সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা সংক্রমিতের নিরিখে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারত (India)। অথচ মৃত্যু হার ২ শতাংশেরও নিচে। যা আবার অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেকটাই কম। ভারতের এই পরিসংখ্যান দেখে চমকে উঠেছেন বহু চিকিৎসক-গবেষক। ভারতের মতো অতি ঘনবসতিপূর্ণ দেশে কীভাবে সম্ভব হল এটা? কোন ম্যাজিক বলে মৃত্যুহার এতটা কম? রহস্যের উত্তর খুঁজতে বহুদিন ধরেই গবেষণা চালাচ্ছেন দেশ-বিদেশের গবেষকরা। এবার সেই গবেষণায় উঠে এল এক চমকপ্রদ তথ্য। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ (Poor Hygiene), অপরিশোধিত জল ও ভারতীয়দের স্বাস্থ্যবিধি না মানার অভ্যেসই এই যাত্রায় মহামারী থেকে বাঁচিয়ে দিল দেশবাসীকে।
কাউন্সিল অফ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ (CSIR), পুণের ন্যাশনাল সেন্টার ফর সেল সায়েন্স এবং চেন্নাই ম্যাথেমেটিক্যাল ইন্সটিটিউটের গবেষকদের যৌথ গবেষণায় জানা গিয়েছে, যাঁরা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকেন সহজাত ভাবে তাঁদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকে। যার জেরে তাঁদের শরীরে সহজে থাবা বসাতে পারে না করোনা ভাইরাস (Corona Virus)। ঠিক এই কারণেই তথাকথিত গরীব ও মধ্যবিত্ত দেশগুলিতে করোনার দাপট তুলনামূলক কম বলে দাবি করেছেন গবেষকরা। তাঁদের কথায়, এ সমস্ত দেশের মানুষ জন্মের পর থেকেই বিভিন্ন জীবাণুঘটিত রোগের দ্বারা আক্রান্ত হন। স্বাভাবিকভাবেই ভাইরাসের বিরুদ্ধে তাঁদের দেহে অনাক্রম্যতা তৈরি হয়ে যায়।
[আরও পড়ুন : মহিলাদের তুলনায় পুরুষ-দেহেই বেশি মাত্রায় রয়েছে করোনার অ্যান্টিবডি, জানাচ্ছে গবেষণা]
এই গবেষণায় ২৪টি বিষয়কে মাপকাঠি হিসেবে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ভৌগোলিক অবস্থান, জনঘনত্ব, স্বাস্থ্যকর পরিবেশ, স্বচ্ছ শৌচব্যবস্থা প্রভৃতি। এই মাপকাঠির নিরিখে বিচার করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন ভারতীয় গবেষকরা। পুণের ন্যাশনাল সেন্টার ফর সেল সায়েন্সের প্রাক্তন ডিরেক্টর তথা এই গবেষণাপত্রের সহ-লেখক শেখর মান্ডে জানান, “যে সমস্ত দেশের জিডিপি বেশি সেই সমস্ত দেশে করোনায় (COVID-19) মৃত্যুর হারও বেশি। যদিও এই তথ্য প্রচলিত ধারণা একেবারে বিরোধী।” গবেষণার রিপোর্ট গবেষণাপত্রে প্রকাশিত হলেও, এই তথ্যগুলি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার আগে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে বলে মত গবেষকদের একাংশের।