সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: ইউপিএসসি (UPSC) পরীক্ষায় একশোর মধ্যে স্থান করে নিল ঝাড়গ্রামের এক তরুণ। ছেলের কৃতিত্ব গর্বিত বাবা-মা। এখন শুভঙ্করের স্বপ্ন, আইএএস হয়ে ঝাড়গ্রামে কৃষিভিত্তিক শিল্প, পর্যটনের প্রসার এবং রোজগার কেন্দ্রিক বিষয়ের উপর কাজ করা।
শুক্রবারই প্রকাশিত হয়েছে ইউপিএসসির সিভিল সর্ভিস পরীক্ষার ফলাফল। জানা গিয়েছে, ঝাড়গ্রাম শহরের রঘুনাথপুরের বাসিন্দা বছর ছাব্বিশের শুভঙ্কর বালা (Subhankar Bala) ৭৯ তম স্থান করেছেন। জানা গিয়েছে, ওই যুবকের আদি বাড়ি গোপীবল্লভপুরের ১ নম্বর ব্লকের শাশড়া গ্রামে। শুভঙ্করের বাবা হোমিওপাথি চিকৎসক ছিলেন। ছেলে,মেয়েদের উচ্চশিক্ষা দেওয়ার তাগিদে ঝাড়গ্রাম শহরে চলে যান তিনি ২০০০ সালে। প্রথমে ভাড়া বাড়িতেই ছিলেন তাঁরা। পরে রঘুনাথপুরে বাড়ি করেন।
[আরও পড়ুন: একাধিক পুরুষের সঙ্গে প্রেম, বহুবার ঘরছাড়া, ‘শাস্তি’ দিতে মহিলাকে মার প্রতিবেশীদের]
শুভঙ্করের বাবা রাজনারায়ন বালা ২০১৫ সালে ঝাড়গ্রাম হাসপাতাল থেকে আবসর গ্রহন করেন। তার দুই মেয়েই উচ্চশিক্ষিত। বড় মেয়ে থাকেন জার্মানিতে। ছোটে মেয়ে চাকরি করেছেন কলকাতায়। শুভঙ্কর ভাইবোনেদের মধ্যে ছোট। মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা ঝাড়গ্রাম কেকেআই ইন্সটিটিউট থেকে দিয়েছেন শুভঙ্কর। ২০১১ সালে মাধ্যমিকে ঝাড়গ্রাম জেলায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছিলেন তিনি। ২০১৩ সালে উচ্চমাধ্যমিকে কোনও স্থান না পেলেও সে নব্বই শতাংশর বেশি নম্বর পেয়েছিলেন। উচ্চমাধ্যমিকের পর সে তেলেঙ্গানার ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি ওয়ারেঙ্গালা থেকে ইলেকট্রনিক অ্যান্ড কমিনিকেশনের উপর বিটেক করেন। ২০১৭ সালে সেখান থেকে পাশ করেন। কলেজে পড়াকালীন স্কলারশিপ পেয়ে জার্মানিতে দু’মাসের জন্য ইন্টারশিপ করেন। তারপর সে ব্যাঙ্গালোরের টেক্সাস ইন্সট্রুমেন্ট নামে একটি বিদেশি সংস্থায় চাকরি করেন।
চাকরি করার সময় ২০১৯ সালে ইউপিএসসির পরীক্ষা প্রিলিমনারি পরীক্ষায় পাশ করেছিলেন শুভঙ্কর। তিনি বলেন, “এখন দিল্লিতে থাকি। ২০১৯ সালে যখন ইউপিএসসির প্রিলিমনারি পরীক্ষায় পাশ করি তখন থেকে চিন্তা করতে থাকি যদি একশো শতাংশ আমি পড়াশুনায় দিতে পারি তহলে নিশ্চয় পারব। চাকরি ছেড়ে দিই। ২০২০ সালে পরীক্ষায় বসি। শুক্রবার ইউপিএসসির রেজাল্ট বের হয়েছে। আমার স্থান হয়েছে ৭৯। এরপর মুসৌরীতে ট্রেনিং রয়েছে। আমি চাই আইএএস হতে। অবশ্যই চাইব আমার জেলায় কাজ করতে। এক সময়ে ঝাড়গ্রামে মাওবাদী সন্ত্রাস ছিল। এখন শান্তি ফিরেছে। কাজ করার সুযোগ পেলে কৃষিভিত্তিক শিল্প, পর্যটনের প্রসার, রোজগার কেন্দ্রীকবিষয়গুলি নিয়ে কাজ করতে চাই।” শুভঙ্করের বাবা রাজনারায়ন বালা বলেন, “ছেলে শুক্রবার সন্ধেয় ভিডিও কল করে আমাদের জানান। সে ইউপিএসসি পরীক্ষায় ৭৯ স্থান করেছে। আমরা অত্যন্ত খুশি। আমরা চাইব ছেলে আমাদের রাজ্যে কাজ করুক।”