২৭৪ জনের বিরুদ্ধে সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নোটিশ জারি করা হয়েছে। যাঁদের মধ্যে ২৩৬টি সম্পত্তি ইতিমধ্যেই বাজেয়াপ্ত হয়েছে। সূত্রের খবর অনুযায়ী এই সময় ২০০৯ ও ২০১৮ সালের দু’টি মামলার রায়ের উল্লেখ করে আদালতের নির্দেশের খেলাপ করার কথা বলে বেঞ্চ। নির্বাচনী আবহে আদালতের এই পর্যবেক্ষণে বেকায়দায় পড়বে যোগী ও বিজেপি (BJP)। এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। দেখার শুধু বিরোধী দলগুলি এর কতটা ফায়দা তুলতে পারে।