দক্ষিণ আফ্রিকা-১১৩/৬ (ক্লাসেন ৪৬, তানজিম শাকিব ৩/১৮)
বাংলাদেশ-১০৯/৭ (হৃদয় ৩৭, মহারাজ ৩/২৭)
৪ রানে জয়ী দক্ষিণ আফ্রিকা
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পারল না বাংলাদেশ। তাদের মরিয়া লড়াই থেমে গেল দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে। সোমবার প্রোটিয়ারা ম্যাচ জিতে নিল চার রানে। শ্রীলঙ্কা, নেদারল্যান্ডসের পরে এদিন বাংলাদেশকে মাটি ধরাল দক্ষিণ আফ্রিকা।
সোমবারের বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ যেন হুবহু রবিবারের ভারত-পাক ম্যাচের অ্যাকশন রিপ্লে। রবিবাসরীয় মহারণে ভারত প্রথমে ব্যাট করে তুলেছিল ১১৯ রান। সেই রান তুলতে পারেনি পাকিস্তান। ভারতীয় বোলাররা থামিয়ে দেন পাকিস্তানকে।
এদিন দক্ষিণ আফ্রিকার পুঁজি ছিল ১১৩ রান। বাংলাদেশ থেমে যায় ১০৯ রানে। পরপর দুদিন অপেক্ষাকৃত লো স্কোরিং ম্যাচে পরে ব্যাট করা দল মাথা নীচু করে মাঠ ছাড়ল।
অবশ্য এভাবে ম্যাচ হারার জন্য বাংলাদেশের অভিজ্ঞ ব্যাটার মাহমুদ্দুলাহ কি নিজেকে ক্ষমা করতে পারবেন? শেষ ওভারের পঞ্চম বলে কেশব মহারাজের ফুলটস বল ছক্কা মারতে না পেরে বাউন্ডারি লাইনের সামনে ধরা পড়লেন মার্করামের হাতে। মাহমুদ্দুলাহর ওই শট যদি ছক্কা হতো, তাহলে ম্যাচটা জিতে নিত বাংলাদেশই। ফিনিশার হওয়া হল না মাহমুদুল্লাহর মতো অভিজ্ঞ ব্যাটারের।
মাহমুদুল্লাহ আউট হওয়ার আগে কেশব মহারাজের ওভারেই ফিরতে হয় জাকের আলিকে। তিনিও মারতে গিয়ে প্রায় একই জায়গায় ধরা পড়েন মার্করামের হাতে। শেষ ওভারে জেতার জন্য বাংলাদেশের দরকার ছিল ১১ রান। সুযোগ থাকলেও সেই রান তোলা সম্ভব হল না বাংলার বাঘেদের পক্ষে। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকা এখনও অপরাজেয়। অথচ এদিন সুযোগ ছিল ম্যাচ জেতার। সেই সুযোগ মাঠেই ফেলে এলেন শান্তরা।
নিউ ইয়র্কের পিচে ১২০ রান তাড়া করাও কঠিন। পিচের চরিত্র বুঝে উঠতে সমস্যায় পড়ছেন ব্যাটাররা। সোমবার টস জিতে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথমে ব্যাট নেয়। প্রথম ওভার থেকেই উইকেট হারাতে থাকে প্রোটিয়ারা।
[আরও পড়ুন: বিশ্বসেরা টুর্নামেন্টে খেলতে নারাজ রিয়াল মাদ্রিদ, কারণ ব্যাখ্যা আন্সেলোত্তির]
তানজিম শাকিব প্রথম ওভারের শেষ বলে হেনড্রিক্সকে ফেরান। সেখান থেকে শুরু। দলীয় ২৩ রানে দক্ষিণ আফ্রিকা হারায় প্রথম সারির চার ব্যাটারকে। প্রোটিয়া ব্যাটিং অর্ডার ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়। সেখান থেকে ৭৯ রান জোড়েন ডেভিড মিলার (২৯) এবং ক্লাসেন (৪৬)। ম্যাচের সেরাও হন ক্লাসেন। শেষদিকে রানের গতি বাড়াতে গিয়ে জমে যাওয়া দুই ব্যাটারই আউট হন। শেষমেশ ৬ উইকেট হারিয়ে ১১৩ রানে থেমে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। তানজিম শাকিব ৩টি উইকেট নেন। তাসকিন ২ টি এবং রিশাদ একটি উইকেট নেন।
প্রোটিয়াদের রান তাড়া করতে নেমে দ্রুত চার উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তানজিদ হাসান (৯), লিটন দাস (৯) ও শাকিব আল হাসান (৩) ও অধিনায়ক শান্ত (১৪) দ্রুত ফিরে যান। ৯.৫ ওভারে ৪ উইকেটে ৫০ হয়ে যায় বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের শর্ট বলই বাংলাদেশের ব্যাটারদের কাছে ঘাতক হয়ে দেখা দেয়।
লড়াইটা ঠিক এই জায়গা থেকেই শুরু করে তৌহিদ হৃদয় এবং অভিজ্ঞ মাহমুদুল্লাহ। একদিকে যৌবনের তেজ, অন্যদিকে অভিজ্ঞতা সম্বল করে বাংলার বাঘেরা লড়াই চালিয়ে যায়। মাহমুদুল্লাহর অভিজ্ঞতা তৌহিদ হৃদয়কে পথ দেখায়। অন্যদিকে হৃদয় বড় ছক্কা হাঁকাতে দক্ষ। দুই বাংলাদেশি ব্যাটার পরিস্থিতি বুঝে এগোতে থাকেন। হৃদয় দুটো বড় ছক্কা হাঁকান। এই ছক্কা হাঁকানোর জন্যই তিনি বিখ্যাত।
অন্যদিকে মাহমুদুল্লাহ স্ট্রাইক রোটেট করে বাংলাদেশের স্কোর বোর্ড সচল রাখেন। ম্যাচ যখন ধীরে ধীরে বাংলাদেশের সাজঘরের দিকে এগোচ্ছে, ঠিক তখনই ধাক্কা খেল বাংলাদেশ। রাবাদা ফিরিয়ে দিলেন হৃদয়কে (৩৭)। দুই ব্যাটার ৪৪ রান জোড়েন। পাঁচ উইকেটে ৯৪ হয়ে যায় বাংলাদেশ। জাকের আলি ও মাহমুদ্দুলাহ আশা দেখাতে শুরু থাকেন। ম্যাচ টেনে নিয়ে যান শেষ ওভারে। শেষ ওভারে কেশব মহারাজ ফিরিয়ে দেন জাকের আলি ও মাহমুদুল্লাহকে। বাংলাদেশের জয়ের স্বপ্ন শেষ হয়ে যায়।