নন্দন দত্ত, সিউড়ি: প্রথমবার গরহাজির থাকলেও দ্বিতীয়বার ইডির নোটিসে হাজিরা দিতে সোমবার দিল্লি গেলেন অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) মেয়ে সুকন্যা। তাঁর পাশাপাশি হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারি এবং অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ আহেমদপুরের চালকল মালিক তথা তৃণমূল (TMC) যুব নেতা রাজীব ভট্টাচার্যকেও ইতিমধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। এবার সেই সূত্রে তাঁদেরও আয়ের উৎস জানতে দিল্লিতে তলব করেছে ইডি (ED)। আগামী ২ নভেম্বর সুকন্যাকে তলবের দিনক্ষণ ঠিক করা হয়েছে।
ইডির তরফে সুকন্যাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রথম নোটিসে ২৭ অক্টোবর দিল্লিতে তলব করা হয়েছিল। রাজ্যের বাইরে থাকায় সিবিআইয়ের (CBI) তলব এড়িয়ে গিয়েছিলেন তিনি। বান্ধবীর চিকিৎসা করাতে তিনি ভিনরাজ্যে থাকায় হাজিরা দিতে পারবেন না বলে ইডিকে জানিয়েছিলেন। এরপরে ২৭ তারিখ রাতেই সুকন্যাকে ই-মেল করে ফের ২ নভেম্বর দিল্লিতে তলব করা হয়। বাড়ি ফিরে ইডির দ্বিতীয় নোটিস পেয়ে প্রয়োজনীয় নথিপত্র-সহ সুকন্যা মণ্ডল সোমবার সকালে বোলপুর (Bolpur) থেকে সড়কপথে অন্ডাল বিমানবন্দরে পৌঁছে যান। সেখান থেকে আকাশপথে দিল্লির উদ্দেশে রওনা হন। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গিয়েছে, তার সঙ্গে তাঁদের পারিবারিক হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারি ও রাজীব ভট্টাচার্যও রওনা হয়েছেন।
[আরও পড়ুন: ‘মালদ্বীপে বান্ধবীকে নিয়ে সুইমিং’, ঘাটালের বন্যা নিয়ে দেবকে বেনজির আক্রমণ হিরণের]
উল্লেখ্য, গরু পাচার মামলায় যে চার্জশিট জমা করেছে সিবিআই, তাতে উল্লেখ করা হয়েছে অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ের সম্পত্তির (Assets) হিসেবও। চার্জশিটের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩-১৪ অর্থবর্ষে সুকন্যার আয় ছিল ৩ লক্ষ ১০ হাজার টাকা। ২০২০-২১ অর্থবর্ষে সেই হিসেব বেড়ে হয়েছে ১ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা। সুকন্যার নামে অন্তত ৩ কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিটেরও (Fixed Deposit) হদিশ পেয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। অনুব্রত মণ্ডল ও তাঁর কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের নামে একাধিক সম্পত্তির হদিশ মিলেছে বলে দাবি ইডি কর্তাদের। এর আগে সায়গল হোসেনকেও তারা দিল্লি নিয়ে গিয়ে জেরা করে অনেক তথ্য পেয়েছেন।
[আরও পড়ুন: কেন ভাঙল গুজরাটের সেতু? চাঞ্চল্যকর দাবি ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের]
এছাড়া অনুব্রত কন্যার নামে রেজিস্টার্ড কোম্পানি ও কোটি কোটি টাকা আয়ের উৎস কী, তার খোঁজ পেতে চায় তদন্তকারীরা। সে বিষয়ে জানতেই এই জিজ্ঞাসাবাদ বলে জানা যায়। উল্লেখ্য, এর আগে সুকন্যাকে জেরা করেছিল সিবিআই। জিজ্ঞাসাবাদে সুকন্যা জানায়, ‘সব জানেন হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারি’। এএনএম অ্যাগ্রোকেম লিমিটেড নামে একটি সংস্থার মালিকানা রয়েছে সুকন্যার নামে। এই সংস্থার আয়ব্যয়ের হিসেব ইতিমধ্যেই রয়েছে ইডির স্ক্যানারে। সব হিসেব খতিয়ে দেখতে চান ইডির আধিকারিকরা। সুকন্যাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই সংক্রান্ত বিষয়ে আরও নতুন কোনও তথ্য পাওয়া যায় কি না, সেই দিকেই নজর গোয়েন্দাদের।