জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: বিধ্বস্ত ‘কাবুলিওয়ালা’র দেশ যেন এখন বিভীষিকার দেশ। তালিবানি (Taliban) দাপটে সাজানো গোছানো কাবুল তছনছ। এমন অস্থিরতা সেই ২০ বছর আগে দেখেছিল আফগানিস্তান (Afghanistan)। অবশ্য তখন সে দেশের এই চেহারা দেখতে পাননি বিদ্যুৎ, পলাশ, প্রবীররা। তবে এবার দেখলেন তালিবানি শাসন। আর সেই দৃশ্য যেন কিছুতেই ভুলতে পারছেন না কাবুল ফেরত বনগাঁর তিন যুবক। মার্কিন সেনার সাহায্য নিয়ে কাতার হয়ে ভারতে নেমে নিজেদের বাড়িতে ফেরার পর সেসব অভিজ্ঞতার কথাই জানালেন তাঁরা। সঙ্গে মার্কিন সেনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন।
কাবুল বিমানবন্দরের (Kabul Airport) বড় অংশই মার্কিন সেনার দখলে। তাঁদের জন্য ক্যাটারিং অর্থাৎ খাবার রান্না ও সরবরাহের কাজ করতে কাবুলে গিয়েছিলেন বনগাঁর (Bongaon) গোপালনগরের শংকরপুর গ্রামের বিদ্যুৎ বিশ্বাস ও পলাশ সরকার। সঙ্গে ছিলেন রঘুনাথপুরের বাসিন্দা প্রবীর সরকারও। দিব্যি চলছিল কাজকর্ম। কিন্তু নিমেষেই নামল বিপদ। গোটা দেশ দখলের পর কাবুলের দিকে এগোতে থাকে তালিবান বাহিনী। মার্কিন সেনার কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেদ করে বিমানবন্দরের দক্ষিণ গেট দিয়ে ঢুকে তার অনেকটাই নিজেদের দখলে নেয় জঙ্গিরা। বিদ্যুৎ বিশ্বাসের কথায়, ”কয়েকঘ্ণ্টার মধ্যে জলের স্রোতের মতো জঙ্গিরা ঢুকে কাবুল দখল করে নিল। বাইরে গোলাগুলি। আমরা সব ওই সেনা ক্যাম্পের উপর থেকে, যেখানে ছিলাম, সেখান থেকে দেখছিলাম। আমাদের কোনও ক্ষতি হয়নি। মার্কিন সেনারা অনেক সাহায্য করেছে।”
[আরও পড়ুন: মেদিনীপুরে নার্সকে যৌন নির্যাতন, সিঁদুর পরিয়ে পালাল সাফাইকর্মীর ছেলে!]
একই রকম ভয়াবহ অভিজ্ঞতা শোনালেন পলাশ সরকারও। তিনি বলছেন, ”যে ক্যাম্পে কাজ করতাম, সেখানে আমেরিকান সেনারা কড়া পাহারায় ছিল। ফলে তেমন অসুবিধা হয়নি। কিন্তু বাইরে কিছুক্ষণ পরপরই চলছে গুলি। একের পর এক শহর তালিবান দখল নিচ্ছে।”
এসব দেখেশুনে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন তাঁরা। সিদ্ধান্ত নেন বাড়ি ফেরার। সে কথা সংস্থাকে জানালে সেখান থেকে মোটা অঙ্কের বেতনের অফার দেওয়া হয় তাঁদের। কিন্তু সবকিছু উপেক্ষা করে কাবুল থেকে কাতার হয়ে বাড়ি ফেরেন তাঁরা। মঙ্গলবার সকাল থেকে তাঁদের বাড়িতে ভিড় জমিয়েছেন এলাকার সাধারণ মানুষ। সবাই শুনতে চাইছেন তাঁদের নানা অভিজ্ঞতার কথা।