সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘পাওয়ার হিটার’ বনাম স্পিন জাদু’– এভাবেই আইপিএলের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারকে দেখছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। শুক্রবার চেন্নাইয়ের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে যে জিতবে তারাই আইপিএল ফাইনালে কলকাতা নাইট রাইডার্সের প্রতিপক্ষ হবে।
ফাইনালে ওঠার মহাযুদ্ধে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, লড়াইটা মূলত হতে চলেছে ট্রাভিস হেড-অভিষেক শর্মার পাওয়ার হিটিং বনাম যুজবেন্দ্র চাহাল-রবিচন্দ্রন অশ্বিনের স্পিন বোলিং। গতকালই অশ্বিনের স্পিন জাদুতে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে হারিয়েছে রাজস্থান রয়্যালস।
[আরও পড়ুন: বিশ্বকাপের আগে দুঃসময় বাংলাদেশের ক্রিকেটে, আমেরিকার কাছেও হারতে হল সিরিজ]
শুক্রবার দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে এবার তাদের প্রতিপক্ষ সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। হায়দরাবাদের দুই ওপেনার এবারের আইপিএলে প্রায় বেশিরভাগ ম্যাচেই দুরন্ত ব্যাটিং করেছেন। তঁাদের পাওয়ার হিটিং প্রতিপক্ষ বোলারদের মনোবল শুরুতেই ভেঙে দিয়েছে। যদিও কেকেআরের বিরুদ্ধে হায়দরাবাদের দুই ওপেনার ব্যর্থ হয়েছেন। জিততে পারেনি হায়দরাবদাও। কেকেআরের বিরুদ্ধে হেড-অভিষেক যেমন ব্যর্থ হয়েছিলেন, তেমনই বড় রান করতে পারেননি হেনরিখ ক্লাসেন। ক্লাসেনও এবারের আইপিএলে বিস্ফোরক ব্যাটিং উপহার দিয়েছেন।
তবে ওয়াংখেড়ে বা ফিরোজ শাহ কোটলায় যেমন আগ্রাসী ব্যাটিং করা সম্ভব, চিপকের পিচে সেভাবে ব্যাটিং করাটা একটু কঠিন। কারণ, এখানকার স্লো পিচ। বল ধীর গতিতে থমকে থমকে আসে। ফলে অতিরিক্ত আক্রমণাত্মক ব্যাটিং সমস্যায় ফেলতে পারে হায়দরাবাদের ব্যাটারদের। তার উপর রয়েছেন অশ্বিন। যিনি চেন্নাইয়ের পিচকে হাতের তালুর মতো চেনেন। তঁার সঙ্গে রয়েছেন চাহাল। ফলে রাজস্থানের লক্ষ্য থাকবে, হেড, অভিষেক এবং ক্লাসেনকে দ্রুত ফিরিয়ে দিয়ে ম্যাচের রাশ নিজেদের দখলে নেওয়ার। হায়দরাবাদের পেস বোলিং অনেকটাই নির্ভর করে রয়েছে টি নটরাজন, ভুবনেশ্বর কুমার এবং অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের উপর। তাদের মূল সমস্যা, দলে সেভাবে কোনও বিশেষজ্ঞ স্পিনার না থাকা। মায়াঙ্ক মার্কণ্ডে এবং শাহবাজ আহমেদ তাদের স্পিন বোলিং আক্রমণ সামলাচ্ছেন। চেন্নাইয়ের স্পিন সহায়ক পিচে তাঁদের উপরই ভরসা রাখছে হায়দরাবাদ।
অন্যদিকে, বেঙ্গালুরুকে হারিয়ে আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে থাকা রাজস্থান কোনওভাবেই আর পিছনে ফিরে তাকাতে রাজি নয়। জস বাটলার ফিরে যাওয়ায় রাজস্থানের ব্যাটিং অনেকটাই নির্ভর করছে যশস্বী জয়সওয়ালের উপর। ভারতের এই তরুণ ব্যাটার বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে ভালো ব্যাটিং করেছেন। অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন এবং রিয়ান পরাগ রয়েছেন। শেষ দিকে ঝড় তোলার জন্য রয়েছেন শিমরন হেটমায়ার ও রোভমান পাওয়েল। ধ্রুব জুরেল বেঙ্গালুরু ম্যাচে রান না পেলেও তঁার উপর আস্থা রাখছে টিম ম্যানেজমেন্ট। একইসঙ্গে তাদের চিন্তায় রাখছে অধিনায়ক সঞ্জুর ব্যাটিং ফর্ম। শেষ তিনটি ম্যাচে বড় রান পাননি রাজস্থান অধিনায়ক। রাজস্থানের পেস বোলিং বিভাগে ট্রেন্ট বোল্ট, সন্দীপ শর্মার সঙ্গে রয়েছেন আভেশ খান। তিনি বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে তিন উইকেট নিয়েছেন। সঞ্জু জানিয়েছেন, ‘‘আমাদের দলের কয়েকজন ক্রিকেটার একশো শতাংশ সুস্থ নয়। তা সত্ত্বেও যেভাবে আমরা খেলছি, তা প্রশংসনীয়। আশা করছি, হায়দরাবাদের বিরুদ্ধেও ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সক্ষম হব। ক্রিকেট এবং জীবন আমাকে প্রচুর শিক্ষা দিয়েছে। আমি জানি, জীবনে চলার পথে ব্যর্থতা আসবে। কিন্তু ব্যর্থতাকে পিছনে ফেলে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। আমরা যেভাবে পারফর্ম করছি, তাতে আমি খুশি। সামনের ম্যাচেও আমাদের ভালো পারফর্ম করতে হবে। এটাই আসল। সেই মানসিকতা নিয়েই আমরা মাঠে নামব।’’
(আজ আইপিএলে- সানরাইজার্স হায়দরাবাদ বনাম রাজস্থান রয়্যালস
চেন্নাই, সন্ধে ৭.৩০, স্টার স্পোর্টস)