সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শেখ হাসিনা গদিচ্যুত হওয়ার পরও বাংলাদেশে থামেনি হিংসা। অবাধে চলছে লুটপাট। একের পর এক হত্যালীলার খবর সামনে আসছে। এই পরিস্থিতিকে ফরাসি বিপ্লবের 'টেরোর'-এর সঙ্গে তুলনা করলেন লেখিকা তসলিমা নাসরিন। একইসঙ্গে তাঁর খোঁচা, 'বাংলাদেশ তুমি বীভৎসতার, নৃশংসতার আরেক নাম।'
মঙ্গলবার ফেসবুকে দীর্ঘ একটি পোস্ট করেন তসলিমা। সেখানে শেখ হাসিনা সরকারকে তুলোধোনার পাশাপাশি ছাত্র আন্দোলনকারীদেরও একহাত নিয়েছেন। আন্দোলনকারীদের একাংশ যেভাবে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনে ঢুকে চূড়ান্ত 'অসভ্যতামি' করেছে তার তীব্র নিন্দা করেছেন লেখিকা। তাঁর কথায়, 'দলবদ্ধ হয়ে দেশাত্মবোধক গান গেয়ে হাসিনাকে গদিচ্যুত করতে চেয়েছিল তরুণ প্রজন্ম, সবারই মনে হতে পারে এরা সৎ, এরা সভ্য, এরা সাহিত্য সংস্কৃতি ভালোবাসে। কিন্তু পরক্ষণেই এরা দেখিয়ে দেয় এদের খুনি চরিত্র, কী করে মানুষের বাড়িতে ঢুকে লুটপাট করতে হয়, কী করে হাসতে হাসতে আগুন জ্বালিয়ে দিতে হয় মানুষের বাড়িঘরে দোকান পাটে। কী করে ঠান্ডা মাথায় খুন করতে হয় মানুষকে, শত শত নয়, হাজারো মানুষকে।' এর পর তাঁর খোঁচা, 'আহা বাংলাদেশ তুমি বীভৎসতার, নৃশংসতার আরেক নাম।'
[আরও পড়ুন: সেনাশাসন নয়, ‘দেশ গড়তে’ ইউনুসকেই চাইছে বাংলাদেশের আন্দোলনকারীরা]
বাংলাদেশে কোটা আন্দোলন থেকে ‘হাসিনা হঠাও’ অভিযান। রক্তঝরা বিক্ষোভে পদত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমানে তিনি ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয়ে। বাংলাদেশে চলছে সেনাশাসন। সোমবার রাতভর হিংসায় মৃত্যু হয়েছে শতাধিক মানুষের। বাংলাদেশজুড়ে চলছে পুলিশনিধন যজ্ঞ। গোটা পরিস্থিতিকে ফরাসি 'টেরোর'-এর সঙ্গে তুলনা করেছেন তসলিমা। লিখেছেন, "ফরাসি বিপ্লবের সময় ১৭৯৩-১৭৯৪ সালে বিপ্লবী রবেস্পীয়েরের পতনের পর একটা ভয়ংকর সময় শুরু হয়, সময়টিকে 'টেরোর' বলা হয়। ধরে ধরে যাকেই বিরোধী দলের বলে সন্দেহ হতো, তাকেই খুন করা হতো। গ্রেট টেরোরের আট নয় মাসে যত খুন করেছিল উন্মত্ত লোকেরা, দুদিনেই বাংলাদেশের কোমলমতি কিশোরেরা তার চেয়ে বেশি খুন করেছে। হাসিনার পদত্যাগের পরের এই সময়টাকে তাহলে গ্রেট গ্রেট টেরোর নামে অভিহিত করা যায়।"