নিজস্ব সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: শিক্ষামুলক ভ্রমণে এসে একটি পর্যটন সংস্থার প্রতারণার জেরে বিপাকে পড়ল কলকাতার চারুচন্দ্র কলেজের ছাত্রী ও অধ্যাপকরা। থাকা-খাওয়া থেকে শুরু করে বেড়ানোর সমস্ত বন্দোবস্ত করার কথা থাকলেও কিছুই করা হয়নি বলে অভিযোগ ওই দলটির। এরপর আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তীর উদ্যোগে আপাতত তাঁদের হোটেলে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা হলেও বেড়ানোর বন্দোবস্ত হয়নি। ফলে শুক্রবারই তাঁরা কলকাতায় ফিরে গিয়েছেন। পাশাপাশি থানায় অভিযোগ জানাতে গিয়ে প্রথমে অভিযোগ নেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ তাঁদের। সেক্ষেত্রেও বিধায়কের হস্তক্ষেপে অভিযোগ দায়ের হয়। ওই দলটির সঙ্গে আসা সৌম্য দে নামে ওই ট্যুর অপারেটর সংস্থার এক কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
[মৃতদেহ নিখোঁজ, মিসিং ডায়েরি করল ন্যাশনাল মেডিক্যাল!]
জানা গিয়েছে, কলকাতার চারুচন্দ্র কলেজের অধ্যাপক ও পড়ুয়া মিলে ৬৫ জনের একটি দল গত ১৩ ডিসেম্বর আলিপুরদুয়ারে শিক্ষামূলক ভ্রমণে আসে। চিলাপাতার জঙ্গল ও কোচবিহারের রসিক বিল ভ্রমণের কথা ছিল তাঁদের। তিন লক্ষ ন’হাজার টাকার বিনিময়ে এই দলটির থাকা-খাওয়া ও ঘোরার যাবতীয় বন্দোবস্ত করার কথা ছিল। কিন্তু আলিপুরদুয়ারের ওই হোটেলে যাওয়ার পর তাঁদের কাছে টাকা চান হোটেল মালিক। তখনই প্রতারণার বিষয়টি সামনে আসে। চূড়ান্ত বিপাকে পড়েন তাঁরা। খবর পেয়ে আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী ওই দলটিকে ওই হোটেলেই থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে দেন। কিন্তু কোথাও বেড়াতে পারেননি পড়ুয়ারা। শুক্রবার ওই সংস্থার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানাতে যান চারুচন্দ্র কলেজের অধ্যাপিকা ময়ূখমালা মণ্ডল। কিন্তু প্রথমে অভিযোগ নেওয়া হয়নি বলে তাঁর দাবি। পরে বিধায়কের হস্তক্ষেপে অভিযোগ দায়ের হয়।
[চেনার ভুল! দার্জিলিংয়ের কমলা ভেবে আসলে কী কিনছেন জানেন?]
আলিপুরদুয়ার থানায় দাঁড়িয়ে ময়ূখমালাদেবী বলেন, “কলেজের তৃতীয় বর্ষের জুলজি বিভাগের ৫৯ জন ছাত্রীকে নিয়ে আমরা ছয় অধ্যাপক ডুয়ার্সে শিক্ষামূলক ভ্রমণে এসেছিলাম। কলকাতার চেতলা এলাকার একটি টুর অপারেটরকে এই ভ্রমণের বরাত দেওয়া হয়েছিল। তার জন্য তিন লক্ষ ন’হাজার টাকা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারপরও কোথাও থাকা-খাওয়ার কোনওরকম ব্যাবস্থা করেনি। পরে বিধায়ক আমাদের পাশে দাঁড়ান। বাধ্য হয়ে ট্যুর বাতিল করে আমরা ফিরে যাচ্ছি।” আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “বিপাকে পড়ায় আমরা ওই দলটির থাকা-খাওয়ার ব্যাবস্থা করে দিয়েছি। লিখিত অভিযোগ দায়ের নিয়ে কিছু সমস্যা হয়েছিল থানায়। সেটাও মেটানো হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ।” আলিপুরদুয়ার থানার আইসি প্রদীপ সরকার বলেন, “ওই পড়ুয়াদের দলটির সঙ্গেই অভিযুক্ত ট্যুর অপারেটর সংস্থার এক কর্মী এসেছেন। তাঁকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।” অন্যদিকে আলিপুরদুয়ার জেলা হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের বিষ্ণু মণ্ডল বলেন, “আমরা পর্যটকদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করেছি। কলকাতায় ফিরে যদি ওই দলটি টাকা মিটিয়ে দেয়, তাহলে ভাল, না হলেও আমাদের কোনও দাবি নেই।”