সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তালিবানি হুঁশিয়ারিকে তোয়াক্কা না করেই ২০১৪-র রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দিয়েছিলেন৷ এ জন্য শাস্তিও পেয়েছিলেন তিনি৷ হাতের আঙুল কেটে দিয়েছিল জঙ্গিরা৷ চলেছিল নির্মম অত্যাচারও৷ ইতিমধ্যে চলে গিয়েছে পাঁচ বছর৷ আবার একটা রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হল আফগানিস্তানে৷ আর আগের মতোই এবারও ভোট দিলেন সইফুল্লাহ সফি৷ চরম শাস্তিও থামাতে পারল না গণতন্ত্রের পূজারি এই মানুষটিকে৷ তাই নেটিজেনদের এখন অন্যতম চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছেন এই আফগান ব্যবসায়ী৷
[ আরও পড়ুন: চিনে ট্রাক ও বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ, মৃত ৩৬ ]
২০১৪-র সেই দিনের ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে আজও আতঙ্কে ভোগেন সইফুদ্দিন৷ তিনি বলেন, ‘‘ভোট দেওয়ার পর কাবুলের পূর্বপ্রান্তে অবস্থিত খোস্ত শহরে বসবাসকারী আমার পরিবারের কাছে যাচ্ছিলাম৷ রাস্তাতেই আমার গাড়ি থামায় তালিবানরা৷ আঙুলে কালো কালি লাগান দেখেই, রাস্তার ধারের একটি ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয় আমাকে৷ সেখানেই বিচার হয় আমার৷ এরপর শাস্তিস্বরূপ আমার হাতের আঙুল কেটে দেয় সন্ত্রাসবাদীরা৷’’ এই আফগান ব্যবসায়ী আরও বলেন, ‘‘আঙুল কাটার সময় জঙ্গিরা আমাকে প্রশ্ন করে, ‘আমাদের হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে কেন ভোট দিলে’? ’’ কিন্তু এই মধ্যযুগীয় শাস্তিও থামাতে রাখতে পারেনি সইফুদ্দিনকে৷ ওই নৃশংস দিনের কথা ভাবলেই তাঁর চোখের সঙ্গে ভেসে ওঠে ছেলে-মেয়ের মুখটা৷ এবং তাঁদের ভবিষ্যতকে সন্ত্রাসমুক্ত করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ সইফুদ্দিন এবারও ভোটে দেন৷ তিনি বলেন, ‘‘ওই ভয়ংকর দিনের ছবি আজও আমার চোখের সামনে ভাসে৷ তবে যখন ছেলে-মেয়েদের মুখ মনে পড়লে, দেশের ভবিষ্যতের কথা ভাবলে, তখন ওই সবকিছুকে আর পরোয়া করি না৷ একটা আঙুলই তো গিয়েছে৷ ওরা এবার আমার গোটা হাত কেটে নিলেও, আমাকে দমাতে পারবে না৷’’
[ আরও পড়ুন: ক্ষমতার অপব্যবহার! তদন্তের মুখে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ]
জানা গিয়েছে, শনিবার থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে গিয়েছে ৩৮ বছরের সইফুল্লাহ’র একটি ছবি৷ যেখানে দেখা যাচ্ছে, তাঁর ডান হাতের একটি আঙুল কাটা রয়েছে৷ এবং বাঁ হাতের একটি আঙুলে কালো কালি লাগানো৷ তাঁর সাহসকে কুর্নিস জানিয়েছে নেটিজেনরা৷ দেশ ও আগামী প্রজন্মের কথা ভেবে সইফুল্লাহ’র এই উদ্যোগ, অন্যান্যদেরও উদ্বুদ্ধ করবে বলে দাবি করেন তাঁরা৷
The post আঙুল কেটে নিয়েছিল তালিবানরা, ফের ভোট দিয়ে নেটদুনিয়ায় হিরো আফগান যুবক appeared first on Sangbad Pratidin.