দেবাশিস সেন, দুবাই: আরব আমিরশাহীতে বৃহস্পতিবার যে ম্যাচটায় নামবে পাকিস্তান (Pakistan), তার তাৎপর্য নিছক বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের গণ্ডিতে আটকে নেই। বরং পাক শিবিরের আবহ দেখলে মনে হবে, অস্ট্রেলিয়া ম্যাচটা সেমিফাইনালের চেয়ে অনেক বেশি কিছু। ব্যপ্তিতে অনেক বিস্তৃত।
আসলে গত কয়েক মাসে পাকিস্তান ক্রিকেটকে অনেক যন্ত্রণা, অনেক অপমানের কালিঝুলি গায়ে মাখতে হয়েছে। নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে পরপর পাক সফর বাতিল করেছে নিউজিল্যান্ড-ইংল্যান্ড। প্রতিবাদে ‘বিশ্বকাপে দেখে নেওয়ার’ হুমকি ছাড়া কিছুই দেওয়া যায়নি। বাবর আজমের পাকিস্তান যদি অস্ট্রেলিয়াকে সেমিফাইনালে হারিয়ে ফাইনালে উঠে যায়, বিশ্বক্রিকেট আর অশ্রদ্ধা করতে পারবে না পাকিস্তানকে। বাবর আজমরা সেটা বুঝছেন। টিমের ব্যাটিং উপদেষ্টা ম্যাথু হেডেন সেটা বলছেন। কিন্তু সেই মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে যে এত বড় দু’টো ধাক্কা পাকিস্তানকে হজম করতে হবে, কে জানত! শোয়েব মালিক এবং মহম্মদ রিজওয়ান (Mohammad Rizwan) অস্ট্রেলিয়া সেমিফাইনালে অনিশ্চিত! তাঁরা জ্বরে আক্রান্ত। খেলবেন কি না, কেউ জানে না।
[আরও পড়ুন: T-20 World Cup: ব্যাটে ঝড় তুললেন মিচেল-নিশাম, ইংল্যান্ডকে ৫ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে নিউজিল্যান্ড]
পাকিস্তান শিবির থেকে বলা হল, রিজার্ভ বেঞ্চ যথেষ্ট পোক্ত। রিজওয়ান না পারলে সরফরাজ আহমেদ খেলবেন। কিন্তু রিজওয়ান আর সরফরাজ এক নন। চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের হয়ে ধারাবাহিক ভাবে ভাল খেলছেন শোয়েব (Shoaib Malik) আর রিজওয়ান। প্রথম জন ক্রমাগত বুঝিয়ে যাচ্ছেন, তাঁকে বিশ্বকাপ টিমে নেওয়া ভুল ছিল না। এঁরা দু’জন না খেললে সামলাবে কে? এঁদের অভাব ঢাকবে কে? পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজমকে একটু চিন্তিতই মনে হল। সাধারণত, বিরাট কোহলির মতোই নেটে অক্লান্ত পরিশ্রম করেন বাবর। এ দিন দেখা গেল, স্বভাববিরুদ্ধ ভাবে নিজের ব্যাটিং ছেড়েছুড়ে বাকিদের প্র্যাকটিস মন দিয়ে দেখছেন পাকিস্তান অধিনায়ক। সতীর্থদের ভুলভ্রান্তি নিয়ে টুকটাক বলছেন।
[আরও পড়ুন: T20 World Cup: শুধু ম্যাচ নয়, সেমিফাইনালে এই কাজটি করে ক্রিকেটপ্রেমীদের মনও জিতলেন কিউয়ি ওপেনার]
সেমিফাইনালে দু’টো জিনিস তাতাচ্ছে পাকিস্তানকে। এক, এই দুবাইয়েই ভারতকে হারিয়ে স্বপ্ন সফর শুরু হয়েছিল পাকিস্তানের। হেডেন বলে গেলেন, “ভারত ম্যাচটাই আমাদের সব কিছু পালটে দিয়েছে। একটা অদ্ভুত প্রশান্তি চলে এসেছে টিমে তার পর থেকে। আর অস্ট্রেলিয়া (Australia) ম্যাচটাও কিন্তু দুবাইয়েই। যেখানে ভারতকে আমরা হারিয়েছিলাম।” দুই, শাহিন আফ্রিদি। এ দিন শাহিনের দাদা রিয়াজ আফ্রিদি (Shahin Afridi) এসেছিলেন ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে। দেশের হয়ে একটা টেস্ট খেলেছেন রিয়াজ। ভাইকে বলে গেলেন, “ইয়র্কারগুলো ঠিকঠাক করে দিবি।” পরে বলছিলেন, “গোটা দেশ তাকিয়ে আছে শাহিনের দিকে। বিশ্বকাপে দারুণ খেলছে ও। আশা করি, দেশকে ফাইনালে তুলবে শাহিন।” ঠিক আছে। দেখা যাক, আজ কী হয়।