সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ক্ষমতায় এসেই ফের আফগানিস্তানকে মধ্যযুগে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছে তালিবান (Taliban)। রাস্তায় বেরতে হলে হিজাব বাধ্যতামূলক বলে ফতোয়া জারি করেছে ইসলামিক মৌলবাদী সংগঠনটি। কিন্তু জেহাদিদের নির্দেশ মানতে নারাজ স্বাধীনচেতা আফগান মহিলারা। কাবুলের রাস্তায় প্রকাশ্যে হিজাব না পরে প্রতিবাদ দেখিয়েছেন তাঁরা।
[আরও পড়ুন: সংকটের পরিস্থিতিতে শ্রীলঙ্কার পাশেই ভারত, তবে পাঠানো হবে না সেনা, জানিয়ে দিল ভারতীয় দূতাবাস]
বুধবার কাবুলের রাস্তায় মুখ না ঢেকেই তালিবানি ফতোয়ার বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলেন আফগান মহিলাদের একাংশ। তাঁদের মুখে স্লোগান শোনা যায়, “বোরখা আমাদের হিজাব নয়। খাবার, কাজ, স্বাধীনতা চাই।” এদিন কাবুলের আনসারি স্কোয়ারে তালিবানের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকের সামনে প্রতিবাদ দেখান মহিলারা। অভিযোগ, প্রতিবাদীদের উপর হামলা চালায় তালিবান জঙ্গিরা। সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদেরও মারধর করা হয়।
স্থানীয় সংবাদমঅধ্যমে জুলিয়া পারসি নামের এক তরুণী অভিযোগ করেন, তাঁদের স্মার্টফোন ছিনিয়ে নিয়েছে জেহাদিরা। শুধু তাই নয়, ব্যানার ছিড়ে প্রতিবাদী মহিলাদের জোর করে মন্ত্রকের ভেতর নিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও করে তালিবরা। তবে সর্বত্রই যে এমন ছবি দেখা যাচ্ছে, তা নয়। ভয়ে বহু মহিলাই ঘর থেকে বেরনো বন্ধ করে দিয়েছেন। হেরাতের বাসিন্দা ফহিমা বলছেন, “ছেলে কখন ঘরে ফিরবে, তার জন্য অপেক্ষা করতে হয়। ঘর থেকেই তো বেরোতে পারছি না এখন।”
এদিকে, হিজাব বিতর্কে তালিবানের উপর চাপ বাড়িয়েছে আমেরিকা। খামা প্রেস সূত্রে খবর, সোমবার এক সংবাদ সংবাদ সম্মেলনে আফগান মহিলাদের অধিকার নিয়ে সরব হয়েছেন মার্কিন বিদেশ দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস। মহিলাদের অধিকার ও নারী শিক্ষা নিষিদ্ধ করার তালিবানের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত শনিবার এক নির্দেশিকায় তালিবান বলে, রাস্তায় বেরতে হলে মহিলাদের ‘চাদরি’ অর্থাৎ এক ধরনের বোরখা পরতে হবে। ঢেকে রাখতে হবে সমস্ত শরীর। গত আগস্টে আফগানিস্তান দখল করেছিল জেহাদিরা। নতুন করে সেদেশে শুরু হয়েছিল অন্ধকার যুগ। যদিও ক্ষমতা দখলের পরে তারা জানিয়েছিল, এটা তালিবান ২.০। গতবারের মতো দমন পীড়ন নয়, বরং সাধারণ আফগান বিশেষ করে নারীদের স্বাধীনতা রক্ষায় ব্রতী থাকবে তারা। কিন্তু তা যে স্রেফ ‘ফাঁকা বুলি’, সেটা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল আগেই। এবার তা একেবারেই স্পষ্ট হয়ে গেল। ক্ষমতা পুনর্দখলের পরে এই নির্দেশকেই তালিবানের সবচেয়ে কড়া নির্দেশ বলে মনে করা হচ্ছে।