সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পরিবর্তনের পরিবর্তন। নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেশের আগে এই ডাকই দিলেন একদা রাজ্যে ‘পরিবর্তনে’র কাণ্ডারি শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikary)। বললেন, ”নন্দীগ্রামের সঙ্গে জড়িত ২০১১ সালের রাজনৈতিক পরিবর্তন। এবার ফের আরেক পরিবর্তনের পালা। নন্দীগ্রাম থেকেই নতুন আশা নিয়ে পরিবর্তন আসবে রাজ্যে।” আরও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ”প্রথম হবো আমরাই। দ্বিতীয় কে হবে, জানি না। ২ মে আমরাই সরকার গড়ব। জেলায় সবক’টা আসন দখল করব।” ক্ষমতায় ফিরলে চিটফান্ডে প্রতারিতদের টাকা ফেরানোর মতো বড়সড় প্রতিশ্রুতিও দিলেন তিনি।
নির্দিষ্ট দিনক্ষণ স্থির করাই ছিল। ঠিক ছিল কর্মসূচিও। শুক্রবার মনোনয়ন পেশের আগে দিনভর প্রচার, জনসংযোগ করবেন শুভেন্দু অধিকারী। পরিকল্পনা অনুযায়ী এদিন সকালে একাধিক মন্দিরে পুজো দিয়ে, যজ্ঞ করে হলদিয়ায় জনসভা করেন নন্দীগ্রামের (Nandigram) গেরুয়া শিবিরের প্রার্থী। আর সেখানেই দেখা গেল ভরপুর আত্মবিশ্বাসী শুভেন্দু অধিকারীকে। নিজের জয় নিয়ে নিশ্চিত তো বটেই, বাংলার রাজনীতিতেও যে বদল আসবে তাঁর মতো আরও অনেক বিজেপি প্রার্থীর হাত ধরে, তাও বললেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে হলদিয়ার বিজেপি প্রার্থী তাপসী মণ্ডলের নামও উল্লেখ করলেন তিনি। সিপিএম বিধায়ক তাপসী কয়েক মাস আগে শুভেন্দুর মঞ্চেই বিজেপিতে যোগদান করেছেন। তার পুরস্কার হিসেবে হলদিয়া থেকেই নির্বাচনী লড়াইয়ের সুযোগ পেয়েছেন। এখন জয়ের অপেক্ষা করছেন তাঁরা।
[আরও পড়ুন: ভোট বড় বালাই! লোকাল ট্রেনেই জনসংযোগ তৃণমূল প্রার্থীর, দেখুন ভিডিও]
কথা ছিল, শুভেন্দু অধিকারীর মনোনয়নের সময়ে তাঁর পাশে থাকবেন দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। সেইমতো শুক্রবার সকালে কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান হলদিয়ায় শুভেন্দুর হয়ে প্রচার করলেন। জনসভা থেকে তিনি বলেন, ”নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় শুভেন্দুই মার খেয়েছিলেন। তিনি ভূমিপুত্র। জয়ী হয়ে তিনি বাংলায় পরিবর্তন আনবেন। বাংলায় সরকার গড়বে বিজেপি।” বেলার দিকে এই জনসভায় হাজির হন স্মৃতি ইরানিও।বাংলায় চাঁচাছোলা বক্তব্য রেখে তিনিও নন্দীগ্রামের প্রচারে উত্তাপ বাড়িয়ে তুললেন।
[আরও পড়ুন: ‘দল ভাঙড়ে পাকিস্তানের লোককে দাঁড় করালেও আমরাই জেতাব’, প্রচারে বিস্ফোরক আরাবুল]
বাংলার রাজনৈতিক আন্দোলনের কুরুক্ষেত্র নন্দীগ্রাম কিন্তু সত্যিই তা নানা দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ। ২০১১ সালে রাজ্য রাজনীতির পটবদলের নেপথ্যে নন্দীগ্রামের গুরুত্ব সর্বজনবিদিত। সেদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াইয়ের শরিক ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তৃণমূল নেত্রীর সর্বদা ছায়াসঙ্গী হয়ে ঘুরেছিলেন সেদিন। সময়ের স্রোতে অবশ্য ভেসে গিয়েছে অনেক কিছুই। রাজ্যের একদা গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী দল ছেড়েছেন। পদ্মশিবিরে পা রেখে নতুন রাজনৈতিক কেরিয়ার গড়ে তুলছেন। এটুকু পরিচয় বদলে গেলেও, শুভেন্দু কিন্তু ভোলেননি ‘পরিবর্তন’ পর্ব। এখন বিজেপির হয়ে লড়াই করে তারই পুনরাবৃত্তি চাইছেন শুভেন্দু অধিকারী।