সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আর জি কর কাণ্ডের পর থেকে মনখারাপের কালো মেঘ ঘনিয়েছে শহরজুড়ে। এমন আবহে চলতি বছর দুর্গোৎসব কেমন হবে? সেই নিয়ে দ্বিমত আমজনতার মধ্যে। কেউ বলছেন দুর্গাপুজো বয়কট করতে, আবার কেউ ভাবছেন, দুস্থ মানুষদের পেটের কথা। সারা বছর যাঁরা এই একটি উৎসবের দিকেই চেয়ে থাকেন। যাঁদের অর্থনীতিও নির্ভর করে মা উমার আগমনের উপর। সেই আবহেই সোশাল পাড়ায় সিনেশিল্পীদের সিনেমা বয়কটের ডাক তুলেছেন একাংশ। পেশা এবং প্রতিবাদ গুলিয়ে ফেলাটা কি কাম্য? শিল্পীদেরও সংসার চলে তাঁদের কাজের উপর নির্ভর করেই। সম্প্রতি স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় (Swastika Mukherjee) বলেছিলেন উৎসবে তিনি ফিরছেন না। তবে হইচই শুরু হয় তাঁর পুজো রিলিজ 'টেক্কা'র পোস্টার শেয়ার করার পর থেকেই। নিন্দুকরা 'দুমুখো' বলে কটাক্ষ করা শুরু করেন। এবার সেই প্রেক্ষিতেই নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন অভিনেত্রী।
'টেক্কা'র পোস্টার শেয়ার করে স্বস্তিকার সাফ কথা, "পুজো না হয় একা করলেন, উৎসব সবাই মিলে করতে হয়। আমি পুজোয় আছি, উৎসবে নেই। আমি নেই, এ আমার একান্তই ব্যক্তিগত মতামত! আপনাদের তো বলিনি যে থাকবেন কী থাকবেন না। আপনাদের ইচ্ছে হলে থাকবেন, নইলে থাকবেন না। ইচ্ছে হলে আমার সিনেমা দেখবেন না হলে দেখবেন না। আমার কাজের প্রতি আমার দায়-দায়িত্ব আছে। আমি প্রচার করার জন্য চুক্তিবদ্ধ। আমি কাজের প্রতি ভালোবাসার জায়গা থেকে প্রচারও করব নতুন ছবির, আবার আন্দোলনেও থাকব।"
সেই পোস্টেই বয়কট কালচার নিয়ে ঝাঁজালো স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। তিনি পোস্টে লিখেছেন, 'রেপ কালচার', 'থ্রেট কালচার' এগুলোর সঙ্গে আমরা অবগত! 'ব্যান কালচারের' সঙ্গেও... এখন এই দুঃসময়ে এটা আবার ট্রেন্ডও করছে। আমি পেশায় অভিনেতা। সংসারও চলে অভিনয় করেই। আর শুধু আমারই নয় আরও দশটা মানুষের সংসারও চলে। তারা আমার উপরেও নির্ভরশীল! কাজ ভালোবেসে করি, ওটাই আমার প্যাশন! ওটাই আমার ভাতকাপড় জোটায়। বাকি সকলে যেমন কাজ সামলে এই আন্দোলনে সারা দিচ্ছেন, আমিও তার চেয়ে আলাদা নই। আমরা যারা তিলোত্তমা তাদের নিজের তাগিদেও এই লড়াইয়ে শামিল হওয়া। লড়াই কিন্তু কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার জন্যেও, তাই না? তাহলে যারা প্রতিবাদের পাশাপাশি নিজের ব্যবসার তাগিদে বা কাজের তাগিদে পোস্ট করছেন, তাদের ছোট করা মানে কিন্তু তাদের অর্থনৈতিকভাবে, সামাজিকভাবে বা নৈতিকভাবে অসুরক্ষিত করে দেওয়া নয় কি? খালি পেটে বিপ্লব হয় না, সাথী! ভাতের জন্যেও লড়তে গেলে ভাতের স্বাদ জানতে হয়। তাই যদি বেঁচে থাকার পন্থাকে আপনারা নিন্দে করতে শুরু করেন, তাহলে খুনের জন্য বিচার চাওয়াটা হিপোক্রেসি নয় কি? এই মেসেজ সবার জন্যে, যারা ছোটো করছেন বাকিদের যাঁরা আন্দোলনের পাশাপাশি ভাতের লড়াইটাও করছেন!
[আরও পড়ুন: একই অঙ্গে কত রূপ! একদিকে পুজোর ছবির প্রমোশন, অন্যদিকে ‘উৎসবে না’]
শেষপাতে অভিনেত্রীর মন্তব্য, "দুটোই করব। এবং বেশ করব। প্রতিবাদ করছি বলে কিছু মানুষ দেখলাম তার প্রতিবাদ করছেন। অদ্ভুত, এই প্রথম দেখলাম এমন। অসুবিধা নেই। আর কোন কৈফিয়তও আমি দেব না। আন্দোলন দীর্ঘজীবী হোক।"