সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা অতিমারীতে রাজ্যে অনাথ হয়েছে মাত্র ২৭টি শিশু। রাজ্যের তরফে শীর্ষ আদালতে এই তথ্যই দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) রাজ্যের সেই তথ্য বিশ্বাসই করল না। শীর্ষ আদালতের বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গ সরকার যে পরিসংখ্যান দিয়েছে, তা গ্রহণযোগ্য নয়।
করোনার (Coronavirus) দ্বিতীয় ধাক্কায় অনাথ হয়েছে বহু শিশু। মা-বাবা-অভিভাবকদের হারিয়ে পথে-পথে দিন কাটছে তাদের। অনিশ্চিত তাদের ভবিষ্যতও। অতিমারীর জেরে অনাথ হওয়া এইসব শিশুদের জন্য একগুচ্ছ সরকারি প্রকল্প ঘোষণা করেছে কেন্দ্র সরকার। কেন্দ্র জানিয়েছে, করোনায় মা-বাবাকে হারানো শিশুদের ১৮ বছর পর্যন্ত বিনামূল্যে শিক্ষার ব্যবস্থা করবে মোদি সরকার। উচ্চশিক্ষার জন্য ঋণের ব্যবস্থাও করে দেবে কেন্দ্র। সেই ঋণের সুদ বহন করবে কেন্দ্রীয় সরকার। শুধু তাই নয়, ১৮ বছরের পর থেকে মাসিক ভাতা পাবে ওই শিশুরা। আবার ২৩ বছর বয়স হলে এককালীন ১০ লক্ষ টাকাও দেওয়া হবে। শুধু শিক্ষা নয়, তাঁদের স্বাস্থ্যের দায়িত্ব নিচ্ছে কেন্দ্র। বলা হয়েছে, প্রতি বছর ৫ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্যবিমার ব্যবস্থা থাকছে। যার প্রিমিয়াম দেবে সরকার। সুপ্রিম কোর্টের বক্তব্য, কেন্দ্রের এই প্রকল্পগুলি থেকে যেন কেউ বঞ্চিত না হয়। বাংলায় কত শিশু অনাথ হয়েছে? এ প্রশ্নের উত্তরে রাজ্য সরকার জানিয়েছে, করোনা অতিমারীতে এরাজ্যের ২৭টি শিশুর বাবা-মা দু’জনেই মারা গিয়েছেন। শীর্ষ আদালতের বক্তব্য, এই তথ্য বিশ্বাসযোগ্য নয়। দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের বক্তব্য, “আপনারা যদি বলেন যে রাজ্যে মাত্র ২৭টি শিশু অনাথ হয়েছে, সেটাই আমরা মেনে নেব। কিন্তু বাংলা অনেক বড় রাজ্য। এই সংখ্যাটা আদৌ বিশ্বাসযোগ্য নয়।”
[আরও পড়ুন: ‘সংসদ চলতে দিচ্ছে না, বিরোধীদের মুখোশ খুলে দিন,’ BJP সাংসদদের নির্দেশ Modi’র]
আদালতের এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে রাজ্যের পক্ষের আইনজীবী জানান, করোনায় অনাথ হওয়া শিশুদের গণনার কাজ এখনও চলছে। রাজ্যের এই বক্তব্যে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাও। তিনি বলেন, “এই ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন কথাবার্তা বলবেন না। এটা কোনও রাজনৈতিক বিষয় নয়। এটা শিশুদের ভবিষ্যতের ব্যাপার।” এরপরই শীর্ষ আদালত রাজ্যের সব জেলাশাসকদের নির্দেশ দিয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব অতিমারীতে অনাথ শিশুদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে হবে এবং তা কেন্দ্রের পোর্টালে আপডেট করতে হবে।