সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নৌসেনার সঙ্গে তার সম্পর্কের বয়স ৩০ বছর। ২০১৭ সালের আগস্টে অবসর নিয়েছিল ভারতীয় নৌসেনার গর্বের রণতরী আইএনএস বিরাট (INS Viraat)। তারপর শুরু হয় তার ‘অন্তিম যাত্রা’। মুম্বইয়ের বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে সে পৌঁছায় গুজরাটে। সেখানকার আলং শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডে বিরাটকে ভেঙে ফেলার প্রস্তুতি শুরু হয়। কথা ছিল, জাহাজটিকে বিক্রি করে দেওয়া হবে বর্জিতাংশ হিসেবে। কিন্তু বুধবার সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে রক্ষা পেল ভারতের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী রণতরী আইএনএস বিরাট।
[আরও পড়ুন: মাত্র ১ টাকায় ভরপেট খাওয়া! গরিবদের পাশে দাঁড়াতে অভিনব ক্যান্টিন গম্ভীরের]
বিরাটকে ভেঙে বর্জিতাংশ হিসেবে বিক্রির নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে দেশের শীর্ষ আদালতে মামলা করেছিল ‘Envitech Marine Consultants Pvt. Ltd’ নামের একটি সংস্থা। এর আগে বিরাটকে কেনার জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কাছে আবেদন জানিয়েছিল তারা। যদিও সেই আরজি খারিজ করে দেওয়া হয়। জানা গিয়েছে, ১০০ কোটি টাকার বিনিময়ে জাহাজটি কিনে সেটিকে একটি মিউজিয়ামে পরিণত করার পরিকল্পনা রয়েছে সংস্থাটির।এদিন সেই মামলার শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টে। দীর্ঘ তর্ক-বিতর্কের পর আপাতত জাহাজটিকে ভেঙে ফেলতে নিষেধ করেছে আদালত। পাশাপাশি, রণতরীটির বর্তমান মালিকের কাছে এই মর্মে মতামত জানতে চেয়ে নোটিশ পাঠিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ফলে আপাতত ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে ভারতীয় নৌসেনার গৌরবময় অতীতের অন্যতম সাক্ষী আইএনএস বিরাট।
উল্লেখ্য, আইএনএস বিরাট কেবল নামেই নয়, কর্মজীবনেও সে কার্যত বিরাটত্বের পরিচয় দিয়েছে। ‘গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ড’ অনুসারে বিশ্বে এই রণতরীর মতো এত দীর্ঘ সময় ধরে পরিষেবা দিতে পারেনি আর কোনও যুদ্ধজাহাজ। ১৯৮৪ সালে ব্রিটিশ নৌবাহিনী থেকে বাতিল করা হয় এই জাহাজটিকে। সেই রণতরী কিনে নেয় ভারত। ১৯৮৭ সালে ভারতীয় নৌবাহিনীতে আইএনএস বিরাট নামে যোগ দেয় এই রণতরী। গত তিন দশকে ২২,৬২২ ঘণ্টা জলে ভেসে থেকেছে বিরাট। প্রায় ২,২৫২ দিনে সমুদ্রের বুকে পাড়ি দিয়েছে ৫,৮৮,২৮৭ নটিক্যাল মাইল (১০,৯৪,২১৫ কিমি)। সেই হিসেবে বিরাট সমুদ্রের বুকে কাটিয়েছে প্রায় সাত বছর! ২৭ বার প্রদক্ষিণ করেছে বিশ্বকে।