স্টাফ রিপোর্টার: বিমান বসু ইস্যুতে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) ও তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের তরজা চরমে। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর প্রশংসা শোনা গেল শুভেন্দু অধিকারীর গলায়। বৃহস্পতিবার শুভেন্দু বলেন, “বিমান বসু এখনও নিজের হাতে কাপড় কাচেন। পার্টি অফিসে থাকেন।” তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ পালটা বলেন, “শুভেন্দুর মুখ থেকে আমি বিমান বসুকে চিনতে চাই না। বিমান বসু বর্ষীয়ান, শ্রদ্ধেয় নেতা। সাংবাদিকতার সৌজন্যে আমি ছোটবেলা থেকে তাঁকে চিনি। যেসব ইস্যুতে সিপিএম, বিমান বাবুরা অভিযুক্ত সেই অংশটা নিশ্চয়ই বলা হবে। তার মানে ব্যক্তিগতভাবে বিমানবাবুকে অশ্রদ্ধা করার সম্পর্ক নেই।”
শুভেন্দুকে একহাত নিয়ে কুণালের তোপ, “শুভেন্দু নাকি সিপিএম বিরোধী নেতা ছিল। এখন একার দম শেষ। এখন সিপিএমকে গুডবুকে নেওয়ার জন্য সিপিএম ভাল, সিপিএম নেতারা ভাল। এসব বলতে হচ্ছে।” নিয়োগ দুর্নীতি ইস্যুতে এদিন আদালতে ঢোকার মুখে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় শুভেন্দুর নাম করেছেন। নিয়োগ দুর্নীতিতে শুভেন্দুর যুক্ত থাকার অভিযোগ করেছেন পার্থ। তার আগে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষও টুইট করে বলেছিলেন, “শিক্ষায় নিয়োগ বিতর্ক: দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারী, শমীক ভট্টাচার্য, সুজন চক্রবর্তী ও আরও কয়েকজন চাকরির সুপারিশ করেছিলেন কি? তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে অনুরোধ করেছিলেন কি? তদন্ত হোক।” রাজনৈতিক মহল মনে করছে, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে নিজের নাম জড়িয়ে যাওয়ায় নজর ঘোরাতে সংবাদ মাধ্যমের সামনে তৃণমূলকে আক্রমণের পাশাপাশি একাধিক হাস্যকর দাবি ও অভিযোগ তুলেছেন শুভেন্দু। কুণাল ঘোষের টুইটে ও পার্থর মুখে তাঁর নাম উঠে আসা নিয়ে শুভেন্দুর দাবি, “বুধবার বিকেলে প্রেসিডেন্সি জেল সুপারের ঘরে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর আইনজীবী ছিলেন। জেলের সিসিটিভি জেল সুপারের মোবাইল দেখা হোক।” শুভেন্দুর এই চক্রান্তের হাস্যকর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের বক্তব্য, “যার মনে কালি সে সবসময় অন্যের ব্যাপারে চক্রান্ত দেখে। শুভেন্দু যখন বলে এরপরে অমুকের বাড়ি সিবিআই-ইডি যাবে। ইডিকে দিয়ে অমুককে তুলিয়ে আনব। সেগুলো কি সিবিআই-ইডির ডিরেক্টরের বাড়িতে শুভেন্দু বসে ঠিক করে। কোনও চক্রান্তের বিষয়ই নেই।”
[আরও পড়ুন: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত তাপসের ‘এজেন্ট’ মৌসুমী কয়াল, বিস্ফোরক কুন্তল]
এরপরই বিরোধী দলনেতার দাবিকে চ্যালেঞ্জ করে কুণাল বলেন, “আমি শুভেন্দু অধিকারীকে চ্যালেঞ্জ করছি। সিসি ক্যামেরা আছে। শুভেন্দু প্রমাণ করে দেখাক এরকম কোনও ঘটনা ঘটেছে। আগেই তো সাংবাদিক বৈঠক করে প্রকাশ্যে বিষয়টা বলেছি। সেটাই টুইট করেছি।” একইসঙ্গে বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে পালটা আইনি পথে গিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কুণাল ঘোষ। এদিন সারদা-সহ বিভিন্ন ইস্যুতে তৃণমূলকে আক্রমণ করার পাশাপাশি নাম না করে কুণাল ঘোষকেও আক্রমণ করেছেন শুভেন্দু। পালটা শুভেন্দুকে কার্যত তুলোধোনা করেন তৃণমূল মুখপাত্র। কুণালের বক্তব্য, “বিজেপির ওই দলবদলু(শুভেন্দু)-কে বলে রাখি, আমি জ্ঞানত কোনও অন্যায় করিনি বলেই মাথা উঁচু করে লড়ে যাচ্ছি। শুভেন্দুর মেরুদণ্ড নেই। গ্রেপ্তার এড়াতে সারদা কর্তার লিখিত বয়ানের পর পালিয়ে গিয়েছে। বিজেপির পায়ের জুতো পালিশ করতে গিয়েছে। ওর মুখে সারদার কথা শুনব না।” শুভেন্দুর মুখে তাঁর নাম, প্রশংসা ও মহাজোটের বার্তা প্রসঙ্গে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর প্রতিক্রিয়া, “আমার নাম কেন নিল জানি না। আরএসএস পরিচালিত বিজেপির কোনও কর্মসূচিতে আমরা নেই।”