সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় ২০ বছর পর শেষ আমেরিকার ‘মিশন আফগানিস্তান’। ৩০ আগস্ট রাতের অন্ধকারে কাবুল বিমানবন্দর থেকে শেষ মার্কিন বিমানটি উড়ে যেতেই সেখানে প্রবেশ করে তালিবান (Taliban)। রাতের অন্ধকারে গুলি ছুঁড়ে, আতশবাজিতে অকাশ আলো কর আনন্দ করলেও ভোর হতেই হাসি মুছে যায় জঙ্গিদের মুখ থেকে। কারণ কাবুল বিমানবন্দরে থাকা অধিকাংশ বিমানই অকেজো করে দিয়ে গিয়েছে মার্কিন সেনা। আর সেগুলিকে সারিয়ে কাজে লাগানোর মতো বুদ্ধি বা সামর্থ কোনওটাই নেই তালিবদের।
[আরও পড়ুন: Afghanistan Crisis: প্রবল সমালোচনার মুখে ‘দায় স্বীকার’ করলেও আফগানিস্তান সিদ্ধান্তে অনড় বাইডেন]
প্রায় ভগ্নস্তুপে পরিণত হওয়া কাবুল বিমানবন্দরের ছবি তুলে ধরেছেন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার সাংবাদিক শার্লট বেলস। সেখানে দেখা যাচ্ছে, বিমানবন্দরটিতে পড়ে আছে বেশ কয়েকটি সামরিক হেলিকপ্টার ও বিমান। তবে কোনওটার ইঞ্জিন নেই তো কোনওটার প্রপেলার হাওয়া। ফলে সেগুলিকে আর কাজে লাগানো সম্ভব নয়। এই বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তালিবান মুখপাত্র জাবিউল্লা মুজাহিদ বলে, “আমরা ভেবেছিলাম আমেরিকা এই বিমানগুলিকে অক্ষত অবস্থায় আমাদের হাতে তুলে দেবে। এগুলি দেশের সম্পত্তি।” সে আরও জানিয়েছে, শীঘ্রই বিমানবন্দরটিকে সরিয়ে তুলে পরিষেবা শুরু করা হবে। এবং ইঞ্জিনিয়ারদের তলব করে বিমানগুলির মেরামত করা হবে। তবে বিশ্লেষকদের মতে, বিমানগুলি সরিয়ে তোলার মতো ক্ষমতা তালিবানের নেই।
জানা গিয়েছে, দেশহ ছাড়ার আগেই আফগান বায়ুসেনার ৭৩টি বিমান অকেজো করে দেয় মার্কিন ফৌজ। কাবুল বিমাবন্দর দখল করলেও তা পরিচালনা করার মতো দক্ষতা নেই তালিবানের। বিশেষ করে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল থেকে শুরু করে রানওয়ে রক্ষণাবেক্ষণ করার মতো পরিকাঠামো এই মুহূর্তে কাবুল বিমানবন্দরে নেই। আর বিমানবন্দরের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীদের প্রায় সকলেই দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছেন। একইসঙ্গে, কোনও বিদেশি বাণিজ্যিক বিমানসংস্থা যুদ্ধজর্জর আফগানিস্তানে পরিষেবা দিতে রাজি নয়। এহেন পরিস্থিতিতে তুরস্ক ও কাতারের কাছে বিমানবন্দরটি পরিচালনা করার আবেদন জানিয়েছে তালিবান বলে সূত্রের খবর।
উল্লেখ্য, সোমবার রাতে কাবুল বিমানবন্দর থেকে শেষ মার্কিন বিমানটি রওনা দিতেই সেখানে প্রবেশ করে বদরি-৩১৩। বিমানবন্দরে বদরি কমান্ডোদের সঙ্গে তালিব নেতা আনাস হাক্কানিকে দেখা যায়। সবমিলিয়ে, এই মুহূর্তে আফগানিস্তানে (Afghanistan) আটকে থাক মার্কিন ও অন্য দেশের মানুষের কাবুল ছাড়ার শেষ উপায়ও বন্ধ হয়ে গিয়েছে।