ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: দুই গোষ্ঠীর ছাত্রদের মধ্যে মারামারির জেরে ফের সরগরম আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। অভিযোগ, এই ঘটনায় এমবিবিএস চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষার্থী সাত ছাত্রকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। কয়েকজনকে হাসপাতালেও ভরতি করা হয়েছে। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে প্রথমে বচসা পরে মারধরের ঘটনায় চলে আসেন হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান বিধায়ক ডা সুদীপ্ত রায়। আসেন স্থানীয় বিধায়ক। রীতিমতো উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়।
অভিযোগ, এদিনের ঘটনার সূত্রপাত হয় গত শনিবার। ওইদিন বিকেল চারটে নাগাদ এক ইন্টার্ন চা খেতে বেরলে তাঁকে ঘিরে ধরে কলেজেরই কিছু ছাত্র। কিছুক্ষণের মধ্যেই মারধর শুরু হয়। স্টেথোস্কোপ ছুঁড়ে ফেলা হয়। অকথ্য গালি দেওয়া হয়। এমনকী, চ্যাংদোলা করে মাটিতে তুলে আছাড় মারা হয়। পুলিশের সামনে এই ঘটনা ঘটলেও কোনও সাহায্য জোটেনি বলে অভিযোগ। আরজি কর স্টুডেন্টস ইউনিটি এই ঘটনায় অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি জানায়।
[আরও পড়ুন: ম্যারাথন জেরা শেষ, মাথা উঁচু করেই ইডির দপ্তর থেকে বেরিয়ে এলেন অভিষেক]
তখনকার মতো ঘটনা মিটে গেলেও এদিন চতুর্থ বর্ষের সার্জারির প্রথম পত্রের পরীক্ষার পর প্রায় সাতজনকে পালটা মারধর করা হয়। এদের মধ্যে সুমন হাজরা বলে এক পরীক্ষার্থী রয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, “বিনা প্ররোচনায় মারধর করা হয়। যাঁরা এই কাজের সঙ্গে যুক্ত তাঁরা কলেজের ছাত্র হলেও ছাত্র সংসদের সঙ্গে কোনওভাবে যুক্ত নন।” ছাত্রদের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে এই গোলমালের আঁচ পৌঁছয় স্বাস্থ্যভবন পর্যন্ত। কলেজের এক অধ্যাপককে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করার নির্দেশ দেন। নির্দেশ দেন স্বয়ং স্বাস্থ্য সচিব। স্বাস্থ্যকর্তাদের নির্দেশ পেয়ে সেই অধ্যাপক বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করলে তাঁকেও কার্যত হুমকির মুখে পড়তে হয় বলে অভিযোগ স্বাস্থ্যভবনের এক কর্তার।
কয়েক মাসের ব্যবধানে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে ফের ছাত্রদের মধ্যে গোলমাল বিতন্ডার ঘটনা স্বাস্থ্যভবন যে কোনওভাবেই অনুমোদন করে না তা একরকম স্পষ্ট করে দিয়েছেন ওই স্বাস্থ্যকর্তা। তবে হাসপাতালের ডেপুটি সুপার বলেছেন, “গোলমাল হয়েছে। সবটা যাতে মিটে যায় তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” এদিকে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন কলেজের পড়ুয়াদের একটি বড় অংশ।