সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের বড়সড় জঙ্গি হামলা আফগানিস্তানে। রাজধানী কাবুলের পশ্চিমে ওয়ারডক প্রদেশে জাতীয় নিরাপত্তা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভিতরে বিস্ফোরণে নিহত কমপক্ষে ১২৬ জন। সকলেই প্রশিক্ষণরত সেনা জওয়ান। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৮ কমান্ডোও। সেনার পালটা গুলিতে নিকেশ ২ বন্দুকবাজ। প্রশাসন সূত্রে খবর, সেনা জওয়ানদেরই অস্ত্রসহ গাড়ি চড়ে হামলা চালিয়েছে তালিবান জঙ্গিরা।
রীতিমতো পরিকল্পনা ছকে এবার আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিকাঠামোয় বড় ধাক্কা দিল তালিবানিরা। সোমবার বিকেলের দিকে ওয়ারডকের ন্যাশনাল ডিরেক্টরেট অফ সিকিউরিটির কার্যালয়ের দিকে যাচ্ছিল আগ্নেয়াস্ত্র বোঝাই সেনাদের একটি গাড়ি। সেনাদের প্রশিক্ষণের জন্যই তা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। সেনা সূত্রে খবর, ২ জঙ্গি গাড়িটি ছিনিয়ে নিয়ে সোজা ঢুকে পড়ে জাতীয় নিরাপত্তার কার্যালয়ে। ভেতরেই শুরু হয় গুলিযুদ্ধ। দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘এখনও পর্যন্ত যা তথ্য, তাতে ১২৬ জন মানুষ নিহত। সেনা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে হামলায় ৮ জন বিশেষ কমান্ডোও প্রাণ দিয়েছেন।’ রাজধানী শহরের এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ কার্যালয়ে স্বভাবতই নিরাপত্তার ঘেরাটোপে মোড়া। সর্বদাই বাড়তি নজর। কিন্তু এই বজ্র আঁটুনি ভেঙে কীভাবে ঢুকে এত বড় একটা নাশকতা ঘটিয়ে গেল তালিবানি জঙ্গিরা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে আরও বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে। সূত্রের খবর, এদিনের হামলায় সঠিক মৃত্যু সংখ্যা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ না করার নির্দেশ দিয়েছেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরফ ঘানি। সর্বস্তরের দায়িত্বপ্রাপ্তদের কাছে পৌঁছেছে সেই নির্দেশ। এমনকি তিনি নিজেও বিবৃতিতে জানিয়েছেন – ‘দেশের শত্রুরা আমাদের সৎ এবং দায়িত্বশীল সন্তানদের অনেককে শেষ করে দিয়ে গিয়েছে।’ এভাবে তথ্য চেপে রাখার সরকারি নির্দেশে ক্ষোভ বাড়ছে সেখানকার রাজনৈতিক মহলের একাংশের। ঘটনাস্থল ওয়ারডক প্রদেশের কাউন্সিল সদস্য শরিফ হোতাকের কথায়, ‘সরকার সঠিক তথ্য গোপন করতে চাইছে। হয়ত এতজনের মৃত্যুর খবর পেলে জঙ্গিরা আরও সক্রিয় হয়ে উঠবে। কিন্তু একথাও ঠিক যে দেশের মানুষের সম্পূর্ণ অধিকার আছে, জাতীয় নিরাপত্তা সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখা।’
[সংঘর্ষে খতম ‘আইএস জঙ্গি’ নিরপরাধ! পাক প্রশাসনের দাবিতে তুঙ্গে বিতর্ক]
আফগানিস্তানে তালিবানি সক্রিয়তা নতুন কিছু নয়। দেশের আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তায় বিদেশি সেনাদের উপস্থিতির তীব্র বিরোধী তালিবান জঙ্গিগোষ্ঠী। আর তাই বরাবরই তাদের আক্রমণের মূল লক্ষ্য, নিরাপত্তা রক্ষী, সেনা জওয়ানরা। কিন্তু বছর পাঁচেক আগেকার পরিস্থিতি এখন বেশ খানিকটা বদলেছে। বিদেশি শক্তির সাহায্য নিয়ে সন্ত্রাসদমনে বেশ খানিকটা সফল বলে দাবি করে এসেছে আফগানিস্তানে হামিদ কারজাই পরবর্তী প্রশাসন। কিন্তু পরিস্থিতি যে সেই তিমিরেই রয়েছে, সোমবারের এত বড় হামলা তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের এই জঙ্গি সক্রিয়তা গোটা ভারতীয় উপমহাদেশের পক্ষেই অত্যন্ত বিপজ্জনক।
The post তালিবানি হামলায় রক্তাক্ত আফগানিস্তান, নিহত শতাধিক জওয়ান appeared first on Sangbad Pratidin.