সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভাইফোঁটার আগেই দাদার প্রিয় নাড়ু বানিয়ে রেখেছিলেন বোন। অপেক্ষা ছিল, শনিবার সদ্য হাসপাতাল থেকে ফেরা দাদাকে সেই নাড়ু খাওয়াবেন। কিন্তু সেই ইচ্ছের উপরে নেমে এসেছে চিরবিচ্ছেদের কালো পর্দা। প্রয়াত দাদা সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের (Subrata Mukherjee) কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা গেল বোন বুলবুল চট্টোপাধ্যায়কে। কেবল বলতে পারলেন, ”আমার হাতের নাড়ু খেতে চেয়েছিল দাদা, ভাইফোঁটার দিন…”
সুব্রত চলে গিয়েছেন না ফেরার দেশে। তিন বোনের ইচ্ছে ছিল শনিবার দাদাকে ফোঁটা দেবেন বরাবরের মতোই। অনেকটাই সুস্থ হয়ে ওঠার পরও কীভাবে সব শেষ হয়ে গেল ভেবে পাচ্ছেন না তাঁরা। বুলবুল চট্টোপাধ্যায়ের মতোই আরেক বোন তনিমা চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতিচারণে উঠে এল ভাইফোঁটায় দাদার সঙ্গে কাটানো সময়ের কথা। তিনি জানালেন, তাঁর বাড়িতেই হত ভাইফোঁটার অনুষ্ঠান। এবারও ঠিক করেছিলেন, সেখানেই তিন বোন ফোঁটা দেবেন দাদাকে।
[আরও পড়ুন: Subrata Mukherjee: অন্যেরা দুর্গোৎসব করেন, সুব্রত মুখোপাধ্যায় করতেন ‘সনাতনী পুজো’]
কিন্তু দাদা আর নেই। দীপাবলির রাতেই অকস্মাৎ অন্ধকার নেমে এসেছে তাঁদের জীবনে। প্রিয় দাদাকে যে আর কোনও দিন দেখতে পাবেন না আদরের বোনরা। চোখের জল আর তাই বাঁধ মানছে না।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ এসএসকেএম হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। সন্ধে থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে। হৃদপিণ্ডে ২ দিন আগেই স্টেন্ট বসানো হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধেবেলা সেই স্টেন্টেই সমস্যা দেখা দেয়। ডাক্তারি পরিভাষায় ‘স্টেন্ট থ্রম্বোসিসে’ আক্রান্ত হন তিনি। জরুরি পরিস্থিতিতে চিকিৎসকদের ডাকা হয়। এরপর মন্ত্রীকে স্থানান্তরিত করা হয় ICCU-তে। কিন্তু সব চেষ্টাই ব্যর্থ হয়। বঙ্গ রাজনীতির এক উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব সুব্রতকে হারিয়ে কার্যতই শোকে বিহ্বল বাংলার রাজনৈতিক মহল। শুক্রবার বিকেলে সম্পন্ন হয় সুব্রতর শেষকৃত্য। পঞ্চভূতে বিলীন হয়ে গেলেন বর্ষীয়ান রাজনীতিক।