জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: এ যেন জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ। যিনি ক্লাসে পড়াচ্ছেন, তিনিই আবার ক্লাস শেষে বেরিয়ে ছুটির ঘণ্টা বাজাচ্ছেন! আদালতের নির্দেশে চাকরি থেকে বরখাস্ত এসএসসি (SSC) গ্রুপ ডি’র কর্মীদের ১৯১১ জন। আর তাতেই বিপাকে উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার (Bagda) একটি স্কুল। চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর অভাবে তাঁদের কাজ করতে হচ্ছে শিক্ষকদেরই। এমনকী স্কুলের শুরুতে ঘণ্টা বাজানো থেকে ছুটির ঘণ্টা পর্যন্ত বাজাতে হচ্ছে তাঁদের। সামনে মাধ্যমিক পরীক্ষা। চতুর্থ শ্রেণির (Group D) কর্মী না থাকায় আরও সমস্যার মুখে তাঁদের পড়তে হবে বলে চিন্তিত শিক্ষকরা।
সাম্প্রতিক চতুর্থ শ্রেণির ভুয়ো ১৯১১ জন অশিক্ষক কর্মীর চাকরি বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta HC)। সেই তালিকায় নাম রয়েছে বাগদার চরমণ্ডল CMPPBK ফুলমোহন হাইস্কুলের গ্রুপ ডি কর্মী বিপ্লব বিশ্বসের। গত সোমবার থেকে স্কুলে আসছেন না বিপ্লব। ফলে স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর কাজ করতে হচ্ছে স্কুল শিক্ষকদেরই। ঘণ্টাও বাজাতে হচ্ছে।
এই বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ইন্দুদ্যুতি বিশ্বাস জানাচ্ছেন, ”গত সোমবার থেকে বিপ্লব স্কুলে আসছে না। একজনই চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ছিল আমাদের। চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী না থাকার ফলে তাঁদের কাজ করতে হচ্ছে শিক্ষকদের। আগামীতে মাধ্যমিক পরীক্ষা রয়েছে অরাজকতার সৃষ্টি হবে। স্কুল শিক্ষা দপ্তরে আমরা জানিয়েছি সমস্যার কথা। কবে চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারীকে ফের স্কুলে কাজের জন্য দেওয়া হবে, তা আমাদের জানা নেই।”
[আরও পড়ুন: প্রয়াত কিংবদন্তি তুলসীদাস বলরাম, ভারতীয় ফুটবলে ইন্দ্রপতন]
উল্লেখ্য, হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে চাকরি গিয়েছে গ্রুপ ডি’র ১ হাজার ৯১১ জন কর্মীর। চাকরি বাতিলের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে তাঁরা হাই কোর্টে পালটা মামলা করেন। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ‘অযোগ্য’ কর্মীদের বেতন ফেরতেরও নির্দেশ দিয়েছিলেন। এবার সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন। আদালতে গ্রুপ ডি-র কর্মীদের সওয়াল, তাঁরা গত ৫ বছর ধরে চাকরি করছেন। চাকরি পাওয়ার পর যথাযথ শ্রম দিয়েছেন, তাহলে এখন কেন বেতন ফেরত দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে? এই শুনানি শেষে বেতন ফেরতের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিল ডিভিশন বেঞ্চ। কিন্তু তাঁদের উপর সাসপেনশনের খাঁড়া ঝুলতে থাকায় কাজ করতে পারছেন না। ফলে চাপ পড়ছে শিক্ষকদের উপরই।