সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ক্যানসার-জয়ী যুবরাজ সিং বলেছিলেন, লান্স আর্মস্ট্রংয়ের বই পড়ে মানসিক জোর পেয়েছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবারের পরে অস্ট্রেলিয়ার ম্যাথু ওয়েড (Matthew Wade) হয়ে উঠতে পারেন অনেকের আদর্শ। তাঁর জীবন পড়ে শক্তি সঞ্চয় করতে পারেন মারণ ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীরা।
বড় কোনও মঞ্চে জ্বলে উঠলে পাওয়া যায় প্রতিষ্ঠা। ভক্তরা জানতে চান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির জীবনযুদ্ধের কাহিনি। বৃহস্পতিবার সেরকমই এক মঞ্চে ম্যাথু ওয়েড নিজেকে উজাড় করে দেন। তার পর থেকেই সার্চইঞ্জিনে শুধু ওয়েড আর ওয়েড। উঠে আসছে তাঁর কৈশোরের লড়াইয়ের কাহিনি। নতুন করে অনেকেই জানতে পারছেন ম্যাথু ওয়েড মৃত্যুঞ্জয়ী।
টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের (T20 World Cup) দ্বিতীয় সেমিফাইনালে একসময়ে মনে হচ্ছিল, পাকিস্তান (Pakistan) ফাইনালে যাচ্ছেই। অস্ট্রেলিয়া (Australia) তখন জয়ের কক্ষপথ থেকে অনেকটাই দূরে। বাড়তে থাকা আস্কিং রেটের সামনে দাঁড়িয়ে অস্বাভাবিক রকমের শান্ত দেখাচ্ছিল ওয়েড ও স্টোয়নিসকে। ম্যাচ ছোট করার চেষ্টা করছিলেন দু’ জন। অপেক্ষা করছিলেন মোক্ষম সময়ে বিস্ফোরণের জন্য। ১৯-তম ওভারে শাহিন আফ্রিদির বলে ক্যাচ পড়ে ওয়েডের। জীবন ফিরে পেয়ে বাঁ হাতি অজি ব্যাটসম্যান নক আউট করে দিলেন পাকিস্তানকে। জীবন তো আগেও পেয়েছিলেন ওয়েড। সেই কৈশোরে ছক্কা মেরে ক্যানসারকে গ্যালারিতে ফেলেছিলেন ওয়েড।
আরও পড়ুন: T20 World Cup: ক্যাচ মিসেই ম্যাচ মিস, হাসান আলির আগে যাঁরা বিশ্বকাপে ডুবিয়েছিলেন দলকে
মাত্র ১৬ বছর বয়সে ওয়েডের শরীরে বাসা বেঁধেছিল মারণ ক্যানসার। অথচ তিনি তার বিন্দুবিসর্গ জানতেন না। ফুটবল খেলতেন। একদিন ফুটবল খেলতে গিয়ে কুঁচকিতে মারাত্মক চোট পান ওয়েড। যন্ত্রণাকাতর ওয়েড যান চিকিৎসকের কাছে। তখনই তিনি জানতে পারেন তাঁর অণ্ডকোষে টিউমার বেড়ে উঠছে অনেক আগে থেকেই। পরবর্তীতে ওয়েডকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ”আমি সত্যিই ভাগ্যবান।” ফুটবল খেলতে গিয়ে আঘাত না পেলে এই মারাত্মক রোগের কথা হয়তো জানতেই পারতেন না ওয়েড। কেমোথেরাপির নিদান দেন চিকিৎসক।
ওয়েড জানতেন কেমোথেরাপি নিলে মাথার চুল উঠে যেতে পারে। শরীরের অনেক সিস্টেমই বিদ্রোহ করে বসতে পারে। দুটো কেমোথেরাপি নেওয়া ওয়েড এখন ক্যানসারকে হারিয়েছেন। জীবনের কঠিন সময়ের সেই অভিজ্ঞতা কি সেমিফাইনালে অকুতোভয় করে দিয়েছিল ওয়েডকে? তাঁর স্নাযু করে দিয়েছিল ইস্পাত কঠিন ? হয়তো তাই। প্রবল চাপের মুখে বর্ণান্ধ ছেলেটি ঠান্ডা মাথায় খুন করল পাক বোলিং।
সদ্য কৈশোরে পা রাখা ছেলেটা যখন মারণরোগকে মাঠের বাইরে ফেলে দিতে পেরেছে, মরুদেশের মাঠে ছক্কা হাঁকিয়ে জয় ছিনিয়ে আনা তাঁর কাছে কী এমন কঠিন কাজ!