সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে যখন হিজাব বিতর্ক (Hijab Controversy) মাথাচাড়া দিচ্ছে, যখন উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টির নেত্রী রুবিনা খানম (Rubina Khanam) বলছেন, হিজাবে হাত দিলে হাত কেটে নেব, তখন অতীত সংস্কার থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানালেন বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন (Taslima Nasrin)। জানিয়ে দিলেন, একটি ধর্মনিরেপেক্ষ রাষ্ট্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইউনিফর্মই হওয়া উচিত পড়ুয়াদের একমাত্র পোশাক। বিতর্কিত লেখিকার বিস্ফোরক মন্তব্য, হিজাব হল সতীত্বের পাহাড়াদারি করা পোশাক। যা মনে করিয়ে দেয়, মেয়েরা আসলে সম্ভোগের বস্তু।
তসলিমা নাসরিন যখন এমন মন্তব্য করলেন, তখন হিজাব বিতর্ক ছড়িয়ে পড়েছে গোটা ভারতে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধ হবে কি না তা নিয়ে মামলা চলছে কর্ণাটক হাই কোর্ট। সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকার স্পষ্টবক্তা তসলিমা অবশ্য নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “একটি ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ুয়াদের পোশাক হওয়া উচিত ধর্মীয় ভেদাভেদহীন। শিক্ষকরা যে পড়ুয়াদের ধর্মীয় পোশাক পরে স্কুল-কলেজে আসতে বারণ করছেন, এর মধ্যে কোনও ভুল নেই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধর্মচর্চা তথা ব্যক্তিগত ভাবাবেগ অনুশীলনের জায়গা নয়।” তসলিমা আরও বলেন, “বরং স্কুলে শেখানো হয় নাগরিকের অধিকার, লিঙ্গসাম্য, মানবিকতা, আধুনিক মনস্কতা, বিজ্ঞান ভাবনা ইত্যাদি।”
[আরও পড়ুন: রাজ্যপালের বিরুদ্ধে একজোট বিরোধীরা, ১০ মার্চের পর অবিজেপি মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকের সম্ভাবনা]
সাক্ষাৎকারে তসলিমা নাসরিন দাবি করেন হিজাব, বোরখা বা নাকাব নিপীড়নের প্রতীক। তাঁর মতে, “হিজাব, বোরখা, নাকাব আসলে দেগে দেয় যে মেয়েরা যৌন বস্তু ছাড়া কিছু নয়। মেয়েদের পুরুষদের থেকে লুকিয়ে রাখা দরকার, নচেত তারা পুরুষের যৌন আসক্তির শিকার হতে পারে, এই ভাবনা খুবই নিন্দনীয়। এই মনোভাবের দ্রুত অবসান হওয়া উচিত।”
[আরও পড়ুন: উত্তরপ্রদেশে ভয়াবহ দুর্ঘটনা, বিয়েবাড়িতে কুয়োয় পড়ে মৃত কমপক্ষে ১৩ মহিলা]
যদিও ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের বড় অংশই হিজাবের পক্ষে রায় দিচ্ছেন। তাদের মতে, হিজাব ইসলাম সমাজের সম্মান ও ঐতিহ্যের পোশাক। এই প্রসঙ্গে তসলিমার উত্তর, “বিষয়টা কেবল ইসলাম কেন্দ্রীক নয়। আমাদের মনে রাখতে হবে, যে নিয়ম সতেরোশো শতকে তৈরি হয়েছিল তা একবিংশ শতাব্দীতে চলতে পারে না।” তসলিমা আরও বলেন, “হিজাব, নাকাব বা বোরখা কোনটাই মেয়েদের পছন্দ করা পোশাক নয়। বরং তাদের উপর চাপিয়ে দিয়েছে পুরুষতন্ত্র।”