সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আফগানিস্তানে তালিবানের (Taliban) রাজত্ব শুরু হতেই বেড়েছে নারী নির্যাতনের ঘটনা। কয়েকদিন আগে শুধুমাত্র আঁটসাঁট পোশাক পরার জন্যই এক মহিলাকে গুলি করে খুন করে জেহাদিরা। এহেন পরিস্থিতিতে আবারও সুরক্ষার আশ্বাস দিয়ে মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজে ফেরার নির্দেশ দিল আফগানিস্তান।
[আরও পড়ুন: Afghanistan Crisis: তালিবানের হাতেই কাবুল বিমানবন্দর তুলে দিতে চলেছে আমেরিকা!]
শুক্রবার স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সমস্ত মহিলা কর্মীদের কাজে ফেরার নির্দেশ দিয়েছে তালিবানের মুখপাত্র জাবিউল্লা মুজাহিদ। তাঁর বক্তব্য, "প্রায় ১২ দিল হল আমরা কাবুল দখল করেছি। আমরা সমস্ত এলাকার নিয়ন্ত্রণ হাতে নিয়ে সেখানে শান্তি স্থাপন করেছি।" পাশাপাশি, মুজাহিদকে উদ্ধৃত করে জেহাদি সংগঠনটির আরও এক মুখপাত্র সুহেল শাহিন টুইটারে লিখেছে, "দেশের রাজধানী ও প্রাদেশিক রাজধানীর সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতালে যে সব মহিলা কাজ করেন, তাঁরা যেন অবিলম্বে কাজে যোগ দেন এবং আগের মতোই নিয়মিত কাজ করে যান। ইসলামিক আমিরশাহী তাঁদের কাজে কোনও বাধা দেবে না।"
এদিকে, বন্দুকের জোরে ক্ষমতা দখল করলেও দেশ চালানোর মতো দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা কোনওটাই নেই তালিবানের। ফলে আফগানিস্তানে (Afghanistan) এখন রীতিমতো অরাজক পরিস্থিতি। কাবুল-সহ দেশের অধিকাংশ জায়গার হাসপাতালগুলিতে ওষুধ ও উপযুক্ত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী নেই বললেই চলে। স্বাভাবিক জোগান ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় রাজধানী-সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। এদিকে, আমেরিকা, জার্মানি-সহ অন্যান্য দেশগুলিও কাবুলকে দেওয়া আর্থিক মদত বন্ধ করে দিয়েছে। একই পদক্ষেপ করেছে বিশ্ব ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলও। ফলে সব মিলিয়ে পাহাড়ি দেশটির অর্থনীতি কার্যত গুঁড়িয়ে গিয়েছে।
উল্লেখ্য, আগেও তালিবানি শাসন দেখেছেন আফগান মেয়েরা। তাই জঙ্গিগোষ্ঠীটির আশ্বাস সত্ত্বেও আতঙ্কিত তাঁরা। তবে উপায়ন্তর না থাকায় আপাতত তাঁদের ঠিকানা আফগানিস্তানই। ১৯৯৬ থেকে ২০০১, এই পাঁচ বছরে তারা মেয়েদের স্কুলে যাওয়া পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছিল, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় তো দূর অস্ত্। কোপ পড়েছিল মেয়েদের কর্মজীবনেও। কিন্তু গত দু’দশক ধরে ছবিটা পাল্টেছে। বাইরের জীবনে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন আফগান, বিশেষত, শহুরে আফগান মেয়েরা। এহেন সময়ে কবুলে জেহাদিদের রাজত্বে দেশ আবার সেই আদিম যুগে ফিরে গিয়েছে বলেই মনে করছেন তাঁরা।