রঞ্জন মহাপাত্র: করোনা সংক্রমণ এড়াতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বিমানবন্দরে যাত্রীদের যথাযথ স্বাস্থ্যপরীক্ষা হচ্ছে না , এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। এমন ঘটনায় উদ্বেগপ্রকাশ করে তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও জানিয়েছেন। কেন্দ্রের গাফিলতির দিকে ইঙ্গিত করে তাঁর অভিযোগ, যাঁরা নিয়ম তৈরি করছেন, তাঁরাই লঙ্ঘন করছেন।
মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন, সোমবার সকালে পূর্ব মেদিনীপুরের বড়মা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ২৬ বছরের ইন্দ্রজিৎ দোলই ও ২৩ বছরের স্বরূপ সামন্ত জানান, তাঁরা করোনা পজিটিভ। হাসপাতাল ভরতি নেওয়ার সময় দেখে তাঁরা ১২ জুন চেন্নাইয়ের এক ল্যাবে লালারসের নমুনা পরীক্ষা করেছিলেন, ১৩ তারিখ রিপোর্ট পজিটিভ আসে। জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরের ৯ জন চেন্নাইয়ের চিঙ্গুলপেটে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ও অন্যান্য কাজ করেন একটি কারখানায়। ওই কারখানার একজন কর্মী করোনা পজিটিভ হওয়ায় বাংলার ৯ জন সেখানকার সরকারি হাসপাতালে নমুনা পরীক্ষা করতে যান। কিন্তু অভিযোগ, তাঁদের কোনও উপসর্গ না থাকায়, পরীক্ষা করেনি ওই হাসপাতাল। ইন্দ্রজিৎ ও স্বরূপবাবু নিজেদের উদ্যোগে এরপর বেসরকারি ল্যাবে পরীক্ষা করান এবং রিপোর্ট পজিটিভ আসে। দু’জনকে সংশ্লিষ্ট সংস্থা তাদের কোয়ার্টার ছাড়তে বলে। যদিও তাঁদের বাকি ৭ সহকর্মী চেন্নাইতেই কোয়ারেন্টাইনে রয়ে যান।
[আরও পড়ুন: করোনা মোকাবিলায় একসঙ্গে একাধিক পদক্ষেপ, জাতীয় স্বীকৃতি লাভ পুরুলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের]
এরপর ১৪ তারিখ, রবিবার রাত ১০টার ইন্ডিগো-৬৩৮৫ বিমানে চেন্নাই থেকে কলকাতায় ফেরেন ইন্দ্রজিৎ দোলই ও স্বরূপ সামন্ত। ১৫ তারিখ ভোরে কলকাতা পৌঁছে ভোরে একটি গাড়িতে চেপে এই হাসপাতালে পৌঁছান এবং নিজেদের শারীরিক পরিস্থিতির কথা খুলে বলে চিকিৎসা চান। এই খবর পৌঁছয় মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর কানে। তিনি জানিয়েছে, ওই ২ ব্যক্তির চিকিৎসা হচ্ছে। তবে কীভাবে দুটি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের নজর এড়িয়ে তাঁরা করোনা পজিটিভ অবস্থায় চলে এলেন, এই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: উলটপুরাণ! বাংলায় ভরসা নেই, হায়দরাবাদেই কাজে ফিরছেন শ্রমিকরা]
মন্ত্রীর দাবি, কেন্দ্র তো এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে পাঠাতে পারত। আসার সময় এই ব্যক্তিদের সংস্পর্শে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের সংক্রমণ হলে দায় কার? কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণমন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ, ICMRকে এই গাফিলতির জবাব দিতে হবে বলে দাবি শুভেন্দু অধিকারীর। যাঁরা স্বাস্থ্যবিধি তৈরি করছেন, তাঁরাই যেভাবে তা লঙ্ঘন করছেন, তা ক্ষমার অযোগ্য। মন্ত্রী আরও বলেন, ”বাংলায় করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। তবে দেশে উদ্বেগজনকভাবে সংক্রমণ বাড়ছে। সেখানে এমন গাফিলতি হলে বাংলার পরিস্থিতি তো খারাপ হবে। এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করছি। পাশাপাশি ওই বিমানে যাঁরা এসেছেন এবং বিমানবন্দরে কেউ তাঁদের সংস্পর্শে এলে আপনারাও করোনা পরীক্ষা করান।”
The post করোনা নিয়ে কীভাবে বিমান সফর? বিমানবন্দরের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত গাফিলতির অভিযোগ শুভেন্দুর appeared first on Sangbad Pratidin.