ধীমান রায়, কাটোয়া: চূড়ান্ত খাটাখাটনি শেষে সামনের এক বারান্দায় শুয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন ভ্যানচালক। বাড়ির মালিকের আপত্তি ছিল তাতে। ঘুমন্ত মানুষটিকে বারান্দা থেকে উঠে যেতে বলা হয়। কিন্তু ভ্যানচালক উঠতে দেরি করেন। অভিযোগ, সেই রাগেই লোহার রড দিয়ে ওই ভ্যানচালককে বেধড়ক পেটান বাড়ির মালিক, পেশায় স্কুলশিক্ষক। গুরুতর জখম হয়ে মাত্র একদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর মৃত্যু হল ওই ভ্যানচালকের। ঘটনায় কাটোয়ার (Katwa) মাধবীতলার বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক অমিত মল্লিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন মৃতের স্ত্রী। এর জেরে ব্যাপক চাঞ্চল্য এলাকায়। পুলিশ অভিযুক্ত অমিত মল্লিককে মঙ্গলবার আটক (Detain) করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়া মাধবীতলার বাসিন্দা অমিত মল্লিক বীরভূমের লাভপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে গণিত বিষয়ের শিক্ষক। তাঁদের বাড়ির নিচের তলায় রয়েছে দোকান। দোকানের সামনে বারান্দা। স্থানীয়রা জানান, মাধবীতলার বাসিন্দা মেঘনাদ পণ্ডিত নামের ওই ভ্যানচালক রবিবার অমিত মল্লিকদের দোকান ঘরের সামনে তার ভ্যানটিকে দাঁড় করিয়ে বারান্দায় শুয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। তা নজরে পড়ে অমিত মল্লিকের। তিনি এসে মেঘনাথকে বারান্দা থেকে উঠে যাওয়ার জন্য বলেন। মেঘনাদ যেতে বিলম্ব করলে তাঁর সঙ্গে বচসা শুরু হয়। অভিযোগ, সেসময় দোকান একটি রড নিয়ে মেঘনাদকে এলোপাথাড়ি মারতে থাকেন অমিত মল্লিক। গুরুতর জখম হন মেঘনাদ। চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে স্থানীয়রা আসার পর কয়েকজন মিলে মেঘনাদকে কাটোয়া হাসপাতালে নিয়ে যান।
[আরও পডুন: ত্রিকোণ প্রেমের ভয়ংকর পরিণতি! অপহরণ ও খুনের পর যুবকের দেহ টুকরো করে ফেলা হল খালে]
জানা গিয়েছে, ওই অবস্থায় ঘণ্টাখানেক হাসপাতালে চিকিৎসা করার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল মেঘনাদকে। নিহতের স্ত্রী কৃষ্ণা পণ্ডিত বলেন, “আমার স্বামীকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার পর রবিবার রাত থেকেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। পেট ফুলে যায়, রক্তবমি শুরু হয়। তখন ফের হাসপাতালে ভরতি করি।” এরপর সোমবার রাত দুটো নাগাদ মৃত্যু হয় মেঘনাদের।
[আরও পডুন: জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্তদের জন্য বাংলায় চলুক লোকাল ট্রেন, চাইছেন রেলকর্তারা]
মঙ্গলবার এই খবর জানাজানি হতেই স্থানীয় লোকজন অভিযুক্ত অমিত মল্লিকের বাড়ি ঘেরাও করে খবর পেয়ে পুলিশ আসে। পুলিশ বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে অমিত মল্লিক উদ্ধার করে থানায় আটক করা হয়েছে। পুলিশ দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। পাশাপাশি ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ঘটনা নিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের পরিবারের কেউ কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি।
ছবি: জয়ন্ত দাস।