সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত বছরের আগস্টে নতুন করে আফগানিস্তান (Afghanistan) দখল করার পর তালিবান (Taliban) আশ্বাস দিয়েছিল, এটা তালিবান ২.০। যারা নারী স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতার মতো বিষয়গুলিতে বিশ্বাস করে। কিন্তু সেই কথা যে স্রেফ কথার কথা, তা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল কয়েক দিনের মধ্যেই। এরপর থেকে যতই সময় এগিয়েছে ততই যেন প্রকট হয়েছে জেহাদিদের তাণ্ডব। এবার রাষ্ট্রসংঘের তরফে আফগান নারীদের উপরে তালিবানের এই আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা করা হল। তাদের দাবি, যেভাবে মহিলাদের সঙ্গে আচরণ করছে তালিবান, তাকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা যেতেই পারে। নিঃসন্দেহে এই মন্তব্য আন্তর্জাতিক মহলে তালিবানকে আরও কোণঠাসা করল। দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় ফিরে তারা বিশ্বের দরবারে যে স্বীকৃতি চেয়েছিল, তা এর ফলে আরও বিপণ্ণ হল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।
রাষ্ট্রসংঘের এক বিশেষজ্ঞের প্যানেলের তরফে বলা হয়েছে, পার্ক, জিম, স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে যেভাবে আফগান মহিলাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে তাকে এক অর্থে মানবাধিকার লঙ্ঘনই। পাশাপাশি যেভাবে পরকীয়া বা চুরির মতো অপরাধে প্রকাশ্যে যেভাবে বেত মারা হচ্ছে, সেই মধ্যযুগীয় শাস্তি পদ্ধতির বিরুদ্ধেও কথা বলেছেন রাষ্ট্রসংঘের বিশেষজ্ঞরা।
[আরও পড়ুন: করোনা বাড়লেও লকডাউন মানতে নারাজ চিনারা, জিনপিং সরকারের অবসানের দাবিতে রাজপথে জনতা]
উল্লেখ্য, সম্প্রতিই সেদেশের এক স্টেডিয়ামে ১২ জনকে বেত মারা হয় প্রকাশ্যে। তাঁদের মধ্যে ৩ জন নারী। বাকিরা পুরুষ। কাবুলের প্রশাসনিক দপ্তরের এক কর্মী, যিনি নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক, তিনিই এই ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন। জানিয়েছেন, দোষীদের দলে শিক্ষাকর্মী থেকে মুজাহিদিন, বয়স্ক থেকে আদিবাসী নেতা- সকলেই রয়েছেন। যাঁদের বয়স ২১ থেকে ১৯ বছরের মধ্যে।
প্রসঙ্গত, মেয়েদের উপর একের পর এক কঠোর সামাজিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে আফগানিস্তানে। ইতিমধ্যে তাদের শিক্ষার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় মিডিয়াগুলি জানাচ্ছে, বেশকিছু প্রদেশে বয়স ছয় বছরের বেশি হলে মেয়েদের স্কুলে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। কর্মক্ষেত্রেও তাঁরা বঞ্চিত। এমনকী বাস-ট্যাক্সি চালকরা পর্যন্ত তালিবানদের ভয়ে ভাড়া দিলেও মেয়েদের গাড়িতে উঠতে দিতে নারাজ। একটি পরিসংখ্যানে জানা গিয়েছে, তালিবান আমলে আফগান সংবাদমাধ্যম থেকে কাজ হারিয়েছেন ৮০ শতাংশ মহিলা কর্মী।