শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: ময়নাগুড়ির নির্যাতিতা নাবালিকার পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। সেখানে গিয়ে রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতির সমালোচনা করেন তিনি। তাঁর দাবি, রাজ্যে অল্প দামে মদ বিক্রির ফলে বাড়ছে ধর্ষণ, শ্লীলতাহানির মতো নারী নির্যাতনের ঘটনা। এই মন্তব্যের জেরে বিতর্কে জড়ালেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর মন্তব্যের বিরোধিতায় সরব প্রায় সকলেই।
শুক্রবার দুপুরে শুভেন্দু অধিকারী-সহ বিজেপির পরিষদীয় দলের সদস্যরা নির্যাতিতার বাড়িতে যান। বিছানায় বসে শুভেন্দু অধিকারী নির্যাতিতার বাবার সঙ্গে কথা বলেন। কথা বলার সময় আচমকাই খাট ভেঙে হুড়মুড়িয়ে পড়ে যান শুভেন্দু। নিরাপত্তারক্ষীরা উদ্ধার করেন তাঁকে। সেভাবে চোট আঘাত লাগেনি বলেই জানিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। কিছুক্ষণ ধাতস্থ হয়ে ফের নির্যাতিতার পরিজনদের সঙ্গে কথা বলেন রাজ্যপাল। উল্লেখ্য, দিনকয়েক আগে সিউড়িতে বিক্ষোভ কর্মসূচি দেখানোর সময় পায়ে আঘাত পান শুভেন্দু।
[আরও পড়ুন: ‘রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থার হাল দেখে রাতে ঘুমোতে পারছি না’, তোপ রাজ্যপালের, পালটা তৃণমূলের]
নির্যাতিতার বাড়ি থেকে বেরনোর পর রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, “পাড়ায় পাড়ায় মদের দোকান খুলে দিয়েছে। ২৮ টাকাতেও মদ পাওয়া যাচ্ছে। অথচ পেট্রল ও ডিজেলের দাম কমছে না। মদের জন্য বাংলায় সর্বনাশ। গ্রামে গঞ্জে শ্লীলতাহানি বেড়ে গিয়েছে।” সূত্রের খবর, রাজ্যের আবগারি দপ্তর দেশি মদের ব্র্যান্ডিং করেছে। তার ফলে মদের দাম কমেছে খানিকটা। পরোক্ষে সেই প্রসঙ্গের কথা উল্লেখ করেই একথা বলেন শুভেন্দু। রাজ্যের বিরোধী দলনেতার এই মন্তব্য নিয়ে জোর বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ময়নাগুড়ির ধর্মপুর এলাকার নাবালিকাকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ ওঠে স্থানীয় অজয় রায় নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত তার জামাকাপড় ছিঁড়ে গোপনাঙ্গে হাত দেয় বলে অভিযোগ। নাবালিকার চিৎকার শুনে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত। ময়নাগুড়ি থানার দ্বারস্থ হয় নাবালিকার পরিবার। অভিযোগ দায়েরের কয়েকদিনের মধ্যেই আদালত থেকে জামিন পেয়ে যায় অভিযুক্ত। নাবালিকার বাবার অভিযোগ, গত ১৪ এপ্রিল দুপুরে বাড়িতে একাই ছিল তাঁর মেয়ে। সেই সময় মুখ ঢাকা অবস্থায় দুই যুবক বাড়িতে ঢুকে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিতে বলে। অভিযোগ প্রত্যাহার না করলে বাড়ির সকলকে খুন করার হুমকি দিয়ে যায় ওই দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনার কথা পরিবারের সকলকে জানায় নাবালিকা। অভিযোগ, তারপরই গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে সে। টানা ১২ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়েও শেষ রক্ষা হয়নি। শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন নির্যাতিতা।